শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

কুয়াশায় ফেরি চলাচল বিঘ্নিত

ভোগান্তিতে পড়েছেন চালক-যাত্রীরা

লৌহজং (মুন্সীগঞ্জ) ও আরিচা (মানিকগঞ্জ) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১১:৫৬ পিএম

ঘন কুয়াশার কারণে দেশের বিভিন্ন নৌরুটে ব্যাহত হচ্ছে ফেরি চলাচল। শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে রাতে বাড়ছে কুয়াশার তীব্রতা। দুর্ঘটনা এড়াতে বন্ধ রাখা হচ্ছে যানবাহন পারাপার। এতে ঘাটে আটকা পড়ছে যাত্রী ও পণ্যবাহী যান। দেখা দিচ্ছে যানজট। শীতের মধ্যে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রী ও চালকরা।
শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও মাঝিরকান্দি নৌরুটে ভোর ৪টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। টানা ৫ ঘণ্টা পর সকাল ৯টার দিকে ফেরি চলাচল আবার শুরু হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে কুয়াশার তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় ফেরি সার্ভিস বন্ধ রাখে ঘাট কর্তৃপক্ষ। পরে কুয়াশা কেটে গেলে পুনরায় ফেরি চলাচল স্বাভাবিক করা হয়। তবে দীর্ঘ সময় ফেরি বন্ধ থাকায় ঘাটে আটকা পড়ে শত শত যানবাহন, দুর্ভোগে পড়েন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীরা।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন বিআইডবিøউটিসি শিমুলিয়া ঘাটের উপব্যবস্থাপক (এজিএম) শফিকুল ইসলাম জানান, সন্ধ্যা রাত থেকেই কুয়াশা ছিলো। তবে ভোর রাতে কুয়াশার তীব্রতা বেড়ে যায়। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি সার্ভিস বন্ধের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভোর ৪টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। ৫ ঘণ্টা পর ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়। এ রুটে ৪টি কে-টাইপ (মিডিয়াম) ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। পাঁচ ঘণ্টা ফেরি বন্ধ থাকায় ঘাটের দুই পাড়ে প্রায় সহস্রাধিক যানবাহন আটকা পড়ে। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যানজটের জটলা কমে যায়। গত বুধবারও এ রুটে কুয়াশার কারণে ৩ ঘণ্টা ফেরি সার্ভিস বন্ধ ছিলো।

উল্লেখ্য, গত বছর নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে শিমুলিয়া ঘাট থেকে বাংলাবাজার ঘাটে সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত এবং একই মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে শিমুলিয়া ঘাট থেকে মাঝিরকান্দি নৌরুটে বিকেল ৩টা থেকে সকাল ৮টা পর্যন্ত ফেরি চলাচল শুরু হয়।
গত বছরের জুলাই ও আগস্ট মাসে চারবার পদ্মা সেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কা লাগে। ফলে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে টানা ৪৭ দিন ফেরি চলাচল বন্ধ রাখে কর্তৃপক্ষ। সেতুর পিলারে ফেরির ধাক্কার ঘটনায় ফেরির মাস্টারদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। দুর্ঘটনা এড়াতে গত বছর নভেম্বরের ৪ তারিখে এ নৌরুটে ৪টি মিডিয়াম ফেরিতে ছোট যানবাহন শুধু দিনের বেলা পারাপারের সিদ্ধান্ত নেয় বিআইডবিøউটিসি। সেই সাথে পদ্মা সেতু এড়িয়ে সোজাসুজি শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নতুন নৌরুটে রাতে ফেরি চলাচল শুরু করে।

এদিকে, ঘন কুয়াশার কারণে ৪ ঘণ্টার বেশি বন্ধ থাকার পর দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে ফেরি চলাচল ফের শুরু হয়েছে। কুয়াশার ঘনত্ব কমে যাওয়ায় সকাল সোয়া ৮টা থেকে পুনরায় ফেরি চলাচল শুরু হয়। এর আগে দুর্ঘটনা এড়াতে রাত ৪টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেয় ঘাট কর্তৃপক্ষ।
বিআইডবিøউটিসির দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক জামাল উদ্দিন বলেন, ‘রাতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথ ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে যায়। এ সময় ফেরির মার্কিং বাতির আলো অস্পষ্ট হয়ে পড়ে। তাই দুর্ঘটনা এড়াতে এ নৌপথে ফেরি চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়।

‘কুয়াশার ঘনত্ব কমে গেলে পুনরায় সকাল সোয়া ৮টা থেকে ফেরি চলাচল শুরু হয়েছে। সকাল থেকে ১৫টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে।’ আর দীর্ঘ সময় ফেরি পারের অপেক্ষায় আটকে থেকে ভোগান্তিতে পড়েছেন চালক ও যাত্রীরা। গোয়ালন্দ মোড়ে আটকে থাকা ট্রাকচালক বাহার উদ্দিন জানান, বুধবার দুপুর থেকে তিনি এখানে আটকে আছেন। সারারাত শীতে চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। তাছাড়া ওই এলাকায় বাথরুম ও খাবার হোটেল না থাকায় দুর্ভোগের শেষ নেই বলে জানান তিনি।

এদিকে চাঁদপুর থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানান, ঘন কুয়াশার কারণে শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিল। ঘাটে দেখা দেয় যানজট। দুর্ঘটনা এড়াতে রাত সাড়ে ৩টা থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
নরসিংহপুর ফেরিঘাটের ঘাট ব্যবস্থাপক আব্দুল মোমেন সাংবাদিকদের জানান, গত মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকেই কুয়াশার ঘনত্ব বেড়ে যায়। তাই ঝুঁকি এড়াতে শরীয়তপুর-চাঁদপুর নৌপথে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।
এই রুটে সাতটি ফেরি চলাচল করে। এই মুহূর্তে কোনো ফেরি নদীতে নোঙর করা অবস্থায় নেই। নরসিংহপুর ঘাটে চারটি ফেরি এবং হরিণাঘাটের ফেরি যানবাহন নিয়ে অবস্থান করছে। কুয়াশা কেটে গেলে ফেরিগুলো নদী পার হয়। নরসিংহপুর ফেরিঘাটে দেড় শতাধিক যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় ছিল।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন