উজিরপুর উপজেলার বাহেরঘাটের আলোচিত মাদরাসা ছাত্রীকে ধর্ষণ চেষ্টার মামলা থেকে বেকসুর খালাস পেয়েছেন অভিযুক্তরা। প্রায় আট বছরের মাথায় বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল মামলার সাক্ষ্য প্রমানিত না হওয়ায় আসামিদের বেকসুর খালাস দেন।
২০১১ সালের নভেম্বরে উজিরপুরের মজম গ্রামের বাসিন্দা বাহেরঘাটের এক মাদরাসা ছাত্রী উজিরপুর থানায় ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করেন। এতে স্থানীয় তিন যুবককে আসামি করা হয়। এর মধ্যে প্রধান অভিযুক্ত ছিলো রাব্বি। যিনি দূরসম্পর্কে বাদীর ভাতিজা। ঘটনার সময় রাব্বি ছিল ১৬ বছরের কিশোর। যা অভিযোগকারিণীর চেয়ে বয়স অনেক কম। মামলায় উল্লেখ করা হয়, ঘটনার দিন সন্ধ্যায় রাব্বি ভূক্তভোগী ওই ছাত্রীকে চুমু দিয়েছে। এ নিয়ে তখন পত্রপত্রিকায় নিউজ প্রকাশিত হয়। বিষয়টি তখন এলাকায় আলোচিত হয়ে ওঠে। প্রধান অভিযুক্ত রাব্বির পারিবারিক ঐতিহ্যকে হেয় করাসহ অর্থনৈতিক ফায়দা লুটতে স্থানীয় একটি চক্র ওঠেপড়ে লাগে। ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে রাব্বির বাবা সেলিম রেজা নিজের কিশোর ছেলেকে আদালতে সোপর্দ করেন। জামিন পান রাব্বি। এরপর বিষয়টি গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে পুলিশ। অভিযুক্তদের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন অ্যাড. দেবাশিষ দাস। তিনি জানান, দীর্ঘ তদন্ত শেষে অভিযোগ প্রমানিত না হওয়ায় আদালত গত রোববার রাব্বিসহ সব আসামিকে বেকসুর খালাস দেন।
এ বিষয়ে গতকাল কথা হয় পবিত্র হজ পালনে মক্কায় অবস্থানরত রাব্বির মা মাজেদা পারভীন ও বাবা সেলিম রেজার সাথে। তারা প্রথমেই ছেলে নির্দোষ প্রমানিত হওয়ায় আল্লাহর দরবারে শুকরিয়া প্রকাশ করেন। পরে বলেন, বিশ্বাস ছিলো রাব্বির সম্পর্কের ফুফুকে জড়িয়ে যে অভিযোগ করা হয়েছে, তা আদৌ সত্য নয়। মামলা চলমান থাকায় ছেলেকে উচ্চশিক্ষায় বিদেশ পাঠাইনি। অনেক হয়রানি পোহাতে হয়েছে। তবুও অবশেষে সত্য প্রমানিত হয়েছি। এতেই খুশি।
এদিকে আলোচিত এ ঘটনার সেই রাব্বি জানান, আমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা রাজধানীতে। ঢাকার রেসিডেন্সিয়াল স্কুলের ছাত্র ছিলাম। বাবার ওপর অভিমান করে গ্রামের বাড়িতে যাই। পরে বুঝতে পারি ভিলেজ পলিটিক্স কি জিনিস! ষড়যন্ত্রের শিকার হয়ে দীর্ঘদিন নানা হয়রানিতে ভোগতে হয়েছে। ঢাকা থেকে বরিশাল গিয়ে হাজিরা দিতে হয়েছে।
সৌদিয়া মার্কেটে আলাপকালে রাব্বির এক চাচা বলেন, ২০১১ সালের ঘটনা। মামলার বাদী ওই ছাত্রীকে তার বোনের দেবর লিয়নের সঙ্গে একান্ত অবস্থায় দেখতে পায় রাব্বি। রাব্বি বিষয়টি ছাত্রীর ভাই নবীনকে জানান। ভাই তার বোনকে মারধর করে। পাশাপাশি লিয়নকে মেরে রক্তাক্ত করে। এতেই ক্ষিপ্ত হয় ওই ছাত্রী। প্রতিশোধ ও নিজের অপকর্ম আড়াল করতে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে রাব্বিকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসায় ওই ছাত্রী। কিন্তু আইনের উপর কারো হাত নেই। তাই আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে অপেক্ষা করছিলাম। অবশেষে আজ সত্যের বিজয় হলো।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন