অঢেল সম্পদের মালিক সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা ও ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনের এমপি বেগম রওশন এরশাদ। তার নগদ টাকা বেড়েছে ১০ গুণ। বাড়ি ভাড়া থেকেই আয় বেড়েছে তিনগুণ। অপরদিকে শেয়ার, সঞ্চয় ও ব্যাংক আমানত থেকে কমেছে আয়ের পরিমাণ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় এসব তথ্য রয়েছে।
ময়মনসিংহের ১১টি সংসদীয় আসনের মধ্যে সম্পদের পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থান নিয়ে অন্যসব আসনের প্রার্থীদের ছাড়িয়ে গেছেন রওশন এরশাদ। জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান রওশন ২০১৪ সালের নির্বাচনকালীন সরকারে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ময়মনসিংহ বিভাগের কৃতিত্বের জন্য তাকে নিয়ে ইতিবাচক আগ্রহ রয়েছে ভোটারদের। হলফনামায় তিনি নিজের শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করেছেন বিএ পাস।
হলফনামা থেকে জানা গেছে, বাড়ি ভাড়া থেকে রওশন আয় করেন ১২ লাখ ৪৯ হাজার ১০৪ টাকা। ২০০৮ সালে বাড়ি ভাড়া বাবদ আয় করতেন এক লাখ ৯৮ হাজার টাকা। ২০১৪ সালে এই খাতে তার আয় ছিলো চার লাখ পাঁচ হাজার টাকা। শেয়ার, সঞ্চয়, ব্যাংক আমানত থেকে তার আয় কমেছে। বর্তমানে আয় বলা হয়েছে, ৮৮ লাখ ৩৪ হাজার ২৯৭ টাকা। কিন্তু ২০১৪ সালের হলফনামায় এই খাতে আয়ের পরিমাণ উল্লেখ করেছিলেন এক কোটি ৯৪ লাখ ৫২ হাজার টাকা। চাকরি থেকে এখন আয় ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
হলফনামা অনুযায়ী অস্থাবর সম্পদ হিসেবে রওশনের নগদ টাকা বেড়েছে ১০ গুণ। নিজ নামে এখন নগদ রয়েছে ৫০ লাখ টাকা। ২০০৮ সালে ছিলো দুই লাখ ২০ হাজার টাকা। ২০১৪ সালে বেড়ে গিয়ে পাঁচ লাখ ২৬ হাজার টাকা হয়। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা টাকার অঙ্ক হচ্ছে ২৫ কোটি ৭০ লাখ ২৯ হাজার ২৩৩ টাকা। বন্ড ও ঋণপত্র রয়েছে ৫০ হাজার টাকার। বিভিন্ন ধরণের সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৬০ লাখ টাকা। তিনটি বিভিন্ন ব্র্যান্ডের গাড়ির দাম অর্জনকালীন সময়ে এক কোটি ৫৩ লাখ ২৩ হাজার ৭৫০ টাকা।
রওশনের কাছে স্বর্ণ রয়েছে ১০০ ভরি। ২০০৮ সালে ছিলো মাত্র ৩০ ভরি। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ পর্যন্ত স্বর্ণের পরিমাণ বাড়েনি। তবে অর্জনকালীন সময়ে স্বর্ণের দাম ধরা হয়েছে এক লাখ ২৫ হাজার টাকা। ইলেকট্রনিক্স সামগ্রীর দাম সাত লাখ টাকা। আসবাবপত্র রয়েছে আট লাখ টাকার।
রওশনের নিজের নামে স্থাবর সম্পদ রয়েছে ১৩ হাজার ১৭৫ একর জমি। অর্জনকালীন সময়ে যার দাম ৩৩ লাখ টাকা। অর্জনকালীন সময়ে অকৃষি জমির দাম ১৮ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। দু’টি ফ্ল্যাট ও একটি বাড়ির দাম অর্জনকালীন সময়ে ছয় কোটি টাকা। নির্বাচনী প্রতিশ্রুতির ৯০ ভাগই বাস্তবায়ন করেছেন।
নির্বাচন কমিশনের হলফনামায় রওশন এরশাদ লিখেছেন, এখন তার নামে কোন মামলা নেই। তবে ১৯৯১ সালে মতিঝিল থানায় তার নামে একটি দুর্নীতি মামলা ছিলো। মামলা নম্বর-৪৮(৪)৯১। হাইকোর্ট সেই মামলায় তাকে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করে। পরে আপিল বিভাগ তা বহাল রেখে মামলাটি নিষ্পত্তি করে। জরিমানার টাকা আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে।
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো আসন সমঝোতায় ময়মনসিংহ-৪ (সদর) আসনটিতে কোন প্রার্থী দেয়নি আওয়ামী লীগ। অর্থাৎ, এই আসনটিতে এবারো মহজোটের প্রার্থী রওশন এরশাদ। নিজের দল জাতীয় পার্টিতে নির্বাচনকালীন সময়ে নানা নাটকীয়তা থাকলেও এখনো তিনি সরকারের ‘গুডবুকেই’ রয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন