নগরীর লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের বিরোধিতা করে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, যানজট কমাতে ‘ডেডিকেটেড লেইন’ করাই যুক্তিযুক্ত। ‘ভিআইপিদের জন্য এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করা হবে’ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালামের বক্তব্যকে সংবিধান ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির পরিপন্থী বলেও উল্লেখ করেন তারা। গতকাল (সোমবার) চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে ‘পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম’ নামে নগর পরিকল্পনাবিদ ও পেশাজীবীদের এ সংগঠনের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য দেয়া হয়।
সংগঠনের সভাপতি অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ সিকান্দার খান বলেন, ২শ’ জন ভিআইপি-সিআইপিকে যারা মাথায় তুলতে চায়, সেই সরকার গণতান্ত্রিক সরকার নয়। আমার রাস্তায় আগে আমাকে নির্বিঘে্ন হাঁটার অধিকার দিন। ২শ’ জন ভিআইপি-সিআইপিকে হেলিকপ্টারে করে বিমানবন্দরে আনা-নেওয়া করুন। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মহাসচিব স্থপতি জেরিনা হোসাইন বলেন, সিডিএ চেয়ারম্যান ঘোষণা দিয়েছেন লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত ১৮ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ করবেন। যুক্তি হিসেবে সিডিএ চেয়ারম্যান সিআইপি-ভিআইপিদের দ্রুত বিমানবন্দর যাত্রার প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করেছেন। জেরিনা হোসাইন বলেন, বর্তমানে সড়কের যে সক্ষমতা আছে, অব্যবস্থাপনার জন্য সেটার শতভাগ ব্যবহার হচ্ছে না। সঠিক বিকল্প বিবেচনা না করে মাত্র ২শ’ জন শিল্পদ্যোক্তার বা সিআইপি-ভিআইপির জন্য ২৮০০ কোটি টাকার এক্সপ্রেসওয়ে কি সমর্থন করা যায়? এই সিআইপি-ভিআইপিরা মোট জনসংখ্যার কতজন? শূন্য দশমিক ০০৩৩ শতাংশ। ২০১৬ সালের পরিসংখ্যন অনুযায়ী দৈনিক বিমানযাত্রী ৩৪৭২ জন। সেটা বিবেচনা করলেও এই বিনিয়োগ যৌক্তিক নয়। নগর যাতায়াত নিয়ে কোন কৌশলগত পরিকল্পনায় এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কথা নেই বলেও জানান এই নগর পরিকল্পনাবিদ।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, চট্টগ্রাম নগরীর মাত্র ১০ শতাংশ মানুষ ব্যক্তিগত গাড়িতে চলাচল করে। ২২ শতাংশ চলাচল করে সিএনজি চালিত অটোরিকশা অথবা রিকশায়। ৪৩ শতাংশ গণপরিবহনে। ২৫ শতাংশ মানুষ হেঁটেই পথ চলেন। বিদ্যমান ৭০ শতাংশ মানুষই কোন না কোনভাবে পথচারী। ফ্লাইওভার-এক্সপ্রেসওয়ে পথচারীদের পথ চলাকে সংকুচিত করছে। সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সহসভাপতি সুভাষ বড়ুয়া, এম এ বাসেত ও বিধান বড়ুয়া এবং সদস্য প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার, শাহরিয়ার খালেদ ও তাসলিমা মুন ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন