পবিত্র মাহে রমজানে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতায় প্রতিদিন দশ সহস্রাধিক রোযাদারের অংশগ্রহণে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। রোযাদারদের দোয়া যখন একসাথে উচ্চারিত হয় তখন যেনো এক মধুর শব্দে এলাকা মুখরিত হয়। হৃদয় স্পন্দনে এ যেনো এক ভিন্ন সাদের শান্তিতে পুলকিত হয়ে ওঠা। নিজের পাপ রাশির ক্ষমা চাওয়া, দেশ ও জাতির জন্য মঙ্গল কামনা করা থেকে শুরু করে সারা বিশ্বের মুসলিমদের জন্য দোয়া চাওয়া হয় এ ইফতার মাহফিলে।
পীরে কামেল, অবিভক্ত বাংলা ও আসামের শিক্ষা বিভাগের সহকারী পরিচালক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা সংস্কারক, আত্মাধিক সাধক, হজরত শাহ্ সুফি আলহাজ খানবাহাদুর আহ্ছানউলা (রহ.)’র হাতে গড়া ‘স্রষ্টার ইবাদত ও সৃষ্টের সেবা’ ব্রত নিয়ে চলা নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের খাদেম আলহাজ মৌলভী আনছার উদ্দিন আহমদের বিশেষ তত্ত্বাবধানে নলতা পাক রওজা প্রাঙ্গণে প্রতি বছরের ন্যায় এবছরও পবিত্র মাহে রমজানের ১ম দিন থেকেই এই ইফতার মাহফিল হচ্ছে। বিকাল হওয়ার সাথে সাথে স্থানীয়সহ জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাজার হাজার রোযাদার এখানে সমবেত হন। সামিয়ানা দিয়ে ঢাকা বিশাল আকারের মাঠটি রোযাদারদের আগমনে আস্তে আস্তে কানায় কানায় ভরে উঠে। ছয় হাজারেরও অধিক রোজাদার এই মাঠে ইফতার মাহফিলে অংশ নেন।
এছাড়া পূর্ব নির্ধারিত আশপাশের একাধিক মসজিদ ও প্রতিষ্ঠানে প্রতিদিন চার সহস্রাধিক রোজাদারদের জন্য নলতা কেন্দ্রীয় আহ্ছানিয়া মিশনের পক্ষ থেকে ইফতারি পাঠানো হয়। ইফতার মাহফিলে সংসদ সদস্য, বিচারক, সাংবাদিক থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি পেশার মানুষ অংশগ্রহণ করেন।
মিশনের কর্মকর্তা শিক্ষক সাইদুর রহমান, আলহাজ মো. আবুল ফজল, মো. এনামুল হক থোকন ও হিসাবরক্ষক মো. এবাদুল হক জানিয়েছেন। মিশনের রন্ধনশালায় নিজস্ব কারিগরদ্বারা কিছু ইফতারির মেনু প্রস্তত করে ও বাইরে থেকে ক্রয় করে প্রতিদিন মোট ৭ প্রকারের ইফতার সামগ্রী প্রদান করা হচ্ছে। ইফতার সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ডিম, ছোলা, চিড়া, কলা, খেঁজুর, সুজির ফিন্নি ও সিঙ্গাড়া। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে সুষ্ঠু ও ধর্মীয় ভাব-গাম্ভীর্য পরিবেশে রমজানের প্রথম থেকে শেষ দিন পর্যন্ত অব্যাহত ইফতার মাহফিলে যাতে রোজাদাররা ইফতার করতে পারেন সেজন্য মিশন কর্তৃপক্ষ লাখ লাখ টাকা ব্যয়ে চারদিকে বাঁশের রেলিং ও মাথার উপরে টিনের ছাউনি দ্বারা মনোরম পরিবেশের ব্যবস্থা করেছেন।
ইফতার মাহফিলের বিভিন্ন দিনে পবিত্র কোরআন ও হাদীসের আলোকে মূল্যবান আলোচনা রাখেন নলতা শাহী জামে মসজিদের খতিব আলহাজ মাওলানা মো. আবু সাঈদ, পেশ ইমাম মাওলানা মো. আশরাফুল ইসলাম আজিজি ও হাফেজ আলহাজ শামছুল হুদা। দরুদ পরিবেশন করেন, হাফেজ মো. হাবিবুর রহমান ও হাফেজ আশিকুর রহমান।
এদিকে ইফতার করতে আসা রোজাদারদের বাইসাইকেল, মোটরসাইকেল, ভ্যানসহ অন্যান্য যানবাহন ও জুতা নিরাপদে রাখার জন্য মিশন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা করেছেন। এভাবেই রমজানের শেষ দিন পর্যন্ত ইফতার মাহফিল অব্যাহত থাকবে বলে মিশন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন