শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মহানগর

চীনের অর্থায়নে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে

বিশেষ সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ জুলাই, ২০২০, ১২:৩৫ পিএম

রাজধানীর যানজট কমাতে প্রায় দুই বছর আগে ১৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)।

২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ হবে চীনের অর্থায়নে। প্রকল্পটি বাস্তবায়নে মোট খরচ হবে ১৬ হাজার ৯০১ কোটি টাকা। এর মধ্যে চীনের এক্সিম ব্যাংক ঋণ দেবে ১০ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা।
বাকি টাকা রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে দেওয়া হবে। সরাসরি দরপত্র প্রক্রিয়ার (ডিটিএম) মাধ্যমে চীনের ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট এ্যান্ড এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি) প্রকল্পটি বাস্তবায়ন, পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণ করবে। ২০২২ সালে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণকাজ শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সেতু বিভাগ।

অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, ২০১৯ সালে প্রকল্পের আওতায় ঋণ চুক্তির বিষয়ে সর্বাত্ত্ব প্রচেষ্টা চালানো হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যায়ে ওই অর্থবছরে ঋণ চুক্তি হয়নি। এখন ইআরডি ও চায়না এক্সিম ব্যাংকের মধ্যে ঋণচুক্তির বিষয়ে আলোচনা চলছে। চায়না এক্সিম ব্যাংক বিষয়টি মূল্যায়ন করছে।

এছাড়া প্রকল্পটির বিষয়ে নানা ধরনের তথ্য নিচ্ছে উন্নয়ন সহযোগী চীন। ইআরডি ও চায়না এক্সিম ব্যাংক ইতিবাচক দিকে এগুচ্ছো। চলতি বছরের মধ্যেই ঋণচুক্তি অনুষ্ঠিত হবে বলে নিশ্চিত করেছে ইআরডি।

এ বিষয়ে অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) যুগ্মসচিব ও এশীয়া উইংয়ের প্রধান মো. শাহরিয়ার কাদের ছিদ্দিকী বলেন, ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ঢাকার যানজট নিরসনে বিরাট অবদান রাখবে প্রকল্পটি।
গত অর্থবছরেই (২০১৯) এ প্রকল্পটির আওতায় ঋণ চুক্তির কথা ছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে ঋণচুক্তি হয়নি। তারা (চীন) নানা ধরনের তথ্য উপাত্ত নিচ্ছে। প্রকল্পটির বিষয়ে মূল্যায়ন করছে দেশটি। এর পরেই ঋণচুক্তি সই হবে। আমরা আশা করছি, এই অর্থবছরে দ্রুতই ঋণ চুক্তি সই হবে।

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের মোট দৈর্ঘ্য হবে ২৪ কিলোমিটার। উভয় পাশে চারলেনের ১৪ দশমিক ২৮ কিলোমিটার সংযোগ সড়কও নির্মিত হবে। প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী আশুলিয়া অংশের যানজট নিরসন করা। সফলভাবে উড়াল সড়কটি বাস্তবায়িত হলে ঢাকার সঙ্গে ৩০টি জেলার সহজ সংযোগ স্থাপিত হবে। উত্তরবঙ্গের সঙ্গে ঢাকার যোগাযোগ ব্যবস্থাও হবে যানজটমুক্ত।

পাশাপাশি যানজটমুক্ত হবে আব্দুল্লাহপুর-আশুলিয়া-বাইপাইল-চন্দ্রা এলাকা। নির্মাণ পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য প্রকল্পটির পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকবে চায়না ন্যাশনাল মেশিনারি ইমপোর্ট-এক্সপোর্ট করপোরেশন (সিএমসি) ।

ঢাকা শহরের উত্তরাঞ্চল তথা সাভার, আশুলিয়া ও ইপিজেড সংলগ্ন শিল্প এলাকার যানজট নিরসন এবং দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পটি গ্রহণ করে সরকার।
এক্সপ্রেসওয়েটি হবে সাভার ইপিজেড থেকে আশুলিয়া-বাইপাইল-আবব্দুল্লাপুর হয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত। প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ র‌্যাম্প থাকবে। নবীনগর ইন্টারসেকশনে থাকবে দুই কিলোমিটার দীর্ঘ উড়াল সড়ক। প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন এলাকায় তিন কিলোমিটার সেতু নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে। এছাড়া ভূমিকম্প প্রতিরোধ ব্যবস্থা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থাপনাও থাকবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে। প্রকল্পে ঋণের সুদের হার হবে ৪ শতাংশের মতো।

সেতু বিভাগ সূত্র জানায়, কোভিড-১৯ এর কারণে চীনের সঙ্গে চুক্তি সই করতে দেরি হচ্ছে। তা না হলে চুক্তি সই হয়ে যেত। উড়ালসড়কে বাংলাদেশ সরকারের কাজগুলো শতভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের নকশা রিভিউ এবং নির্মাণকাজ তদারকির জন্য ৩০৪ কোটি ১৪ লাখ ৬৯ হাজার ৪৯০ টাকার চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। চুক্তি সই হলেই মূল কাজ শুরু হবে।

সেতু বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, কোভিড-১৯ এর কারণেই ঋণ চুক্তি সইয়ে দেরি হচ্ছে। আমরা চীনের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ বজায় রাখছি। আশা করি দ্রুত সময়েই চুক্তি সই হবে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে বাংলাদেশ অংশের কাজ হয়ে গেছে। ঋণচুক্তির পরেই নির্মাণের মূল কাজ শুরু হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন