পরিকল্পিত ছকে নির্বাচনে বিজয় লাভের অধীর অপেক্ষায় ক্ষণ গণনায় দিন কাটছে মহাজোট প্রার্থীদের। দলে স্থানীয় অভ্যন্তরীণ দৃশ্যমান বিরোধ ছাড়া বাধাহীন এই সব প্রার্থীরা। দীর্ঘ ১০ বছরে চড়ি ঘুরিয়েছেন প্রশাসনসহ সর্বস্তরে এমপি প্রার্থীরা। মন মেজাজে রয়েছে প্রভাব খাটানোর অভিজ্ঞতা।
নির্বাচনী পরিবেশেও আগের মতোই দাপুটে তারা। আশেপাশে রয়েছেন নিজ বলয়ের জী-হুজুরের দল। খবর দিচ্ছেন জয়ের পথে ডিস্টার্ব হতে পারে কে কিভাবে। সেই অনুসারে প্রতিকার প্রতিরোধ করে মাঠ খালি করতে তৎপরতা চালাচ্ছেন। হুকুম করছেন পরিস্কার হয়ে যাচ্ছে বাধাও।
অন্যদিকে, বিএনপি তথা ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীরা মাঠে সক্রিয় হতে পারছেন না এখনও। প্রার্থী চূড়ান্ত না হওয়ায়ও একটি কারণ। তবে মাঠে নামার মধ্যে দিয়ে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বাধার মুখে পড়বেন তারা এমন শঙ্কা তাদের মধ্যে। নির্বাচনী কেন্দ্রিক ভরসার কোন স্থানই তাদের জন্য অনুকূল নয়। ক্ষমতা থেকে দূরে থাকায় প্রশাসনিক ডিলিংয়ে সম্ভাব্য অনেক প্রার্থীর নেই কোন অভিজ্ঞতা। কর্মী-সমর্থকদের মাথায় মামলা-হুলিয়া থাকায় আইনী ধরপাকড় মোবাবেলা করায় তটস্থ থাকতে হবে তাদের। সেই সাথে চুল থেকে পান খসলে জবাবদিহিতার চাপ তো থাকবেই।
সিলেটের ৬টি আসনের মধ্যে মর্যাদাপূর্ণ সিলেট-১ আসনে ইনাম আহমদ চৌধুরী বিএনপির প্রার্থী হলে কিছুটা রিলাক্সে নির্বাচনী যুদ্ধের সুযোগ পেতে পারেন তিনি। সাবেক আমলা হিসেবে তার প্রতি সমীহ থাকতে পারে প্রতিপক্ষ প্রার্থী ও সহযোগি অংগের। কিন্তু বাকী আসনগুলোতে অভাবনীয় চাপে থাকবেন প্রার্থী ও কর্মী-সমর্থকরা ঐক্যফ্রন্টের। দলের তৃণমূল নেতাকর্মীরা এমন আশঙ্কাই করছেন।
সিলেট-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। দলে স্থানীয়ভাবে কোন্দল থাকলেও সহযোগি অন্যদের নিকট তার অবস্থান সমীহের। যারা নির্বাচনে জয় পরাজয়ের অপ্রত্যাশিত ফ্যাক্টর। তার নির্বাচনী এলাকাতে প্রগতিশীল শ্রেণীর প্রভাব রয়েছে। জামায়াত প্রার্থীর কারণে বিএনপির নেতাকর্মীরা পড়বে বেকায়দায়। সেখানে ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান, নেজামে ইসলাম পাটির সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুর রকিবও ধানের শীষের প্রার্থী হতে পারন। জাতীয় পর্যায়ে আব্দুল রকিবের পরিচিতি ও সুনাম পরীক্ষিত। প্রবীন এই নেতাকে ঐক্যফ্রন্ট মূল্যায়ন করে প্রার্থী করলে ভোট রাজীনিতির প্রচলিত মাঠে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে তাকে। কারন তার পক্ষে স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত তথা ঐক্যফ্রন্টের সহযোগিতা নিয়ে বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠবে। আ.লীগ প্রার্থী নাহিদের বিশাল ব্যক্তি প্রভাবও এই আসনে কার্যকরী। রাজনীতিক চরিত্রের বিপরীতে আত্মীয়তার বন্ধনে আটকে রয়েছে বিএনপি-আওয়ামী লীগে রাজনীতিকরা। নির্বাচন কেন্দ্রিক যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা অনেকটা সহজ হবে বিএনপির কোন প্রার্থী এই আসনে মনোনয়ন পেলে। নতুবা নৌকার চেয়ে ব্যক্তি নাহিদকে পছন্দ করতে পারে ভোটের মাঠে ধানের শীষের ভোটাররা।
সিলেট-৫ আসনে ধানের শীষ নিয়ে জামায়াতের সাবেক এমপি ফরিদ উদ্দিন নির্বাচন করলে প্রবল চাপে থাকতে পারেন তিনি। বেশিরভাগ নেতাকর্মী নাশকতা মামলার আসামি। নির্ভাবনায় নির্বাচনী মাঠে থাকতে পারবে না তারা। বুকে ভয় নিয়েই পথ চলতে হবে নানামুখি কৌশলে।
সিলেট-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী হতে পারেন সাবেক এমপি দিলদার হোসেন সেলিম। সেলিমের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে ডিলিংয়ের অতীত অভিজ্ঞতা থাকলেও ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রশাসনিক স্তরের সাথে তা কতটুকু মানিয়ে নিতে পারেন তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। ক্ষমতার বাহিরে দীর্ঘ দিন থাকায় শুধু মোবাবেলা করেই গেছেন, প্রভাব খাটনোর সুযোগ হয়ে উঠেনি তার। তবে নিজ এলাকায় ব্যাপক জনসমর্থনে সমৃদ্ধ তিনি। সিলেট-৩ আসনে সাবেক এমপি শফি আহমদ চৌধুরী বা যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী প্রার্থী হতে পারেন ঐক্যফ্রন্টের। দু’জনেরই প্রশাসনিক লেবেলে সংযোগ থাকার অভিজ্ঞতা রয়েছে। কাইয়ুম চৌধুরী মনোনয়ন পেলে, কর্মী-সমর্থকের মাঠ রাজনীতির পথ দীর্ঘ হবে। সেই সাথে প্রতিপক্ষ প্রার্থীও বেকায়দায় পড়বেন। এখনও রাজনীতিতে ভবিষ্যত রয়েছে কাইয়ুম চৌধুরীর। দাপুটে একটি রাজনীতিক চরিত্র রয়েছে তার।
সিলেট-২ আসনে প্রার্থী হচ্ছেন ইলিয়াস পত্মি তাহসনিা রুশদী লুনা। লুনা নিজেই একটি ব্রান্ড। সেকারণে তেমন বেগ পেতে হবে না তার। তার প্রতিদ্ব›িদ্ব মহাজোটের সাবেক এমপি ইয়াহইয়া চৌধুরী এহিয়া।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন