শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

শীতলক্ষ্যা যেন ময়লার ভাগাড়

মো. খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২০, ১২:০১ এএম

নারায়ণগঞ্জের মধ্যভাগে প্রবাহমান শীতলক্ষ্যা যেন ময়লার ভাগাড়। নদীর দুই তীরের হাট-বাজার, কলকারখানা ও মানববর্জ্য প্রকাশ্যেই ফেলা হচ্ছে নদীতে। সবচেয়ে ভয়াবহ পরিবেশ রূপগঞ্জের কাঞ্চন পৌর এলাকায়।
স্থানীয়রা জানান, শিল্প কারখানা, হাট-বাজারের সৃষ্ট ময়লা-আবর্জনা সরাসরি নদীর তীরে রাখা হয়েছে। এসব ময়লা গড়িয়ে পড়ছে নদীতে।এতে রূপ নিয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। রাত হলেই এসব ময়লা বেকু দিয়ে নদীতে ফেলা হয় বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।এতে নদীর পরিবেশ ধ্বংস হচ্ছে। হুমকির মুখে পড়েছে নদীর জীব বৈচিত্র্য। এসব ময়লার কারণে নদীর পঁচা দুর্গন্ধযুক্ত পানির জন্য আশপাশের মানুষ অতিষ্ট। সরকার রাজধানীর আশপাশের নদী রক্ষার উদ্যোগ গ্রহণ করে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করলেও অস্থায়ী ময়লার ভাগাড় সরানোর ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেননি। তাই নদী তীরের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে প্রতিনিয়ত।
স্থানীয় বাসিন্দা আছমা আক্তার রূপা বলেন, শিশুদের বিদ্যালয়ে নেয়ার জন্য প্রতিদিন নদী পারাপারের সময় পঁচা পানির দুর্গন্ধে বিরক্ত হই। কাঞ্চন খেয়া ঘাটের পাশে ময়লার ভাগাড় থাকায় অবস্থা আরো শোচনীয়। কাঞ্চন ভারত চন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা আমেনা আক্তার লিপি বলেন, এক সময় শীতলক্ষ্যার পানি লোকজন পান করতেন। এখন পান করা তো দূরের কথা নদী পারে দাঁড়ানোই যায় না। স্থানীয় বাসিন্দা জুলহাস মিয়া বলেন, কাঞ্চন বাজার-পিতলগঞ্জ খেয়া ঘাটে প্রকাশ্যে ময়লার ভাগাড় রয়েছে। হাজারো লোকের চলাচলে অসুবিধা ও নদীর সর্বনাশ ঘটাচ্ছে একটি পক্ষ। তাই নদী রক্ষায় জরুরি উদ্যোগ প্রয়োজন।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার মুড়াপাড়া বাজার, তারাবো বাজার, ডেমরার চনপাড়া, বেলদী বাজার, আতলাপুর বাজারসহ নদী তীরের হাট-বাজারের সকল আবর্জনা ফেলার স্থান হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে শীতলক্ষ্যাকে। একইভাবে নদী তীরের শিল্পকারখানার বর্জ্য ফেলা হচ্ছে নদীতে।
উপজেলার মুড়াপাড়ার ক্রিস্টাল সল্ট কারখানা লবনের খাঁদ ফেলে মিঠা নদীর পানি লবনাক্ত করে তুলছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জেলেরা। আগের তুলনায় মাছ না পেয়ে অতি কষ্টে জীবিকা নির্বাহ করছে। অভিযোগ রয়েছে ইটিপি প্ল্যান বাস্তবায়ন না করায় এ সমস্যা বেড়েই চলছে।
রূপগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি লায়ন মীর আব্দুল আলীম বলেন, নদীর বাঁচাও আন্দোলনের মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে নদীরক্ষার জন্য নানা সচেতনমূলক কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে আসছি। তথাপিও একটি পক্ষ জোড় করেই নদীকে ময়লার ভাগাড়ে পরিণত করছে। যা মেনে নেয়া যায় না। নদীমাতৃক এ দেশ রক্ষায় নদীরক্ষার বিকল্প নাই।
এ বিষয়ে কাঞ্চন পৌর মেয়র রফিকুল ইসলাম রফিক বলেন, কাঞ্চন বাজারের ময়লা ফেলার জন্য নতুন স্থান তৈরির চেষ্টা করছি। কোন অবস্থাতেই ময়লা ফেলতে দেয়া হবে না। নদী রক্ষায় প্রশাসনকে সহযোগিতা করা হবে।
রূপগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মমতাজ বেগম বলেন, নদীরক্ষায় ইতোমধ্যে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়েছে। ময়লার ভাগাড় বিষয়ে জানলাম।
সংশ্লিষ্ট শিল্প কারখানা মালিক, জনপ্রতিনিধিদের তা সরিয়ে নিতে নোটিশ করা হয়েছে। এরপরও কোন পক্ষ এমন কাজে জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
ash ৩ মার্চ, ২০২০, ২:২৪ এএম says : 0
HAY RE BANGLADESH !!! BANGLADESEHR WNNOTI HOCHE ???
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন