শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ম দর্শন

প্রসঙ্গ: সালাতের রূহানী উদ্দেশ্য

এ. কে. এম. ফজলুর রহমান মুন্শী | প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯, ১২:০৪ এএম

(পূর্বে প্রকাশিতের পর)


(২) সালাত হয় দাঁড়িয়ে আদায় করতে হয়, কিংবা বসে। দাঁড়ানোকে আরবীতে বলে কিয়াম। এখানেও চারটি বর্ণ রয়েছে। যথা-ক্কাফ, ইয়া, আলিফ এবং মীম। বসাকে আরবীতে বলে কা’দাহ। এখানেও চারটি বণই আছে। যথা-ক্কাফ, ‘আইন, দাল এবং তা। (৩) সালাত আরম্ভ করতে হয়।, সূরাহ অথবা কেরাআত দিয়ে। তাই দেখা যায়, আরবী সূরাহ শব্দেও চারটি বর্ণ রয়েছে। যথা-ছীন, ওয়াও, রা এবং তা। আর কোরআন শব্দেও চারটি বর্ণ স্থান লাভ করেছে। যথা-ক্কাফ, রা, হামজা এবং তা। (৪) সূরাহ ও কেরাআত শেষ করে মুসল্লী রুকূতে যায়। লক্ষ্য করলে দেখা যায়। আরবী রুকু শব্দটিতেও চারটি বর্ণ রয়েছে। যথা-রা, কাফ, ওয়াও এবং ‘আইন। (৫) রুকু শেষ করে দাঁড়ানোকে আরবীতে ক্কাউমাহ বলে। এখানেও চারটি বর্ণের সমাহার। যথা-ক্কাফ, ওয়াও, মীম এবং তা। (৬) তারপর মুসল্লী সিজদাতে যায়। আরবী সিজদাহ শব্দে চারটি বর্ণ আছে। যথা-ছীন, জ্বীম, দাল এবং তা। (৭) সিজদাহ শেষ করে মুসল্লীকে বসতে হয়। এই বসাকে আরবীতে বলে জলছাহ। এখানেও চারটি বর্ণই আছে। যেমন-জ্বীম, লাম, ছীন এবং তা। (৮) এভাবে নির্দিষ্ট রাকাতগুলো শেষ করে মুসল্লী সালাম ফিরায়ে সালাত হতে বের হন। দেখা যায় আরবী সালাম শব্দেও চারটি বর্ণ আছে। যথা-ছীন, লাম, আলিফ এবং মীম। এখানে একথা বলার অবকাশ রাখে না যে, সালাতের সকল অবস্থাই সংখ্যাতত্তে¡র দিক থেকে চার এর সাথে জড়িত মূল এবং ইহার মূল নিহিত আছে আল্লাহ নামের চার বর্ণ বা চার সংখ্যার সাথে। (৯) আর ও লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, ফরজ সালাত চার রাকায়াতের বেশী এক নিয়তে আদায় করা হয় না। চাই সে সালাত ফরজে ‘আইনই হোক কিংবা ফরজে কেফায়াই হোক। ফরজ সালাতের রাকায়াত সংখ্যা চার-এর মাঝেই সীমাবদ্ধ-এর বেশী নয়। তবে হাঁ, তিন এবং দুই রাকায়াত ফরজ সালাতও আছে। কিন্তু দুই রাকায়াতের কম ফরজ সালাত নেই। (১০) দুই রাকায়াত বিশিষ্ট ফরজ সালাত হলো-ফজর এবং জুমা। এই দুই রাকায়াতকে যোগ করলে যোগফল চারই হয়। যথা-(২+২) = ৪। (১১) মাগরিবে তিন রাকায়াত ফরজ সালাত আছে। আল্লাহপাক এই তিন রাকায়াতকেও নিজের জন্য কবুল করেছেন। হাদীস শরীফে আছ, “ইন্নাল্লাহা বিত-রুন ইউহিববুল বিতরা” অর্থাৎ আল্লাহপাক বেজোড়, তিনি বেজোড়কেই ভালোবাসেন। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে তিন সংখ্যাটিও বিজোড় হিসেবে আল্লাহরই প্রতিই নিবেদিত। (১২) ইসলামের দৃষ্টিতে সকল কাজই নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল। মুসলীরা ওয়াক্ত ভেদে তাই নিয়্যাত করে থাকেন। হাদীস শরীফে আছে, “ইন্নামাল আমালু বিন্নিয়্যাত”। অর্থাৎ সকল আমলই নিয়্যাতের উপর নির্ভরশীল। দেখা যায় আরবী নিয়্যাত শব্দেও চারটি বর্ণই আছে। যথা-নুন, ইয়া, ইয়া এবং তা।
সুতরাং সালাত কায়েমের লক্ষ্যে আসুন আমরা-সত্যিকারভাবে সালাতের বিভিন্ন অবস্থার সাথে একাত্ম হয়ে যাই এবং আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে প্রয়াসী হই। আল্লাহপাকই আমাদের সহায়।

সালাতের দ্বিতীয় প্রকার হচ্ছে ওয়াজিব। এই ওয়াজিব সালাতের মাঝে রয়েছে ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার সালাত, বিতর-এর সালাত এবং কাজা সালাত। সংখ্যাতত্তে¡র আলোকে সার্বিকভাবে এই ওয়াজিব সালাতও চার সংখ্যার সাথে সংশ্লিষ্ট। নিন্মের উদাহরণগুলোর প্রতি গভীর দৃষ্টিতে তাকালে আমরা দেখতে পাই : (১) আরবী ওয়াজিব শব্দটিতে চারটি বর্ণ আছে। যথা-ওয়াও, আলিফ, জ্বীম এবং বা। এখানেও চার সংখ্যার বিকাশ দেখা যায়। (২) ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহার মাঝে দুই দুই রাকায়াত করে মোট চার রাকায়াত ওয়াজিব সালাত আদায় করতে হয়। (৩) বিতর সালাতও ওয়াজিব। এই সালাত মোট তিন রাকায়াত। তিন সংখ্যাটি বেজোড় বিধায় এখানেও ওয়াজিব। এই সালাত মোট তিন রাকায়াত। তিন সংখ্যাটি বেজোড় বিধায় এখানেও আল্লাহর মহত্ব বিধৃত রয়েছে। যেমন-হাদীস শরীফে আছে, আল্লাহপাক বেজোড়, তিনি বেজোড়কে ভালোবাসেন। (৪) কাজা সালাতও ওয়াজিব। লক্ষ্য করলে দেখা যায়, আরবী কাজা শব্দটিতে চারটি বর্ণ স্থান লাভ করেছে। যথা-ক্কাফ, দ্বোয়া, আলিফ এবং হামজা। অতএব ওয়াজিব সালাতও একমাত্র আল্লাহর জন্যই নিবেদিত। মহান আল্লাহপাক স্বীয় বান্দাহদেরকে ওয়াজিব আদায়ের ভিতর দিয়ে গভীর হতে গভীরতর নৈকট্যের সাগরে অবগাহন করার তাওফিক প্রদান করেন। (৫) ওয়াজিব সালাতের পর, তৃতীয় প্রকার সালাত হচ্ছে সুন্নাত। এই সুন্নাত সালাতেও চার সংখ্যাটির বিকাশ লক্ষ্য করা যায়। যথা- (১) আরবী সুন্নাত শব্দটিতে সর্বমোট চারটি বর্ণ আছে। যেমন -ছীন, নূন, নূন এবং তা। (২) এই সুন্নাত সালাত আবার দুটি শ্রেণীতে বিভক্ত। (ক) সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ এবং (খ) এই সুন্নাতে যায়েদাহ। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, এই দুই প্রকার সুন্নাত সালাতের মাঝেও চার সংখ্যাটির সম্পৃত্তি বিদ্যমান আছে। যেমন-সুন্নাতে মুয়াক্কাদাহ সর্বমোট চল্লিশ রাকায়াত। ফজরে দুই, জোহরে ছয়, মাগরিবে দুই, এশাতে দুই, জুম্মায় আট এবং তারাবীতে বিশ রাকায়াত। এখন এই সবগুলোকে যোগ করলে, যোগফল হয়। (২+৬+২+২+৮+২০)=৪০ (চল্লিশ)। এখন এই চল্লিশ যদি এক ইউনিট বা এককে পরিণত করা হয় তাহলে ফল হবে চার। যথা (৪+০)=৪। তাই একথা বলা অসঙ্গত হবে না যে, সুন্নাতে মোয়াক্কাদাহ সালাতের সর্বত্রই আল্লাহর কুরবত ও নৈকট্যের প্রতিফলন বিদ্যমান আছে।

অপরদিকে পাঁচ ওয়াক্তের সালাতে সুন্নাতে যায়েদাহ চার চার রাকায়াত করেই আছে। যেমন আসরে চার রাকায়াত এবং এশার চার রাকায়াত। তাই এখানেও চার এরই মাহাত্ম্য লুক্কায়িত আছে।

(৬) সালাতের সর্বশেষ শ্রেণী হচ্ছে নফল। এই সালাতের জন্য বান্দাহ আল্লাহ পাকের অসংখ্য নেয়ামত ও রহমত লাভ করতে সক্ষম হয়। হাদীস শরীফে আছে, “তোমরা নফল ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর কুরবত ও নৈকট্য তালাস কর।” লক্ষ্য করলে দেখা যায়, আরবী নফল শব্দটিতে তিনটি বর্ণ আছে। যথা-নূন, ফা, এবং লাম। এই তিন সংখ্যাটিও বেজোড় হিসেবে এই সংখ্যাটিও আল্লাহর মনোনীত ও পছন্দনীয়। এই জন্য সকল মুসল্লীর উচিত সকল চিন্তা-ভাবনা জড়তা আবিলতামুক্ত হয়ে সালাতের মাধ্যমে আল্লাহ পাকের দীদার লাভ করা। কেননা হাদীস শরীফে আছে, “তুমি আল্লাহর ইবাদত এমনভাবে করবে, যেন তুমি আল্লাহকে দেখতে পাচ্ছ, যদি তুমি তাঁকে দেখতে না পাও তাহলে (এমন ধারণা কর যে,) তিনি তোমায় দেখেছেন।”
(৭) শুধু তাই নয়, সালাত আদায় করতে হলে মুসল্লীকে কেবলার দিকে মুখ করে দাঁড়াতে হয় কিংবা মূল কা’বাকে সামনে রেখে দন্ডায়মান হতে হয়। লক্ষ্য করলে দেখা যায়, আরবী কেবলা শব্দটিতে সর্বমোট চারটি বর্ণই স্থান লাভ করেছে। যথা-ক্কাফ, বা, লাম এবং তা। তাছাড়া আরবী কা’বা শব্দটিতেও চারটি বর্ণই রয়েছে। যথা-ক্কাফ, আইন, বা এবং তা। এখানেও চার সংখ্যারই বিকাশ।
(৮) সালাতে যা কিছু পাঠ করা হয়, তার সবকিছুই অহী হিসেবে পরিগণিত। তন্মধ্যে, প্রথম হচ্ছে, ‘অহীয়ে মতলু’ বা কুরআন এবং দ্বিতীয় হচ্ছে, ‘অহীয়ে গায়রে মতলু’ বা হাদীস। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, কুরআন শব্দেও চারটি বর্ণ আছে। যথা-ক্কাফ, রা, আলিফ এবং নূন। অপরদিকে হাদীস শব্দেও চারটি বর্ণই সম্পৃক্ত আছে। যথা-হা, দাল, ইয়া এবং ছা। সুতরাং এখানেও চার-এর আবর্তনই লক্ষ্য করা যায়।
(৯) সালাত কায়েম করার পূর্বশর্ত হচ্ছে, ‘তাহুর’ বা পবিত্রতা অর্জন করা। হাদীস শরীফে আছে, “পবিত্রতা ঈমানের অংশবিশেষ।”। লক্ষ্য করলে দেখা যায় আরবী তাহুর শব্দে চারটি বর্ণই রয়েছে। যথা-ত্বোয়া, হা, ওয়াও এবং রা।
(১০) এই পবিত্রতা অর্জনের সার্বিক কর্মকান্ডকে আরবীতে বলা হয় ‘ওয়াজুউন’ বা ওয়াজু। লক্ষ্য করলে দেখা যায়, ওয়াজুউন শব্দেও চারটি বর্ণই রয়েছে। যথা-ওয়াও, দ্বোয়া, ওয়াও এবং হামজা। লেখার সময় অধিকাংশ ক্ষেত্রে শেষ বর্ণ হামজা উহ্য থাকে বলে ‘ওয়াজু’ লেখা হয়।
(১১) ওয়াজু সম্পাদনের লক্ষ্যে যে সকল অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ব্যবহৃত হয়, সেগুলোকে আল-কুরআনে বহুবচনে ব্যবহার করা হয়েছে। যথা- ‘বুজুহ’ আইদি, রুউস এবং আরজুল। অর্থাৎ মুখমন্ডল, হস্তাদি, মস্তক এবং পদসমূহ। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, এর প্রত্যেকটিই চার-এর সাথে সংশ্লিষ্ট। যেমন-বুজুহ, শব্দে চারটি বর্ণ আছে। যথা-ওয়াও, জ্বিম, ওয়াও এবং হা। আর আইদি শব্দেও চারটি বর্ণই স্থান লাভ করেছে। যথা- আলিফ, ইয়া, দাল এবং ইয়া। রুউস শব্দেও চারটি বর্ণই আছে। যথা-রা, হামজা, ওয়াও এবং ছিন। আর আরজুল শব্দেও চারটি বর্ণই আছে। যথা-আলিফ, রা, জ্বিম এবং লাম।
(১২) আর যে স্থানে সালাত আদায় করা হয়, সে স্থানকে আরবীতে মসজিদ অথবা মাসজাদ বলা হয়। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, এখানেও চারটি বর্ণই আছে। যেমন-মীম, ছিন, জ্বিম এবং দাল।
(১৩) সালাত আদায় করতে গেলে জামায়াতের সাথে আদায় করা হয়, নতুবা পৃথক পৃথকভাবে আদায় করতে হয়। জামায়াতের সালাত যিনি পরিচালনা করেন, তাকে বলা হয় ইমাম। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, এই ইমাম শব্দেও চারটি বর্ণই আছে। যথা-আলিফ, মীম, আলিফ এবং মীম। আর একা বা নিয়মিত সালাত আদায়কারীকে বলে মুসল্লী। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, আরবী মুসল্লী শব্দেও চারটি বর্ণই আছে। সুতরাং সালাত যে কেবলমাত্র আল্লাহরই জন্যই এর প্রমাণ সংখ্যাতত্তে¡র আলোকে আমরা সহজেই অনুধাবন করতে পারি। আর তাইতো নবী পাক (সা:) বলেছেন, সালাতেই আমার চোখের শান্তি বিধৃত আছে। কারণ, আল্লাহর দর্শন হতে অধিকতর তৃপ্তি ও শান্তি আর কিছুতেই হতে পারে না।
হিজরী দ্বিতীয় সালে সালাত আদায়ের পূর্ব সংকেত হিসেবে আজান প্রথা চালু হয়। পূর্বতন কোন নবী এবং রাসূলের আমলে সালাতের আহ্বান ধ্বনির কোন ব্যবস্থা ছিল না। আজান মূলত: জাতে এলাহী এবং নূরে এলাহীর মূর্ত ঠিকানা। হিসেব করলে দেখা যায়, এই আজান শব্দটিতেও চারটি বর্ণই রয়েছে। যথা-আলিফ, জাল, আলিফ এবং নুন। এই আজানেও চার-এর বিকাশ বিধৃত আছে।

এ পর্যন্ত আমরা সংখ্যাতত্তে¡র আলোকে সালাত “আল্লাহর জন্য” এই তথ্যটি সম্পর্কে বিশদ আলোচনা করেছি। আমরা অবশ্যই অবলোকন করেছি যে, একমাত্র রাসূলে পাক (সা:) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত সালাত ছাড়া বিশ্বের অন্যান্য কোনও ধর্মের উপাসনা পদ্ধতিতে আল্লাহর সাথে বান্দাহর মিলনের কোনই নজীর নেই। এমনকি ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা যা কিছু করছে তা লোকাচার, গোত্রপ্রীতি ও অন্ধ অনুকরণ মাত্র। কারণ তাদের ধর্মীয় কাজ বা অনুষ্ঠানগুলোর একটিকেও “আল্লাহর জন্য” নিবেদিত বলে সংখ্যাতত্তে¡র দ্বারা রোজ কেয়ামত পর্যন্ত প্রতিপন্ন করতে পারবে না।
এবার সালাতের আভ্যন্তরীণ ও ব্যবহারিক দিকের আলোচনায় আসা যাক। এখানেও আমরা সংখ্যাতত্তে¡র আলোকে বিশ্লেষণ করব যে, রাসূলে পাক (সা:) যে, সালাতের ব্যবহারিক শিক্ষা উম্মতের সামনে রেখে গেছেন সেভাবেই সালাত কায়েম করতে হবে। অন্যথায় সালাত কায়েম হবে না বা হতে পারে না। আমরা জানি পূর্বতন নবী এবং রাসূলদের আমলেও সালাতের প্রচলন ছিল। কিন্তু তাদের সে সালাতের নির্দিষ্ট কোন নিয়মতান্ত্রিকতা ছিল না। কাহারো আমলে দু’রাকাত, তিন রাকাত বা চার রাকাত সালাত আদায়ের বিধান ছিল। কিন্তু দৈনিক নির্দিষ্ট সময়ে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত প্রতিষ্ঠার কোন ব্যবস্থা ছিল না। দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করা হয় নূরনবী হযরত মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা:) ও তাঁর উম্মতদের ওপর। মহান আল্লাহপাক তাঁকে যে জীবন বিধান দান করলেন, তা হলো ইসলাম। ইসলামই একমাত্র জীবন বিধান যা, আল্লাহ পাকের মনোনীত ও পছন্দনীয়। এছাড়া অন্য কোন জীবন বিধান হতেই পারেনা।
লক্ষ্য করলে দেখা যায় যে, রাসূলে পাক (সা:)-এর আসল নাম পবিত্র কুরআনে “মুহাম্মদ” (সা:) চার বার উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যান্য আসমানী কিতাবে তাঁর নাম ‘আহমাদ’ রাখা হয়েছে।

আরবী আহমদ শব্দটিতে চারটি বর্ণ আছে। যথা- আলিফ, হা, মীম এবং দাল। এই চার সংখ্যাটি মূল প্রেমাস্পদ আল্লাহর প্রতি নিবেদিত। আর আরবী “মুহাম্মদ” শব্দটিতে পাঁচটি বর্ণ আছে। যথা-মীম হা, মীম, মীম এবং দাল। মুহাম্মদ (সা:) হলেন হাবীব এবং আল্লাহপাক হলেন মাহবুব। মাহবুব যেহেতু হাবীবের সকল কাজেই সন্তুষ্ট থাকেন সেহেতু মোহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ (সা:)-কে “হাবীবুল্লাহ” উপাধিতে বিভূঁষিত করা হয়েছে। এই শ্রেষ্ঠতম উপাধি আর কোন নবী-রাসূলের জন্য ছিল না। এজন্য রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর মহব্বতকেই পবিত্র কুরআনে আল্লাহর প্রতি নিবেদিত মহব্বত হিসেবে নির্ধারিত করা হয়েছে।

আমরা এও জানি যে, পাঁচ ওয়াক্ত সালাত ফরজ করা হয়েছিল মি’রাজের রাতে। হিসেব করলে দেখা যায়, আরবী মিরাজ শব্দটিতে পাঁচটি বর্ণ আছে। যথা-মীম, আইন, রা, আলিফ এবং জ্বিম। এই পাঁচ সংখ্যাটি ‘মুহাম্মদ’ (সা:) নামের পাঁচ সংখ্যার সাথে ঘনিষ্ঠ ও সম্পর্কযুক্ত।
মি’রাজের প্রাক্কালে রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর সফরসঙ্গী যিনি ছিলেন, তিনি হলেন হযরত জিব্রিল ফেরেশতা। আরবী জিব্রিল শব্দেও পাঁচটি বর্ণই আছে। যথা-জিম, বা, রা, ইয়া এবং লাম।
মি’রাজের সময় রাসূলুল্লাহ (সা:)-এর বাহক ছিল বোররাক। আরবী বোররাক শব্দটিতেও পাঁচটি বর্ণই আছে। যথা-বা, রা, রা, আলিফ এবং ক্কাফ।
মি’রাজের লগ্নে রাসূলে পাক (সা:) আল্লাহর সামনে পাঁচ বারই ফিরে ফিরে গিয়েছিলেন এবং আল্লাহর তরফ হতে শ্রেষ্ঠ নেয়ামত লাভ করেছিলেন।
(চলবে)

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন