স্বাধীনতা
শাহীন রেজা
পালক ছুঁয়ে নেমে আসছে কিছু রোদ
পাখিটা উড়ছে
তার ছায়ার নীচে ঘন হচ্ছে সকল নদী; সব পথ
মুছে যাচ্ছে সীমান্ত রেখা
চোখে চোখ রেখে একই ঈশ্বর-ধ্বনি মন্ত্রমুগ্ধের মতো
জপছে মানুষ বৃক্ষ এবং সকল প্রাণীকূল
পাখিটা উড়ছে
তার পাখায় লেগে থাকা পবিত্র রোদ
গ্রাস করছে পৃথিবীকে
পাখিটা উড়ছে...
এখানে সীমান্ত
সাজ্জাদুর রহমান
তোমার নামে অরণ্য সাজাই।
চারদিকে ঘন-সবুজ মাঝারি গাছের বেষ্টনে
মধ্যবর্তী আলোক ফলকে তোমাকে দাঁড় করাই
তুমি বিরাটকায় দাঁড়িয়ে থাকো আলোকিত বাংলো।
তোমার চারপাশে সহাস্য পত্রগুচ্ছ কুর্নিশ করে
আনত শ্রদ্ধায়-
সীমান্তে তোমার ওষ্ঠের চুম্বন আকাশে ওড়ায় ধুমকেতু
পালাবদলের ঋতুগুলো নিয়ে আসে একেকটি যুগ
তুমি সেজে ওঠো-
তোমার গৃহপলব বিস্তাত শাখার সমস্ত ফুলে হাজার পৃথিবীর মমতা ঝুলে থাকে।
আমি সেই পৃথিবীর উদাস রাখাল বালক
আমার মোহন বাঁশিতে তোমার চুম্বনের সুর তুলি
আমার বুকপকেটে ভিজিয়ে রাখি শেষরাতের মধুরতম বিশ্বাস।
হে আমার শ্রেষ্ঠ বিকেল
আমার প্রাণের সবুজ মাঠ, কব্জিতে বাধা দৃঢ় প্রত্যয়
তোমার কন্ঠধ্বনিত সেই ডাক
যুগান্তরে উজ্জীবিত করে রক্ত-মশাল!
সম্পর্কের সরল ইচ্ছেগুলো ঘরমুখী হোক
সালাম তাসির
তোমাকে যা বলেছি তাই সত্য
ভালোবাসার গতি মন্থর হলে
বিষণ্নতায় থমকে যায় পৃথিবী।
আতঙ্কে সংকোচিত হয় মানব হৃদয়
জীবনের অনিবার্য পরিনতিকে সত্য মানি
তবুও মৃত্যু ভয়ে আমরা ভালোবাসাহীন হয়ে যাই।
জল স্থল আকাশ পথ রুদ্ধ হলে
অচল পয়সার মতো হাত বদল হবে না হাতের স্পর্শ।
সম্পর্কের সরল ইচ্ছেগুলো ঘরমুখী হবে
স্বেচ্ছায় সঙ্গনিরোধ পরিপত্রে স্বাক্ষর করে
আমরা নিজের মধ্যে নিজেকে লুকিয়ে রাখি
সৌজন্যবোধে কৃপণতা কেবল সময়ের প্রয়োজনে।
এ কেমন যুদ্ধ বলো
যে যুদ্ধে নেই কোন অস্ত্রের ঝনঝনানি
অথচ এক অদৃশ্য শক্তির কাছে
গোটা বিশ্ব শংকিত, আতংকিত
পৃথিবীর সব শক্তি এখন এক বিন্দুতে
কেউ কারো শত্রু নই তবুও...
মৃত্যুর মিছিলে লাশের লাইন দীর্ঘ হচ্ছে প্রতিদিন।
গুজব নয় আতঙ্কে সাহসী হই
মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আর একবার মননে বিপ্লবী হই।
মনের শক্তিকে অস্ত্র করে করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি।
মাস্ককে ভালোবেসে নিজেকে নিজের কাছে আড়াল করি
নিজের হাত দুটোকে বন্ধু নয়
অন্যের হাতকে পুরনো শত্রু ভেবেই ভালোবাসি।
প্রতিশেধক নয়, প্রতিরোধে সচেতন হই
আমরা বাঁচতে চাই, বাঁচাতেও।
এক মহা কাব্য
এস এম রাকিব
ছায়া সুনিবিড় বাংলা- ধু ধু প্রান্তর
মায়ের কোল জুড়ে এল একটি শিশু,
আবিস্কারের নেশায় উত্তাল-
আর ছল ছল দুটি চোখ।
তার নিস্পাপ মানসপটে একটি ছবির আত্মপ্রকাশ।
তবে কি সে শিল্পী, বিজ্ঞানী নাকি কবি?
না, সে তো নিজেই এক মহৎ কবিতা।
হামাগুড়ি দিয়ে বজ্রমুষ্টিতে ধরা জানালার গ্রিল
হাটি হাটি পা পা,
সেই তো শুরু, শেখ মুজিব তোমার চিৎকার
মা মাটি মা মা।
বন্ধুর পথ দুর্নিবার পথচলা, প্রতিটা মুহূর্তে এঁকে যাওয়া এক সপ্নিল আকাশ, সবুজ প্রান্তর।
তবে কি তুমি রঙতুলি আর ক্যানভাসে সজ্জিত কোন শিল্পী?
তুমি কি লিওনার্দো?
ভ্যানগগ?
রাফায়ল?
নাকি পাবলো পিকাসো?
না, তুমি শেখ মুজিব-
তোমার একটাই সৃষ্টি- একটাই ছবি
বাংলাদেশ।
তোমার বজ্রকন্ঠ লালিত ভাষার ঝংকার
মহাকাব্যিক উন্মাদনা,
হিরোশিমা আর নাগাসাকির ফেটে পড়া উচ্ছাস
৭ই মার্চের জনসমুদ্রে তোমার
পারমানবিক কবিতা পাঠ। অথচ তুমি কোন কবি নও, তুমি শেখ মুজিব
তুমি নিজেই এক সমগ্র কবিতা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন