ফরিদগঞ্জ উপজেলাব্যাপী প্রায় সব বাজারই মেয়াদোত্তীর্ণ কোমল পানীয়সহ বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রীতে সয়লাব। উপজেলা সদর থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পর্যায়ের বাজারগুলোর অধিকাংশ কনফেকশনারী ও খাদ্যসামগ্রীর দোকানগুলোতে এ ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ কোমলপানীয় হরহামেশাই বিক্রি হয়ে থাকে। কোমলপানীয়ের বোতলে নির্দিষ্ট মেয়াদের লেখাটা অধিক ক্ষুদ্র হওয়াতে অনেক ক্রেতা তা সঠিকভাবে বুঝে নিতে পারে না।
ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা গেছে, বিভিন্ন কারণে হাট-বাজারের দোকানগুলোতে বিক্রি আশানুরূপ না হওয়াতে কোমল পানীয় ও অন্যান্য খাদ্যসামগ্রী জমে থাকে। পরবর্তীতে এ পণ্যগুলোর মেয়াদই উত্তীর্ণ হয়ে যায়। এছাড়া স্থায়ী-অস্থায়ী খাবারের হোটেলগুলোতে খোলামেলা খাবার পরিবেশন হয়ে থাকে। রমজানে ইফতারসামগ্রী ধূলোবালির উৎস রাস্তার দুই পাশে বিক্রির জন্যে পসরা সাজিয়ে রাখা হয়। মাহে রমজানকে ঘিরে কাঁচা পণ্য থেকে শুরু করে অন্যান্য খাদ্যসামগ্রীর ম‚ল্য অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা মাকসুদ খানসহ আরো ক’জন জানান, ফরিদগঞ্জ বাসস্ট্যান্ডে একাধিক খাবারের হোটেল রয়েছে, যেগুলোতে সম্পূর্ণ খোলামেলা খাবার পরিবেশন করা হয়ে থাকে। এছাড়াও মাহে রমজানে ইফতারসামগ্রী ধূলোবালির মধ্যে রাস্তার পাশেই পসরা সাজিয়ে রাখে স্থায়ী আর অস্থায়ী হোটেলগুলোতে। একদিকে পোড়া তেলে ভাজা অন্যদিকে ধ‚লিকণায় ঢেকে থাকা ভোগ্যসামগ্রীগুলোই ক্রেতারা বাধ্য হয়ে ক্রয় করে নিতে হয়।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ মোঃ জাহাঙ্গীর আলম শিপন জানান, এসব মেয়াদোত্তীর্ণ পানীয় ও খোলামেলা পরিবেশে তৈরি খাবার খাদ্যনালীতে প্রবেশ করলে মানবদেহের ক্ষতি সাধণ হবেই। সব ধরনের খাবারই মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেলে খাওয়ার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। আর কোমল পানীয়তে সমস্যা আরো বেশি। পানীয় জাতীয় খাবার মেয়াদোত্তীর্ণ হলে এতে মানাবদেহের জন্যে ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া জন্মায়। এগুলো কেউ পান করলে ডায়রিয়া, কলেরাসহ দীর্ঘমেয়াদী গ্যাস্ট্রিক, আলসার হতে পারে। আর অনেক ক্ষেত্রে জুসজাতীয় পানীয় মেয়াদোত্তীর্ণ হলে ফরমালিনের মতো বিষক্রিয়া সৃষ্টি হয়। যা জনস্বাস্থ্যের জন্যে মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।
ফরিদগঞ্জ বাজার কমিটির আহŸায়ক মোঃ অহিদুর রহমান জানান, প্রশাসনিকভাবে যদি উপজেলা সদর থেকে শুরু করে প্রায় পরিচিত বাজারগুলোতে সফল অভিযান চালানো হয়, সেক্ষেত্রে এ ধরনের অনিয়ম আর ধোঁকাবাজি রোধ করা সম্ভব।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা সদরস্থ ক’জন ব্যবসায়ীর কাছে জানা গেছে, উপজেলাব্যাপী অসংখ্য ফুড বেভারিজের দোকান রয়েছে। যেগুলোর প্রায় দোকানেই কিছু না কিছু মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্য রয়েছে। এমনও প্রতিষ্ঠান রয়েছে যারা জানেও না মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার বিষয়টি। কোমল পানীয়গুলোর মধ্যে বেশির ভাগ বিক্রি হয়ে থাকে স্পীড, কোকাকোলা, পেপ্সি, সেভেনআপ, ক্লেমন, মোজো এবং হরেক রকমের নামে পরিচিত মিষ্টি পানীয়। এছাড়াও শুকনো খাবারের মধ্যে চানাচুর, বিস্কুট, কপি, গুঁড়ো দুধের প্যাকেটসহ যেগুলোর স্বাদ আর স্মেল ক্রেতাদের পান করতে কৌত‚হল জাগায়।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার এ.এইচ.এম. মাহফুজুর রহমান বলেন, দীর্ঘ আয়তন নিয়ে গঠিত উপজেলার অনেক সমস্যা আমাদের কানে পৌঁছায় না। রমজানকে ঘিরে দ্রব্যম‚ল্য বৃদ্ধি করার এক ধরনের ধোঁকাবাজ ব্যবসায়ী রয়েছে, যাদের বিরুদ্ধে খুব শীঘ্রই যথাযথ ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে। মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের প্রশাসনিক অভিযান সবসময়ের জন্যেই অব্যাহত। কোমল পানীয়ের সাথে যারা অবৈধ বিয়ারজাতীয় পণ্য বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন