শনিবার, ১১ মে ২০২৪, ২৮ বৈশাখ ১৪৩১, ০২ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সাহিত্য

কবিতা

| প্রকাশের সময় : ২৫ জানুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৫ এএম

দুটি কবিতা
নিঃশব্দ আহামদ


পরিসমাপন
মৃত্তিকার শরীরে বুনে যাবে কতেক জিন,
সবুজাভ উদ্ভিদের যৌবনে হয়তো শোভা হয়ে যাবে এই রূপ,
জরাজীর্ণ আমি আর নেই,উশখুশকো চুলের বিস্তারে আমি যে আর হেঁটে বেড়াচ্ছিনা
এইসব নির্জন পথ ধরে,বিকেলের কোনো সখাÍ
স্মরণসভা থেকে কতেক ধ্বণী কেবল তরঙ্গের মতো পৌঁছাবে হয়তো অশ্রাব্য,
পাচ্ছিনে শুনতে অথচ কড়ই শাখা থেকে নুয়ে যাচ্ছিলো সেদিন আমার ছেলেবেলা
তারপর শীতের কোনো সকাল থেকে ভেসে আসছে আমার স্কুল পালানো গান
বিলের আলে বাবার হাঁক ৷
দুপুর সব ফিকে হয়ে গেলে অলস দিনের মতো,
আমি পাড়া বেড়ানো দোয়েলের পায়ে রেখে চলি চোখ
সব মগডালে চেয়ে চেয়ে মেপে চলি বয়েস,
সমূলে উৎপাটন রেখে কতো বৃক্ষের হারিয়েছে ছায়া রূপ
একদিন চুড়ান্ত কোনো পরিসমাপন এলে,
দীর্ঘশ্বাস ভাষায় হাহাকার রেখে যে ফিরছে এপিটাফের কাছে
আমি তার জন্যেই ছিলেম যেনো এতোটা কাতর ৷

বিষাদ বর্ণ

অনেকটা আকাশ নির্ণয় করি,শাদা মেঘ সরে সরে কখনো ঢাকা পড়ে
এই যে কমলা রোদ,বিকেল
বিষন্ন সব সন্ধ্যার মতো হাঁটু গেড়ে ধ্যান বাসনায় উত্থিত হাতে
কামনা হয়ে গেছে অবাক জোড়া চোখ
নীল সমুদ্দুরে প্রমোদতরি ভাসাবার কোনো আনন্দ এঁকে বাতাস
ছুঁয়ে দেয় যেনো একখানা নীল আঁচল
তারই আবহে সৌন্দর্য্য বর্ধনে চাঁদখানা ঢাকে অবাক নীল আকাশ৷
মাতলামো কোনো প্রলাপের মতো আওড়িয়ে ডাকে নীল সমুদ্দুর,জলজ অভিসার ৷
রূপস্নানে আসক্তি জমে জমে ফিরে এলে সান্ধ্যঘর
ধূপের ঘ্রাণে মথিত প্রায়,ছুঁয়ে যাই অলক্ষ্যে নীলচুড়ির রিনি
নীল টিপে ডুবে গেছে আমরা যতো নীলাভ বিষাদ ৷


সবুজ আহমেদ
আবীরমাখা রাতে

নীল আকাশের নীচে তার অপেক্ষায় প্রহর কাটে
ভাবনার দেয়াল টপকে দৃষ্টি সীমা যত দূর যায়
পাগল বেশে খুঁজি তবুও তারে ঘাটে ওঘাটে।
পূবালী বাতাসে ভেসে আসা ফুলের সুবাসে
শেষ বিকেলে পাখিদের নীঢে ফেরার দলে
আঁধারে ঢেকে থাকা আবীরমাখা রাতে
কুয়াশা ঘেরা নিয়ন আলোর ভোরের শিশিরে
একাকীত্বের নির্জনতায় হেমন্ত যেয়ে শীতের সকালে।

হালিম নজরুল
ফিরে এসো পাতারা

নি:শ্বাসে বারুদের প্রকট গন্ধ মেখে
ভেসে যায় পাতারা ঈগলের বেশে,
বাসনায় রাখে স্বর্গ-সকাল।
ক্রমশঃ অদৃশ্য শিকারী ঈগল,
দৃষ্টি যেন তার সূর্যের দেশে,
নখর প্রলুব্ধ সফল শিকারে।
চেয়ে দেখো ওই মরুময় নদীটির দিকে,
একদিন নীলাভ সমুদ্র ছিল ওখানে।
গোধূলি নামলে হলুদ হয়ে ওঠে সবুজ পাতারাও
দিন ফুরালে অন্ধকারে বিলীন প্রজাপতি সুখ।
ফিরে এসো প্রিয়তমা,ফিরে এসো,
মেনে নাও তোমার জন্মসূত্র।
নেমে এসো পাতারা,নেমে এসো,
আবার মিশে যাও এই মৃত্তিকার গাঁয়ে।

তানহিম আহমেদ
এই নদীটি

নদীর প্রস্ফুট নীলাভ জলরাশি আছড়ে পরছে তীড়ে
ভাঙা শামুকের উপর বালির মসৃণ আস্তরণ—
সন্ধ্যের ওপারে হেঁটে চলে যায় একটি নিস্তব্ধ হিম রজনী
কালভার্টের পাশে শেকড় তলানো শত বর্ষীয়সী বৃক্ষ।
বাংলোর দেয়ালে অস্তগামী লালীমার প্রতিচ্ছবি
ছাদের রেলিং ঘেঁষে বসে আছে সারিবদ্ধ পোষা কবুতর
মাটির শেষ স্তর পর্যন্ত সাজানো স্মৃতির নুড়ি পাথর
যেন আওয়াজ দিলেই সহসা তার প্রতিধ্বনি পাওয়া যাবে
ভোর হবার আগেই প্রত্যুষে আরেকটি সন্ধ্যের আগমন।
সবুজ ঘাসের ফাঁকে ফাঁকে পরজীবী ছত্রাকের পুনর্জন্ম
পুরোনো ব্রিজের ওপার থেকে ধেয়ে আসে উত্তুরে বাতাস
সিঁড়ির পাড়ে জমেছে ধুলো— সবুজ পিচ্ছিল শ্যাওলা..

এই শেকড় তলানো বর্ষীয়সী বৃক্ষ, ভাঙা কালভার্ট
বঙ্গোপসাগর হতে আবহমান বন্ধ্যা এই নির্বাক নদীটি
একদা কোনো গ্রীষ্মে ‘বহুগামী’ গৌতম বুদ্ধকে দেখেছিল।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
Skh sourav halder ১৬ এপ্রিল, ২০১৯, ১০:০৮ এএম says : 0
কবিতাগুলো আমার ভালো লেগেছে কিন্তু আমি ও কবিতা দিতে চায় তো কিভাবে দেবো।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন