শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ ইসলাম

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম : যাঁকে ভালোবাসা ছাড়া মুমিন হওয়া যায় না-১

মাওলানা আব্দুল মালেক | প্রকাশের সময় : ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ১২:০১ এএম

ঈমানের এক গুরুত্বপূর্ণ শাখা, আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর মহব্বত। অর্থাৎ একজন মুমিনকে যেসব বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হতে হয় এবং যা ছাড়া কেউ মুমিন হতে পারে না- নবীর প্রতি ভালোবাসা অন্যতম। হাদীস শরীফে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন- তোমরা কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হবে না, যতক্ষণ আমি তার কাছে তার বাবা, তার সন্তান ও সকল মানুষের চেয়ে প্রিয় না হব। (সহীহ বুখারী : ১৫)।

নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ভালোবাসা একটি মানদন্ড, এই মানদন্ডের দ্বারা প্রত্যেকে নিজ নিজ ঈমান যাচাই করে নিতে পারেন। অন্তরে যদি তাঁর প্রতি মহব্বত ও ভালোবাসা অনুভব করেন তাহলে আনন্দিত হোন; আল্লাহতাআলা আপনাকে ঈমানের একটি বৈশিষ্ট্য দান করেছেন। অন্যথায় নিজের ব্যাপারে সতর্ক হোন; এখনও সতর্ক হওয়ার ও সংশোধন হওয়ার সময় আছে।

মুমিন কি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে না ভালোবেসে পারে? যাঁর মাধ্যমে মানবজাতি পেল ঈমান ও কোরআনের মতো মহাসম্পদ, লাভ করল মুমিন হওয়ার মহাসৌভাগ্য, যিনি আমাদের দেখালেন ইহকাল-পরকালের শান্তির পথ, সেই পথ দেখাতে গিয়ে যাঁর রক্ত ঝরল, দান্দান মোবারক শহীদ হলো, এরপরও আল্লাহর দরবারে উম্মতের নাজাত ও হেদায়েত প্রার্থনা করে অশ্রু ঝরালেন- তাঁকে তো ভালোবাসতেই হবে।

যিনি মানুষকে দিলেন মনুষ্যত্বের পাঠ, মাটির মানুষকে পরিচিত করলেন তার আসমানী মর্যাদার সাথে, তার সামনে উন্মুক্ত করলেন বিশ্বাস ও কর্মের এক উন্নত জগৎ, উন্মোচিত করলেন প্রবৃত্তির দাসত্ব থেকে মুক্ত হয়ে বিশ্বাস ও চেতনার, চরিত্র ও নৈতিকতার আকাশসম উচ্চতায় উড্ডয়নের সুপ্ত সম্ভাবনার দুয়ার। এককথায় যিনি মানবকে দেখালেন তার মানব-জন্ম সার্থক হওয়ার পথ- তাঁকে তো ভালোবাসতেই হবে। তাঁকে ভালোবাসা ছাড়া ও তাঁর অপরিশোধ্য ঋণ স্বীকার করা ছাড়া আমরা সভ্য মানুষ কীভাবে হব?

ঈমান আমাদের সভ্য-সুশীল মানুষ হওয়ার শিক্ষা দান করে। ঈমান আমাদের ঐসকল গুণ ও বৈশিষ্ট্যের অধিকারী হতে বলে, যা ছাড়া কেউ সভ্য-সজ্জন হতে পারে না, সর্বাঙ্গসুন্দর হতে পারে না। আর একারণেই ঈমানের শিক্ষা বিস্তারের আজ অতি প্রয়োজন।

ঈমানের শিক্ষায় মানুষ পরিশুদ্ধ হয়, পরিশীলিত হয়। তার চিন্তা-ভাবনা, আবেগ-অনুভূতি, উদ্যম-উদ্দীপনা সঠিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। তার যোগ্যতা ও সক্ষমতা তাকে সঠিক গন্তব্যের দিকে পরিচালিত করে।

মানুষের আবেগ-অনুভূতিও তার এক শক্তি। এই শক্তি সঠিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হলে এর দ্বারা ‘অসাধ্য’ সাধন হতে পারে। অন্যদিকে ভুল ক্ষেত্রে এর প্রয়োগ সমাজকে অবক্ষয়-অরাজকতার নরকে পরিণত করতে পারে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (8)
Omar Faruq ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:০৮ এএম says : 0
আমরা ছিলাম পথহারা, দিশেহারা। হেদায়াত ও সফলতার পথ সম্পর্কে ছিলাম অজ্ঞ। অতপর মহান রাব্বুল আলামীন হেদায়েতের বার্তা দিয়ে প্রেরণ করলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে। তিনি এসে আমাদেরকে সত্য-মিথ্যা চিনিয়েছেন। আমাদের নিকট সত্য দ্বীন নিয়ে এসেছেন। নাজাতের পথ দেখিয়েছেন। আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের পন্থা শিখিয়েছেন। এ ছিল আমাদের প্রতি আল্লাহর মহা অনুগ্রহ।
Total Reply(0)
তরুন সাকা চৌধুরী ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:০৮ এএম says : 0
আল্লাহ মুমিনদের প্রতি বড় অনুগ্রহ করেছেন; তিনি তাদেরই নিজেদের মধ্য হতে তাদের নিকট রাসূল প্রেরণ করেছেন। যিনি তাদের সামনে আল্লাহর আয়াতসমূহ তিলাওয়াত করেন, তাদেরকে পরিশুদ্ধ করেন এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমাহ শিক্ষা দেন, যদিও তারা এর আগে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত ছিল। Ñসূরা আলে ইমরান (৩) : ১৬৪
Total Reply(0)
মোহাম্মদ কাজী নুর আলম ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:০৯ এএম says : 0
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমনিভাবে নবীগণের সর্দার তেমনিভাবে মানুষ গড়ার কারিগর হিসেবেও তিনি সকলের চেয়ে মহান। তিনি এমন এক উৎকৃষ্ট সমাজ রেখে গেছেন, যার নজীর পৃথিবীর ইতিহাসে নেই
Total Reply(0)
বারেক হোসাইন আপন ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:১০ এএম says : 0
মুমিনের জীবনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রতি মহব্বতের গুরুত্ব অপরিসীম। মহব্বতে রাসূল তো ঈমানের রূহ, মুমিনের জীবনের অন্যতম লক্ষ্য। এই ইশ্ক ও মহব্বত ছাড়া না ঈমানের পূর্ণতা আসে, আর না তার স্বাদ অনুভূত হয়।
Total Reply(0)
জাবের পিনটু ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:১০ এএম says : 0
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমাদের কেউ ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার নিকট তার পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সমস্ত মানুষ থেকে প্রিয় হব। Ñসহীহ বুখারী, হাদীস ১৫
Total Reply(0)
বাতি ঘর ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:১১ এএম says : 0
আল্লাহ ও আল্লাহ্র রাসূলের ভালোবাসা যদি সবকিছুর উপরে না হয় তাহলে মুমিন পথ চলবে কীভাবে? আল্লাহ ও আল্লাহ্র রাসূলের আদেশের সামনে সমর্পিত হবে কীভাবে?
Total Reply(0)
হিমেল ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:১১ এএম says : 0
মুমিনের সবচে বড় দৌলত ঈমান। এই মহা দৌলতের স্বাদ যার নসীব হয়, সমস্ত দুঃখ কষ্ট তার কাছে তুচ্ছ মনে হয়।
Total Reply(0)
তাসফিয়া আসিফা ১৬ অক্টোবর, ২০২০, ৩:১২ এএম says : 0
ভালবাসার সারকথাই হচ্ছে, আমি যাকে ভালবাসি তাঁর চিন্তা-চেতনা, চাওয়া-পাওয়ার সাথে একাত্ম থাকা।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন