শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সাহিত্য

বিয়র্নস্টিয়ের্ন বিয়র্নসনের কবিতা

| প্রকাশের সময় : ১৬ নভেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

নরওয়ের কবি। ১৯০৩ সালে সাহিত্যে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন

অনুবাদ : কাজী জহিরুল ইসলাম

একা এবং অনুতপ্ত
আমার দখলে একজন বন্ধু যার মধ্যে গুঞ্জরণ,
‘ঈশ্বরের শান্তি’ আমার নিশাচর মনে
দিনের আলো নিভে গিয়ে অন্ধকার নামে যখন
তখনো তার দৃষ্টি স্পষ্ট নিজস্ব পথের গহনে।
করে না উচ্চারণ কলহের কোনো শব্দ, না কাটে সাফল্যের দাগ
সে জানে পঙ্কিল পাপের স্বরূপ এবং এর নির্মম দাহ
ওর স্নিগ্ধ দৃষ্টি সরিয়ে দেয় প্রদাহের ক্ষত, এতটুকু নেই রাগ
যতক্ষণ না কষ্টের পরিত্রাণ, সে অনড় থামিয়ে চলার প্রবাহ।
স্মৃতির দলিল রচনা করে সে অবিরত
যা হৃদয়ে কেবল কষ্টের ঢেউ তোলে
আলতো স্পর্শে সাফ করে দগদগে ক্ষত
কষ্টেরা মাথা রাখে প্রশান্তির ওমসিক্ত কোলে।
প্রত্যাশার প্রতি বিন্দু জলকণা ফুলে ওঠে
হারায় না তা কখনো হতাশার অতলে
নিয়মের শৃঙ্খলে বন্দি, দৃঢ় হয়ে সে ফোটে
মোহভঙ্গ তার ঘটবেই একদিন, সব স্পষ্ট হলে।

ভূ-পতন
এবং তিনি ছিলেন ওলফ ট্রিগভেসন
ভয়ঙ্কর নর্থ সি অতিক্রমরত
সরাসরি মাতৃভূমির জন্যে, দখলের জন্যে
যেখানে তার জন্য প্রতীক্ষারত ছিল না কেউ
প্রথম বাঁধা, পর্বতশৃঙ্গের প্রাচীর এখন তার সামনে
মহাসমুদ্রের কাছে তা অতি ক্ষুদ্র নয়?
এবং তিনি ছিলেন ওলফ ট্রিগভেসন
প্রতিক্ষীত ভূমি প্রথমেই অবরুদ্ধ!
এক যৌবন রাজার আকাংখা
বিদীর্ণ শব্দে ভেঙে পড়ল, যেন এক সংশপ্তকের শৃঙ্গপতন
হঠাৎ এক দৈববাণীর মতো
কুয়াশার মিহিজালে উজ্জ্বল এক প্রাসাদ
ঝিলিক দিয়ে উঠে বাতাশে ডানা মেলে দিল।
এবং তিনি ছিলেন ওলফ ট্রিগভেসন
সম্ভবত দৃষ্টিরও আগে দৃশ্যমান হলো
বর্ণিল এবং ধূসর কিছু অলৌকিক মন্দিরের পুরোহিত
শুভ্র প্রাসাদগুলোকে আকাশে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন
এবং দৃঢ়তার সাথে তিনি তা দখল করে নিচ্ছেন
যৌবনের বিশ্বাস সেখানে স্থির, পবিত্র।

অরণ্যে
শোনো অরণ্যের গান, মৃদু গুঞ্জরণ
একাকিত্বে অত্যুঙ্গ আনন্দের হিলে­াল
আর যা কিছু তুচ্ছ বেদনার কলরোল
শোকেরা বলে, আমরা বাতাশের বোন।


এ সংখ্যার কবিতা

তুষারকান্তি রায়
পলক

নেটওয়ার্কের বাইরে এক অলৌকিক নীরবতা ।
ভাবনা থেকে ক্রমাগত বেরিয়ে যাচ্ছে তিস্তা-তোর্সার তুলকালাম,
জলঙ্গির জঙ্গল, রোগা জনপদ, হাঁটাপথের কথোপকথন
আর মৃদু এলাচের ঘ্রাণ!
চোখের জলের মতো এথনিক প্রচ্ছদের ভেতর পাতা
ওল্টাচ্ছে আমাদের সেইসব লুকোচুরির আহ্লাদ, ঘন্টা ঘরের ফেংশুই।
আমি রাজাভাতখাওয়া বন বাংলোর বারান্দা থেকে পাহাড় দেখার সূত্র ধরে
দশ ডিজিটের সেই ম্যাজিক সংখ্যা খুঁজছি যার কানে নকল সেমিকোলন
আর গলায় অজস্র জোনাকির জীবন্ত পেনডেন্ট ঝুলছিল. . .


সবুজ আহমেদ
হেমন্তের কোলে

ধানের শীষে বসে টলমল মুক্তাকণা শিশির
বনপাখির ডাকে ঘুম ভেঙ্গে যায় খুকির
জলে বসে ঘাপটি মেরে শিকার ধরে বক
মাছরাঙা দেখে শেখে মনে আঁকে ছক।
সোনারাঙা ভোরের আলো দূর্বাঘাসে পড়ে
চারিদারে ছড়িয়ে থাকে ধানকুটো আর খড়ে
খোকন সোনা চাঁদেরকণা ছড়া কাটে মুখে
নবান্নয়ের ঐ সুখের আমেজ হেমন্তের এই কোলে।
কৃষক ঘরে পাড়াজুড়ে ফিরনি পিঠার গন্ধ
কিচিরমিচির পাখি ডাকে সুর তুলে ছন্দ
ঝুমকো জবার রূপ দেখে মন এদিকে ওদিকে ছোটে
হেমন্তের ঐ কোলে পাকা ধান মাটির দিকে ঝোঁকে।

মনিকুন্তলা গুপ্তা
রাণী

রূপে ভুলিয়েছিলে তাই,
ডাকি ঋতুরাণী বলে মুগ্ধতার বিশেষণে
উষ্ণতায় ছুঁই শরৎ ।
এবার ছোঁয়ায় তীব্র অপ্রত্যয়ী তুমি....
ততোধিক শীতলতায় এক অসময়ী শ্রাবণ !
অবিরাম জলকথায় বুনে চল অভিমানী নিম্ন চাপের ক্ষরণকথা।
আছড়ে পড়বে বলেছিল হ্যারিকেন
ফ্লোরিডা আর হাওয়াই দ্বীপে
কথা রাখে নি সে, কেউ কি রাখে আজকাল ?
অতলান্তিকের পার ছুঁয়েই শান্ত হয়ে গেল দামাল ঝড় ।
কত জমে থাকা ব্যাথা রয়েছে তোমার বুকে,
কাছে এসেও দাও না ধরা !
প্রকৃতি তার রূপের পসরা তোমায় দান
করেছে অশেষ অকৃপণতায় রাণী মেনেছিলাম তোমাকে তাই।
তোমার মুখের ছায়া, নীল সমুদ্রের সাদা
সাম্পান ধরে রাখেনি তার অবয়বে
মিছেই ছন্দমিল খুঁজে চলেছি নুয়ে পড়া দুরন্ত কাশগুচ্ছে
প্রান্তরের অমুখর সবুজ কথায়
শিশিরধোয়া শিউলি ছুঁয়ে নিচ্ছে এজন্মের
ধিকৃত বিফল বিষণ্ণতা।
সবাই নিজের মত করে ভাবছে,
আর তুমি রয়েছ এখনো গর্ভিনী মেঘ হয়ে !
এবার কি তবে মিথ্যে হতে চলেছে রেণুতে
রেণুতে সংরাগের গল্প বীজ হয়ে ছড়িয়ে থাকা মাটির বুকে ?
তোমার আসার আশায় জল ঢেলে দেবো এবার
ঢালতেই হবে, কারন ডানা মেলবে বলে
আকাশ চাইছে হেমন্তের পাখী ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন