শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাহিত্য

সাম্প্রতিককালে রচিত তিনটি মার্কিন কবিতা

নিউ ইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিনে প্রকাশিত

ভাষান্তর করেছেন কাজী জহিরুল ইসলাম | প্রকাশের সময় : ৫ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৪ এএম

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী আফ্রিকান-আমেরিকান কবি ডেনাজ স্মিথ। বয়স ত্রিশ ছুঁই ছুঁই, এরই মধ্যে বেশ কিছু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। ‘গ্রীষ্ম, কোথাও’ এই কবিতাটি নিউ ইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিনে ছাপা হয়েছে ১১ জুন ২০১৭ তারিখে। টিমোথি ইউ আফ্রিকান-আমেরিকান কবি, পেয়েছেন পুলিৎজার পুরস্কার। গত ৩০ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে টিমোথির ‘চাঁদ’ কবিতাটি নিউ ইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিনে ছাপা হয়। পুলিৎজার পুরস্কার বিজয়ী আরেক মার্কিন সামসময়িক কবি জেমস টেইট। তিনি ২০১৫ সালে মৃত্যুববরণ করেন। ২৫ জুন ২০১৭ তারিখে নিউ ইয়র্ক টাইমস ম্যাগাজিনে তার ‘পরকাল’ কবিতাটি ছাপা হয়।]

গ্রীস্ম, কোথাও
ডেনাজ স্মিথ

যদি তোমার কানকে ময়লার স্তুপে ঠেসে ধরো
এর গুঞ্জন শুনতে পাবে। এমন নয় যে এটা
পূর্ণ পোকা ও দেবতাদের সুক্ষ্ণ অস্তিত্বে
বরং গসপেল উচ্চারিত ক্ষয়িষ্ণু জিহ্বা
এবং অন্যান্য কম্পন তরঙ্গ।

শোনো ময়লার সুউচ্চ সঙ্গীত, নতুনের ফেরা।
এসো। উদযাপন করো। প্রতিদিন।
প্রত্যহ পবিত্র। প্রতিটি বর্ণিল ছুটির দিনে। প্রতিটি
নতুন বছরে। প্রতি বছর দিনগুলি দীর্ঘ হয়।
জমা হয় বালক সময়।
বালক। ও বালকেরা।
ওরা এখনো আসে, দলে দলে। পুরনো
পৃথিবী ওদের টেনে ধরে,
আমাদের নতুন পৃথিবী ওদের থামাতে পারে না,
থুতুর মতো বের করে দেয়।

চাঁদ
টিমোথি ইউ

ওই মেঘে ঢাকা চাঁদ এক নীরব উচ্চারণ, আহ।

প্রতি রাতেই আমার কন্যা জানতে চায় ওর মায়ের কথা।
এবং সম্ভবত আমিই ওকে বলেছি, ওই চাঁদই তোর মা।

ঠিক বুঝতে পারছি না, কাল কি ও আমাকে জিজ্ঞেস করবে,
যখন সূর্য আলো ছড়ায় তখন কোথায় থাকে চাঁদ?

অথবা সূর্যই কি আনন্দ?

পরকাল
জেমস টেইট

একটি লোক গাছ থেকে পড়লো, আমাদের বাগানে। আমি ছুটলাম ওকে ধরতে। আমি বললাম, ‘চা খাবেন?’ ‘সম্ভবত মাজা ভেঙেছি’, লোকটি বললো। ‘বোধ হয় আইসক্রিম কাজে দেবে’, আমি বলি। ‘তোমার হাতটা দাওতো’, বললো সে। আমি হাত বাড়িয়ে ওকে তুলতে চাইলাম। লোকটি সোজা হয়ে বসেই বলে, ‘কোথায় আমি?’ ‘আপনি আমাদের বাগানে’, আমি বলি। ‘এর আগেতো এমন কিছু দেখিনি’, সে বললো। ‘খুব শাদামাটা উঠোন, ছোট্ট বাগান আর কিছু ফুলের চারা, এইতো’, আমি বলি। ‘হ্যাঁ, বেশ বিষণ্ণ দৃশ্য। কি করে থাকো এখানে?’ বললো সে। ‘কী আশ্চর্য, এটাইতো আমার বাড়ি’, আমি বলি। ‘বাড়ি? খুব অদ্ভুত শব্দ’, বললো সে। ‘আপনি কোথায় বাস করেন?’ আমি জানতে চাই। ‘বাস? বাস? খুবই আশ্চর্য প্রশ্ন তো’, লোকটি বললো, ‘আমি কোথাও বাস করি না।’ ‘এর মানে কী’? আমি প্রশ্ন করি। ‘আমি একজন মৃত মানুষ, শুধু ভেসে বেড়াই’, বললো সে। ‘বাহ, এর আগে কোনো মৃতের সঙ্গে আমার দেখা হয়নি। আপনার দেখা পেয়ে খুব ভালো লাগছে’, আমি বলি। ‘আমার মনে হয় তোমার চিৎকার বা এ জাতীয় কিছু করার কথা’, বললো সে। ‘না, না, আমি সত্যিই খুশি’, আমি বললাম, ‘আমার এখানে ঢুঁ মারার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ’। ‘আমি মোটেও ঢুঁ মারতে আসিনি। এটা ছিল ঝড়ো হাওয়া। এরপর বাতাস থেমে গেল। আমিও গাছের ফাঁকে পড়ে গেলাম’। ‘কী সৌভাগ্য আমার’, আমি বললাম। ‘তুমিও আমার সাথে যাবে, নিশ্চিত, যখন আমি ফিরবো। আর কখনোই এখানে ফিরে আসবে না’, বললেন তিনি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন