বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ধর্ম দর্শন

জিজ্ঞাসার জবাব

প্রকাশের সময় : ১ সেপ্টেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

১। মোহাম্মাদ ফারহানুল বারী দাইয়্যান, মুনশী মঞ্জিল, রাজামেহার, কুমিল্লা।
জিজ্ঞাসা : যিকিরের মর্যাদা ও ফজিলত কি?
জবাব : হযরত আবু সা‘য়ীদ খুদরী (রাযি.) থেকে বর্ণিতÑ হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনÑ আল্লাহ্ তা‘আলার একদল ফেরেশতা রয়েছেন যারা পৃথিবীতে ঘুরে বেড়ান। তারা যখন একদল লোককে আল্লাহ্র যিকির করতে দেখেন তখন তারা পরস্পরকে বলেন, এসো! তোমাদের কাক্সিক্ষত বস্তুর দিকে। তারা সকলে চলে আসে এবং তাদেরকে ঘিরে নেন। তারা যখন আসমানে আরোহণ করেন তখন আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনÑ যদিও তিনি তাদের সম্পর্কে ভালভাবেই অবগত রয়েছেনÑ তোমরা আমার বান্দাদেরকে কোন অবস্থায় ছেড়ে এসেছো? তারা বলেনÑ আমরা তাদেরকে এমতাবস্থায় ছেড়ে এসেছি যে, তারা তোমার হামদ করছে, তোমার তাসবীহ পাঠ করছে এবং তোমার যিকির করছে। আল্লাহ্ বলেনÑ তারা কী চাইছে? ফেরেশতারা বলেনÑ জান্নাত। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনÑ তারা কি তারা দেখেছে? তারা বলেনÑ না। আল্লাহ্ বলেনÑ যদি তারা দেখত তা হলে কেমন হত? ফেরেশতারা বলেনÑ তারা যদি দেখত তাহলে তা আরো বেশি চাইত এবং আরো বেশি উৎসাহ প্রকাশ করত। অতঃপর আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনÑ তারা কী থেকে আশ্রয় চায়? ফেরেশতারা বলেনÑ তারা জাহান্নাম থেকে আশ্রয় চায়। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনÑ তারা কি তা দেখেছে? ফেরেশতারা বলেনÑ না। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনÑ যদি তারা দেখত, তাহলে কেমন হত? ফেরেশতারা বলেনÑ যদি তারা দেখত, তাহলে তারা তা থেকে আরো বেশি পালাত এবং আরো বেশি ভীত হত। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনÑ হে আমার ফেরেশতারা, আমি তোমাদেরকে সাক্ষী রেখে বলছিÑ আমি তাদেরকে ক্ষমা করে দিলাম। ফেরেশতারা বলবেÑ তাদের মধ্যে অমুক ব্যক্তি খুব গোনাহ্গার। সে তাদের মধ্যে ছিল না বরং অন্য প্রয়োজনে এসে তাদের সাথে বসেছে। আল্লাহ্ তা‘আলা বলেনÑ এরা এমন একদল লোক, যাদের সাথী দুর্ভাগা হয় না। অর্থাৎ অন্য মতলবে এসে সংবদ্ধ হওয়া ব্যক্তিকেও আল্লাহ ক্ষমা করে দেন।
চারটি অমূল্য সম্পদ : হযরত কাতাদাহ (রহ.) থেকে বর্ণিতÑ হযরত নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেনÑ চারটি বস্তু যাকে দান করা হয়েছে, তাকে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ দান করা হয়েছে। যথাÑ (১) যিকিরকারী জিহ্বা, (২) শোকরকারী মন, (৩) ধৈর্যশীল শরীর, (৪) মু‘মিন নেককার স্ত্রী।
দাউদ (আ.)-এর দু‘আ
মনীষীরা বলেনÑ হযরত দাউদ (আ.)-এর একটি দু‘আ ছিল এই যে, তিনি বলতেনÑ হে আল্লাহ্! আমি তোমার কাছে চারটি বস্তু প্রার্থনা করি আর চারটি বস্তু থেকে তোমার আশ্রয় চাই। তোমার নিকট আমি যে বস্তুগুলো প্রার্থনা করি তা হলো যিকিরকারী জিহ্বা, শোকরকারী মন, ধৈর্যশীল শরীর ও এমন স্ত্রী যে আমাকে দুনিয়া ও আখেরাতে সাহায্য করবে। আর আমি তোমার নিকট আশ্রয় চাই এমন সন্তান থেকে যে আমার উপর মনিব হবে। এমন স্ত্রী থেকে যে আমাকে বার্ধক্যের সময়ের পূর্বেই বৃদ্ধ করে ফেলবে। এমন সম্পদ থেকে যা আমার জন্য বিপদ হবে। এমন প্রতিবেশী থেকে যে আমার মধ্যে কোন সদগুণ দেখলে গোপন করবে আর অসদগুণ দেখলে প্রচার করবে।
এর থেকে প্রতীয়মান হয় জিকিরের ফজিলত ও মর্যাদা কত বেশি। তাই আসুন আমরা বেশি বেশি জিকির করি। অন্যকেও এর প্রতি উদ্বুদ্ধ করি। জিকির দ্বারা অন্তরও জীবিত থাকে তাই মুমিনের দিল কোনো সময় মৃত থাকে না।
উত্তর দিচ্ছেন : মিযানুর রহমান জামিল

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন