কুষ্টিয়া চিনিকলে গত মৌসুমে উৎপাদিত ২১ কোটি টাকার অবিক্রীত চিনি ও চিটাগুড় গোডাউনে পড়ে আছে। দীর্ঘকাল চিনি স্তূপাকারে পড়ে থাকায় আদ্রতা বেড়ে সিংহভাগ চিনির গুণমান নষ্ট হচ্ছে। চিনি বিক্রি করতে না পারায় মিলের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বকেয়া বেতন ভাতাসহ আনুষঙ্গিক খরচ মেটানো সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া আখ চাষিদের বকেয়া কয়েক কোটি টাকা এখনো পরিশোধ করা হয়নি।
সরেজমিন ঘুরে জানা যায়, ২০১৯-২০ আখ মাড়াই মৌসুমে মোট উৎপাদিত চিনির মধ্যে বর্তমানে ২ হাজার ২৬ মেট্রিক টন চিনি ও ২ হাজার ৩৯৬ মেট্রিক টন অবিক্রীত চিটাগুড় মিলের গোডাউনে মজুত রয়েছে। অবিক্রীত ঐ চিনির বাজার মূল্য ১৬ কোটি ৩৬ লাখ টাকা এবং চিটাগুড়ের বাজার মূল্য প্রায় ৫ কোটি টাকা।
এদিকে আগামী ডিসেম্বর মাসের শেষদিকেই শুরু হচ্ছে ২০-২১ মাড়াই মৌসুম। ফলে আসন্ন মৌসুমে উৎপাদিত নতুন করে গুদামজাত করতে গোডাউনে সংরক্ষিত গত মৌসুমের চিনি বিক্রি জরুরি হলেও ক্রেতার অভাবে কর্তৃপক্ষ তা বিক্রি করতে পারছে না। মিলের ডিলাররাও চিনি উত্তোলন করছেন না। কুষ্টিয়া চিনিকলে উৎপাদিত চিনি সংরক্ষণের জন্য ৬৫০ মেট্রিক টন ধারণ ক্ষমতাসম্পন্ন দুইটি গোডাউন রয়েছে। এছাড়া ২০১৯-২০ মাড়াই মৌসুমের উৎপাদিত চিনি দীর্ঘকাল গোডাউনে পড়ে থাকায় চিনির আদ্রতা বেড়ে গুণমান খর্ব হচ্ছে। মিলের শ্রমিক-কর্মচারিরা জানান, ভ্রান্ত নীতির কারণেই কুষ্টিয়াসহ দেশের অন্যান্য চিনিকলে উৎপাদিত উৎকৃষ্ট মানের চিনি বিক্রি হচ্ছে না। মিলের ডিলাররাও দেশীয় চিনির পরিবর্তে আমদানিকৃত চিনির দিকেই ঝুঁকছেন। চাষিদের আখ বিক্রির ৩ কোটি ২০ লাখ এখনো বকেয়া রয়েছে। ফলে চাষিরা আখ চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন।
চিনিকল আখ চাষি কল্যাণ সমিতির সদস্য আব্দুর রহিম বলেন, নানা জটিলতা ও প্রতিবন্ধকতার কারণে চাষিরা আখ চাষে উৎসাহ হারাচ্ছে। মিলজোন এলাকায় আগের তুলনায় আখ চাষ কমেছে বলেও তিনি জানান। চাষ কমে যাওয়ায় মাড়াই মৌসুমে মিলে আখের যোগান কমছে। ফলে দেশীয় চিনির উৎপাদনও হ্রাস পাচ্ছে। মিলের ভারপ্রাপ্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. রাকিবুর রহমান খান বলেন, অবিক্রীত চিনি ও চিটাগুড় বিক্রির চেষ্টা চলছে। অতি অল্প সময়ের মধ্যেই এ সমস্যা নিরসন হবে বলে তিনি জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন