পিচ ঢালা রাস্তা মাত্র আঠার ফুট। ভেঙে যেয়ে কোন কোন স্থানে মূল রাস্তা আবার এক থেকে দেড় ফুট কমেছে। পিচ ঢালা রাস্তার বাইরের দু’পাশে আরও পাঁচ সাত ফুটের মত রয়েছে ফুটপাত। মূল সড়কের উভয় পাশে গড়ে উঠেছে শত শত অবৈধ স্থাপনা। যার কোনটি পাঁকা আবার কোনটি বাঁশ, খুঁটি টিন দিয়ে অস্থায়ীভাবে নির্মিত। অনেকে আবার ইট বালি দিয়ে পাঁকা প্রাচীর নির্মাণ করে সওজর জায়গা রীতিমত নিজেদের দখলেও রেখেছে। মূল সড়কের এমন করুন দশায় প্রতিনিয়ত মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে শত শত ছোট-বড় যানবাহন। অতি করুন এ দশা কালিগঞ্জ-শ্যামনগর-ভেটখালী সড়কের দুই পাশ ঘেঁষে।
সরেজমিনে কালিগঞ্জ থেকে শ্যামনগর হয়ে ভেটখালী পর্যন্ত পৌঁছে দেখা গেছে, গোটা রাস্তার ফুটপাতজুড়ে কেবলই অবৈধ স্থাপনার ছড়াছড়ি। কোন কোন জায়গাতে স্থাপনা রীতিমত মূল সড়কের কয়েক ফুটের মধ্যে পৌঁছে গেছে। অনেকে আবার রেকর্ডীয় জমিতে দ্বিতলা বাড়ি নির্মাণ করলেও সওজ’র মালিকানাধীন ফুটপাত দখলে রাখার কৌশল হিসেবে মূল সড়কের কয়েক ফুটের মধ্যে কাচা পাকা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত তুলেছে। এছাড়া ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি বাঁশ, কাঠ, বালি, ইট, পাথরের স্তুপ করে রেখেও অনেকে সড়ক ও জনপথের জায়গা দখল করে ফেলেছে।
এমতাবস্থায় কালিগঞ্জ-শ্যামনগর-ভেটখালী সড়কটি সংকীর্ণ হয়ে হয়ে পড়ায় সড়কে বেড়েছে দুর্ঘটনা, পাশাপাশি যান চলাচল করছে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে।
পাতড়াখোলা এলাকার আমেনা বেগম ও নুর ইসলামসহ অন্যদের অভিযোগ, রাস্তার পাশ ঘেঁষে এসব স্থাপনা তৈরীর কারণে পথচারীদেরও জীবনের ঝুঁকি বাড়ছে। তাদের দাবি বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠান মূল সড়কের পাশে পাকা সীমানা প্রাচীর তৈরী করে সরকারি (সওজর) জায়গা দখলে রাখার পরিণতিতে এক বছর আগে ফুলকুড়ি স্কুলের এক শিশুকে ঐ সীমানা প্রাচীরের সাথে পিঁেষ মারে ছোট আকৃতির একটি বাহন।
প্রায় অভিন্ন ঘটনা ঘটে শ্যামনগর উপজেলা সদরের চন্ডিপুর এলাকার মূল সড়কে। রাস্তার পাশ ঘেঁষে বাঁশ খুঁটির সীমানা প্রাচীর দেয়ার কারণে সংকীর্ণ হয়ে পড়া রাস্তায় পাশাপাশি দু’টি যাত্রীবাহী বাস পরস্পরকে বিপরীত দিক হতে অতিক্রমের সময় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। কয়েক মাস আগেও কালিগঞ্জ-শ্যামনগর সড়কের বাদঘাটা এলাকায় প্রায় একই ধরনের একটি দুর্ঘটনার শিকার হয়ে বাসের চালকের সহকারী মারাত্মকভাবে আহত হয়।
এসব স্থাপনা নির্মাণকারীদের দাবি, অন্যরা দখল করে স্থাপনা করেছে বলে তারাও ছোট-খাট স্থাপনা নির্মাণ করেছে। অন্যরা সরিয়ে নিলে তারাও সরিয়ে নিতে সম্মত।
সাধারণ পথচারী, এলাকাবাসীদের মত যানবাহন চালক এবং পরিচালনার সাথে যারা জড়িত তারাও অভিযোগ করেছেন গুরুত্বপুর্ণ এ সড়কের দু’পাশ অবৈধ স্থাপনায় ভরে যাওয়াতে মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহনসমূহ।
এবিষয়ে সওজ এর সাতক্ষীরা অঞ্চলের সেকশন অফিসার কামরুল ইসলাম বলেন, রাস্তার দু’পাশে অবৈধ স্থাপনার কারণে রাস্তা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ার বিষয়ে তারা ইতোমধ্যে অবহিত হয়েছেন। সড়কটির দুই পাশে এক ফুট করে স¤প্রসারণের প্রস্তাবনাও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে উপস্থাপন করা হয়েছে। স¤প্রসারণের কাজ শুরু হলে সওজ’র জায়গায় গড়ে ওঠা যাবতীয় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন