দাম বাড়ার গুজব ছড়িয়ে ঠাকুরগাঁও শহরে ক্রেতাদের কাছে অতিরিক্ত মূল্যে লবণ বিক্রির অভিযোগে দুই ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে শহরের কালিবাড়ী ও পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড বাজার থেকে তাদের আটক করা হয় বলে জানান ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম।
আটককৃতরা হলেন: কালিবাড়ি বাজারের মাসুদ স্টোরের মালিক মাসুদ রানা (২৮) ও পুরাতন বাসষ্ট্যান্ড বাজারের আপন স্টোরের মালিক রফিকুল ইসলাম (৪০)।
জেলা প্রশাসক ড. কেএম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ঠাকুরগাঁওয়ে লবণসহ সকল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য সামগ্রী সরবরাহ স্বাভাবিক ও পর্যাপ্ত পরিমাণে রয়েছে। কিন্তু একটি কুচক্রি মহল লবণের দাম নিয়ে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে যে লবণের দাম অনেক বৃদ্ধি হবে। এই গুজবে কান দিয়ে শহরের বাজারগুলোতে অতিরিক্ত মূল্যে লবণ বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা।
গতকালও যে লবণ ৩৫ টাকা কেজি মূল্যে বিক্রি হয়েছে; অথচ আজকে বাজারগুলোতে ১০০ থেকে ২০০ টাকা কেজিতে লবণ বিক্রি হচ্ছে। এমন অভিযোগ পেয়ে শহরের কালিবাড়ি ও পুরতান বাসষ্ট্যান্ড বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হয়। এসময় কালিবাড়ি বাজার থেকে মাসুদ রানা ও পুরাতন বাসষ্টান্ড বাজার থেকে রফিকুল ইসলামকে আটক করা হয়। আটক দুইজন ব্যক্তি ৩৫ টাকার লবণ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছিল।
কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, কিছুদিন আগে একটি কুচক্রি মহল সিন্ডিকেট তৈরি করে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি করেছিল। এখন তারাই আবার লবনের দাম বৃদ্ধির জন্য গুজব ছড়াচ্ছে। যারা এসব কাজের সাথে জড়িত আছে তাদেরকে চিহ্নিত করা হবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
আটক দুইজনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানান জেলা প্রশাসক কামরুজ্জামান সেলিম।
এদিকে পুলিশ সুপার মোহা.মনিরুজ্জামান জেলার যে কোনো স্থানে লবণের দাম বাড়ানোর যে কোনো খবর পুলিশকে অবগত করার জন্য মাইকিং করেছেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন। সদর থানার ওসি আশিকুর রহমান বলেন, সদর উপজেলার প্রত্যেকটি হাট-বাজারে পুলিশের মোবাইল টিম কাজ করছে। পাশাপাশি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে প্রত্যেকটি হাট বাজারে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা বাজার মনিটরিং করার জন্য মাঠে নেমেছে। যারা ক্রেতাদের কাছে অতিরিক্ত মূল্যে লবণ বিক্রি করবে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কালিবাড়ি বাজারের ক্রেতা আব্দুর রহমান বলেন, সকালে বাজারে এসে দেখি লবণ কেনার জন্য লাইন ধরেছেন ক্রেতারা , একেকজন দাম বাড়ার ভয়ে ১০ কেজি/২০ কেজি কিনছেন। আমি রিকশাচালক, অতো টাকা পাবো কই , আমি ১ কেজিই কিনি । আশ্রমপাড়ার গৃহবধু শাহানা জানান, ৩৫ টাকার লবণ যদি ১০০ টাকায় কিনতে হয় , তাহলে আমাদের পেঁয়াজের মতো লবণ ছাড়াই খেতে হবে, সেটা হবে পেঁয়াজের চাইতেও বড় সংকট। কারণ লবণ পেঁয়াজের তুলনায় লবণ অনেক বেশি অপরিহার্য। ব্যবসায়ীদের অসাধু সিন্ডিকেট কঠোর ভাবে দমন করার জন্য সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ক্রেতারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন