দ্বিতীয় সপ্তাহে পড়েছে মাঘ মাস। তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটছে। ভরা শীতের মওসুম অনুযায়ী স্বাভাবিকের তুলনায় বেশিই রয়েছে রাত ও দিনের তাপমাত্রা। নেই শৈত্যপ্রবাহ। তবে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা এবং উত্তর দিক থেকে কনকনে হিমেল হাওয়ায় রাত থেকে সকাল অবধি শীতের কাঁপন অব্যাহত রয়েছে। এদিকে ঘন কুয়াশার কারণে গতকাল শুক্রবার সকালে নির্ধারিত দু’টি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট ঢাকার পরিবর্তে চট্টগ্রামে অবতরণ করে। অবশ্য পরে ঢাকায় ফিরে যায়।
গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায় ৯.৬ এবং সর্বোচ্চ সীতাকুন্ডে ২৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার পারদ সর্বোচ্চ ২৩.৬ এবং সর্বনিম্ন ১৪.৪ ডিগ্রি সে.। আজ শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার পুর্বাভাসে জানা গেছে, সারাদেশে রাতের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস এবং দিনের তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পেতে পারে। অস্থায়ীভাবে আকাশ আংশিক মেঘলাসহ আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত দেশের নদী অববাহিকায় মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। দেশের অন্যত্র হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা অব্যাহত থাকবে।
পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় আবহাওয়ায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। এরপরের ৫ দিনে রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেতে পারে। ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে গতকাল সকালে নির্ধারিত দু’টি ফ্লাইট অবতরণ করতে না পেরে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। শুক্রবার সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে কুয়ালালামপুর থেকে আসা ইউএস বাংলার ফ্লাইট কুয়াশার কারণে ঢাকায় নামতে না পেরে চট্টগ্রামে নামে। আবার সোয়া ৯টায় ওমান ছেড়ে আসা ইউএস বাংলার আরেকটি ফ্লাইটও নামে চট্টগ্রামে। ঘন কুয়াশা কেটে গেলে উভয় ফ্লাইট দুপুর নাগাদ ঢাকায় ফিরেছে। তাছাড়া ঘন কুয়াশার কারণে ঢাকা থেকে অভ্যন্তরীণ দু’টি ফ্লাইটের চট্টগ্রামে আসা বিলম্বিত হয়।
চরম দুর্ভোগ কুড়িগ্রামে
কুড়িগ্রাম জেলা সংবাদদাতা জানান : কুড়িগ্রামে শীতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন এ জেলার মানুষ। ঘন-কুয়াশার সাথে হিমেল হওয়ার কারণে এসব মানুষ নাজেহাল হয়ে পড়েছেন। হিমেল হাওয়ায় কষ্ট আরো বেড়েছে। দুপুর গড়িয়ে গেলেও অধিকাংশ সময়ে সূর্যের আলো দেখা যায় না। দিনের বেলায়ও হেড লাইট জ্বালিয়ে দূরপাল্লাসহ বিভিন্ন যান চলাচল করতে হয়। প্রচন্ড ঠান্ডায় ঘর থেকে বের হওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে।
এদিকে, হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। শিশু ও বৃদ্ধরা আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ নানা শীতজনিত রোগে।প্রতিদিন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসমূহেও বাড়ছে রোগীর সংখ্যা।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. পুলক কুমার সরকার জানান, গত ২৪ ঘন্টায় কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে নিমোনিয়ায় ১২ জন শিশু, ডায়রিয়ায় ২৭জন, এবং শিশু ওয়ার্ডে ৬১ শিশু চিকিৎসা নিচ্ছে এবং আউটডোরে প্রতিদিন ৭০০ থেকে ৮০০জন রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে।। এছাড়াও জেলার বাইরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিমোনিয়ায় ১২ জন শিশু, ডায়রিয়ায় ২১জন আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক রেজাউল করিম জানান, জেলার ৯ উপজেলায় ও ৩টি পৌরসভায় শীতার্তদের জন্য ৩৫ হাজার কম্বল, শীত বস্ত্র কেনার জন্য ৬৪ লাখ টাকা বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও ৯ হাজার শুকনো খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। প্যাকেটের মধ্যে ১০ কেজি চাল, ১কেজি ডাল, ১লিটার তেল,১কেজি লবন, ১কেজি চিড়া, ১কেজি চিনি ও আধা কেজি লবন ছিল। গতকাল শুক্রবার স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘন্টায় জেলার তাপমাত্রা ১১ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন