করোনা পরবর্তি লা লিগায় নিজেদের প্রথম ম্যাচে শুরুটা দুর্দান্ত হলেও দ্বিতীয়ার্ধে পুরোপুরি ছন্দ হারিয়ে ফেলেছিল রিয়াল মাদ্রিদ। এক ম্যাচ পরই যেন নিজেদের খুঁজে পেল স্প্যানিশ জায়ান্টরা। ভ্যালেন্সিয়ার বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয় পেয়েছে আসরের সবচেয়ে সফল দলটি।
গতপরশু রাতে অনুশীলন ভেন্যু আলফ্রেদো ডি স্টেফানো স্টেডিয়ামে নিজেদের মাঠে এ জয়ে টেবিলের শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান কমাল রিয়াল। প্রথমার্ধে গোলশূন্য থাকার পর ম্যাচের ৬১ মিনিটে এসে গোলখরা কাটায় রিয়াল। ভ্যালেন্সিয়ার বুকে প্রথম ছুরি চালান বেনজেমা। মাঝমাঠে ভ্যালেন্সিয়ার খেলোয়াড়েরা বল হারালে দখল নেন মডরিচ। তার বাড়ানো বল বেনজেমার দিকে ঠেলে দেন হ্যাজার্ড। ক্লিনিক্যাল ফিনিশিংয়ে বল ঠিকানামতো পাঠান বেনজেমা।
ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ইনজুরির কারণে মৌসুমে যার খেলার কোনো সম্ভাবনাই ছিল না, সেই মার্কো আসেনসিও নেমে প্রথম স্পর্শেই পেলেন জালের দেখা। ৭৪তম মিনিটে ভালভার্দেকে তুলে অ্যাসেনসিওকে নামান রিয়ালবস জিদান। মাঠে নেমে প্রথম ছোঁয়াতেই বল জালে জড়ান রিয়াল মাদ্রিদের স্প্যানিশ এই ফরোয়ার্ড।
৮৬ মিনিটে দলের তিন নম্বর গোলেও অবদান এই বদলি খেলোয়াড়ের। ডান দিক থেকে আসেনসিওর উঁচু করে বাড়ানো বল প্রথম ছোঁয়ায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জোরালো ভলিতে আসরে নিজের ১৬তম গোলটি করেন বেনজেমা। ডিসেম্বরে লিগে প্রথম দেখায় ভালেন্সিয়ার মাঠে পিছিয়ে পড়া রিয়াল যোগ করা সময়ের পঞ্চম মিনিটে এই ফরাসি ফরোয়ার্ডের গোলেই হার এড়িয়েছিল। এবার দলকে এনে দিলেন পুরো ৩ পয়েন্ট।
এই জোড়া গোলে রিয়ালের হয়ে ইতিহাসের সর্বোচ্চ গোল করাদের তালিকায় পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছেন করিম বেনজেমা। ফরাসি এই স্ট্রাইকার ছাড়িয়ে গেছেন কিংবদন্তি ফেরেঙ্ক পুসকাসকে। মাদ্রিদের দলটির হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলে ৩২ বছর বয়সী এই স্ট্রাইকারের গোল হলো ২৪৩টি। ১৯৫৮ থেকে ১৯৬৬ সাল পর্যন্ত রিয়ালের জার্সিতে ২৪২ গোল করেছিলেন সাবেক হাঙ্গেরিয়ান ফরোয়ার্ড পুসকাস। পুসকাস অবশ্য গোলগুলো করেছিলেন মাত্র ২৬২ ম্যাচে। তাকে ছাড়াতে বেনজেমার লাগল প্রায় দিগুণ ম্যাচ, ৫০৩টি। ৪৫০ গোল নিয়ে সবার ওপরে আছেন ২০১৮ সালে রিয়াল ছেড়ে জুভেন্টাসে যোগ দেওয়া ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। পরের তিনটি স্থানে যথাক্রমে রাউল গঞ্জালেস (৩২৩), আলফ্রেদো দি স্টেফানো (৩০৮) ও সান্তিয়ানা (২৯০)।
বেনজেমা বরাবরই খেলছিলেন ভালো, কিন্তু গোল পাচ্ছিলেন না তেমন। আগের ১২ ম্যাচে যেমন তার গোল ছিল মাত্র দুটি। এবার দারুণ কিছুর সম্ভাবনা জাগল। আর আসেনসিওর ফেরা যেন রূপকথা। মৌসুম শুরুর আগে চোট পেয়েছিলেন। করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে খেলা বন্ধ না থাকলে হয়তো তার জীবন থেকে হারিয়ে যেত গোটা মৌসুম। সেই তিনি মৌসুমে প্রথমবার মাঠে নামাটা রাঙালেন গোল করে ও অবদান রেখে। এ জয়ে ২৯ ম্যাচ খেলে রিয়াল মাদ্রিদের পয়েন্ট ৬২। টেবিলের দুই নম্বরে থাকা রিয়ালের সঙ্গে শীর্ষে থাকা বার্সেলোনার পয়েন্টের ব্যবধান ২।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন