এ সময়ে শিশুদের ডায়রিয়ায় অক্রান্ত হবার সম্ভাবনা বড়দের চেয়ে বেশী। শিশুর ডায়রিয়ার বিভিন্ন কারণ আছে। পানি ও খাবার বাহিত জীবাণুর মাধ্যমেই শিশুদের ডায়রিয়াগুলি হয়। এর মধ্যে ভাইরাস জনিত কারনে শতকরা ৮০ ভাগ ডায়রিয়া হয়ে থাকে। রোটা ভাইরাস দিয়েই শিশুদের সবচেয়ে বেশী ডায়রিয়া হয়ে থাকে। শিশুর ডায়রিয়া হলে অনেকে নিজে নিজে বা দোকানদারের পরামর্শে এন্টিবায়োটিক খাওয়ান। অনেক চিকিৎসকও অনেক সময় এন্টিবায়োটিক দেন। এন্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করতে পারলেও ভাইরাস মারতে পারেনা। এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার হয় এক্ষেত্রে। ডায়রিয়ায় পানিশূন্যতা হয়। এই পানিশূন্যতা পূরণ করার জন্য ঘন ঘন খাবার স্যালাইন খাওয়াতে হবে। পানিশূন্যতা বেশি হলে এবং মুখে স্যালাইন না খেতে পারলে হাসপাতালে ভর্তি করে শিরাপথে স্যালাইন দিয়ে পানিশূন্যতা পূরণ করতে হবে। এটাই সঠিক চিকিৎসা। পাশাপাশি স্বাভাবিক খাবারও খাওয়াতে হবে।
ডায়রিয়া প্রতিরোধে কয়েকটি বিষয় অবশ্যই মেনে চলতে হবে। এর ফলে ডায়রিয়ার প্রকোপ অনেক কমে যাবে। পরিবারের সবাইকে ভালোমতো হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। বিশেষত খাওয়ার আগে, শিশুকে খাওয়ানোর আগে, পায়খানা করার পর, শিশুর পায়খানা পরিষ্কার করার পর অবশ্যই হাত ধুতে হবে। রান্না করার আগে অবশ্যই সাবান এবং পরিষ্কার পানি দিয়ে হাত ধুতে হবে।
সাধারণত টিউবওয়েলের পানি এবং ফোটানো পানি নিরাপদ। টিউবওয়েলের কাছে মলমূত্র ত্যাগ করতে দেওয়া যাবে না। পায়খানা অবশ্যই টিউবওয়েল থেকে দূরে ও নিচুতে হতে হবে। সবসময় পরিষ্কার পাত্রে পানি সংগ্রহ করা উচিত। এই বর্ষায় কষ্ট হলেও খাওয়ার ও রান্নার কাজে নিরাপদ পানি ব্যবহার করতে হবে। শিশুর নখ নিয়মিত কাটতে হবে। প্রতিদিন পরিষ্কার পানিতে গোসল করালে শিশু অনেক সুস্থ থাকে। জন্মের প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত শিশুকে শুধু বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত। বুকের দুধ খাওয়ালে শিশুর ডায়রিয়া হয় না, কারণ বুকের দুধ বিভিন্ন শিশুরোগ প্রতিরোধকারী। বোতলে দুধ খাওয়ালে শিশুর ডায়রিয়া বেশি হয়। কারণ বোতল সব সময় পরিষ্কার রাখা কখনোই সম্ভব নয়। তবে ছয় মাস বয়স হওয়ার পর থেকে শিশুকে বুকের দুধের পাশাপাশি অন্যান্য খাবার দেয়া যেতে পারে। প্রতিবছর ডায়রিয়ায় অনেক শিশু মারা যায়। তাই ডায়রিয়া প্রতিরোধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।
মোঃ ফজলুল কবির পাভেল
পাবনা মেডিকেল কলেজ, পাবনা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন