রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাহিত্য

গুরু আমার বাঁচুন ভবে

ফা হি ম ফি রো জ | প্রকাশের সময় : ১৯ অক্টোবর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

কবি আল মাহমুদ এখন দীর্ঘ ঘুমে। এত দীর্ঘ ঘুম কারো কাম্য নয়। তবু তিনি প্রশান্তিতে থাকুন। কখন চোখ ভাঙ্গে বলাও মুশকিল। সত্য হচ্ছে, দু’হাতে তিনি সাহিত্যে মণি-মুক্তা বিলিয়েছেন। বাংলা কবিতাকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। আজ তার সম্পর্কে কয়েকটা ধ্রæবসত্য উচ্চারণ করব। যা না করলেই নয়। তার কতখানি স্নেহার্দ্র ছিলাম, সিনিয়ররা এটা ভালো করেই অবগত আছেন।
১.
কবি কম লিখতেন। ভাবনার সিন্দুতে হারিয়ে যেতে পছন্দ করতেন বেশি। পত্রিকাগুলো যেভাবে তার কাছে লেখা দাবি করত, তা তিনি পূরণ করতে পারতেন না। এজন্য লেখা সংগ্রহকারীদের সীমাহীন অপেক্ষার প্রহর গুনতে হত। বেশিরভাগ সময়ই তারা ব্যর্থ হতেন কিন্তু দেখা গেছে, আমি যতবার তার কাছে লেখা আনতে গেছি, রাইফেলের গুলি আমার মিস হয়নি। এক লেখার জন্য দু’বার কখনো তার দ্বারস্ত হতে হয়নি। দিয়ে দিতেন। কিছু আপ্যায়ন করতেন কখনো।
২.
আনুমানিক ১৯৯৭ সালের একটি ঘটনার কথা মনে পড়ছে। সিলেটের ফেঞ্চুগঞ্জের একজন কবির (সম্ভবত আব্দুল আজিজ হবে নাম) প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তিনি ছিলেন প্রধান অতিথি আর আমি বিশেষ অতিথি। ট্রেন যখন ফেঞ্চুগঞ্জ রেল স্টেশনে থামবে থামবে ভাব, তখন চলন্ত ট্রেন থেকে তিনি লাফ দিয়ে প্লাটফর্মের ওপর উপুড় হয়ে পড়েন। আমি তার দেখা দেখি, টাল সামলাতে না পেরে কবির ওপর পড়ি। মনে পড়ে তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে সেদিন বলে ছিলেনÑ তোর ব্রিফকেশ কোথায়, শয়তান? তার কথা শেষ না হতেই চলন্ত ট্রেন থেকে কোনো এক সহৃদয় ব্যক্তি আমার ব্রিফকেশটি প্লাটফর্মে ছুঁড়ে দেন। আমি মুরগি ধরা শেয়াল হয়ে ওই দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ি। যা হোক, যদ্দুর মনে পড়ে, কবি সেদিন কিছুটা ব্যথা পেয়েছিলেন। আমি ক্ষমা চাইলে তিনি মাথায় হাত বুলিয়ে ছিলেন। এই বিষয়ে তিনি আমাকে বলেছিলেন, তার চাচা ছিলেন রেলওয়ের বড় কর্মকর্তা। চাচাই বলে ছিলেন এদেশের রেল নীতির ঠিক নেই। কাজেই থামার আগেই নেমে পড়তে হবে। তাকে নিয়ে এরকম অসংখ্য স্মৃতি শিকলের মতো গেঁথে আছে আমার হৃদমুকুরে।
৩.
অনেক দিন তার বাসায় যাওয়া হয়নি। তিনিও এখন ইনকিলাবে আসেন না বয়সের আধিক্যের কারণে। আগে পা রাখতেন প্রায় নিয়মিত। তিনি চোখ ভাংগুন। পৃথিবীকে দেখুন আবার নতুন ভঙ্গিতে। গুরু আমার বাঁচুন ভবে!

আমেরিকান কবি এজরা পাউন্ড দেশের বাইরেই কাটান অধিকাংশ সময়। ১৮৮৫ সালের ৩০ অক্টোবর আইদাহো অঙ্গ রাজ্যে জন্ম এবং ১৯৭২ সালের ১ নভেম্বর ইতালীতে মৃত্যুবরণ করেন। তিনি আধুনিক কবিদের গুরু এবং তুখোড় কাব্য-সমালোচক ছিলেন। টিএস এলিয়টের ওয়েস্টল্যান্ড কবিতাটি তিনি সম্পাদনা করে অর্ধেক ফেলে দেন। তার কবিতার অনুকরণে এখনো, আজকের তরুণেরাও, লিখছেন। পাউন্ডের তিনটি কবিতার অনুবাদ এখানে প্রকাশ করা হলো। অনুবাদ করেছেন এই স ম য়ের গুরুত্বপূর্ণ বাঙালি কবি কাজী জহিরুল ইসলাম।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন