শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ০৭ বৈশাখ ১৪৩১, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

জিজ্ঞাসার জবাব

প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

১। মোহাম্মাদ আবদুল্লাহ সাফওয়াল, শাহাপুর, কুমিল্লা।
জিজ্ঞাসা : কারবালার মূল শিক্ষা কি, জানতে চাই?
জবাব : কারবালার শিক্ষা : কারবালার মর্মান্তিক ঘটনার দ্বারা হযরত ইমাম হোসাইন (রা.) মুসলিম জাতির জন্য এই শিক্ষাই রেখে গেছেন যে, ইসলামী গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, রাজনীতিকে ধর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন করার অপচেষ্টা রোধের নিমিত্ত, মানব রচিত শাসন ব্যবস্থার প্রবর্তন ঠেকানোর উদ্দেশ্যে, আল্লাহর জমিনে আল্লাহর খিলাফত প্রতিষ্ঠাকল্পে, অত্যাচারীর হাত থেকে মজলুম জনগণকে রক্ষা করার নিমিত্ত, বাতিল মতবাদ রুখে দেয়ার মানসে, জীবনের সর্বস্তরে ইসলামী নীতিমালার বাস্তবায়নের জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করতে হবে। প্রয়োজনে প্রাণ উৎসর্গ করতে হবে। হযরত হোসাইন (রা.) জানতেন যে, ইয়াজীদের বাহিনীর সামনে তার বাহিনী দুর্বল। এর পরেও তিনি স্বল্পসংখ্যক আত্মোৎসর্গী সাথী নিয়ে একমাত্র আল্লাহ তায়ালার উপর ভরসা করে অন্যায় ও বাতিলের সামনে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। হোসাইন (রা.) চিন্তা করলেন, ইয়াজীদের এই খিলাফতকে আমি যদি সমর্থন করি তবে রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সেই খেলাফতে নববী শেষ হয়ে বাদশাহী খিলাফত প্রতিষ্ঠা হয়ে যাবে। যা রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শের পরিপন্থী। রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর এই আদর্শকে জারি রাখার জন্যই তিনি ইয়াজীদের সামনে অনমনীয় ছিলেন। হোসাইন (রা.) ধৈর্য, সহনশীলতা, ত্যাগ-তিতিক্ষার সাথে একমাত্র আল্লাহর উপর ভরসা করে বিশাল ইয়াজীদ বাহিনীর সাথে মোকাবিলা করে শাহাদাতবরণ করেন। কারবালার ঘটনা দ্বারা প্রমাণ হলো যে, মুমিন কোন দিন জয়-পরাজয়ের চিন্তা করে না, কোন রাজত্বের পরোয়া করে না, কোন বাতিল শক্তির অন্যায়ের মোকাবিলায় কোন দিন মাথা নত করে না। মুমিনের উদ্দেশ্য একমাত্র আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি।
ইরাকের ফোয়াত নদীর তীরে কারবালার প্রান্তরে ইমাম হোসাইন (রা.) হায়দারি হুকার ছেড়ে অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে, বাতিল মানব রচিত মতবাদ, অপসংস্কৃতি ও অপশক্তির মূলোৎপাটন করতেই হবে। ইমাম হোসাইন সপরিবারের শহীদ হয়ে সেই দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। ইমাম হোসাইন আপোষহীনভাবে নিজ ও পরিবারের জীবনের বিনিময়ে অনন্তকালের জন্য এক সুমহান আদর্শ রেখে গেছেন। ধর্ম থেকে রাজনীতি যে বিচ্ছিন্ন করা যায় না সেটা যে ইসলাম পরিপন্থী, তার প্রমাণ তিনি শাহাদাতবরণের মাধ্যমেই প্রতিষ্ঠিত করে গেছেন। অনুরূপভাবে দ্বিতীয় খলিফা ওমর (রা.), তৃতীয় খলিফা ওসমান (রা.), ৪র্থ খলিফা আলী (রা.) ও তদীয় পুত্র ইমাম হোসাইন (রা.) ওনারা সবাই রাজনৈতিক কারণে শাহাদাতবরণ করেছেন। হোসাইন (রা.) দেখিয়েছেন যে, গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য, রাজনৈতিকে ধর্ম থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রচেষ্টা রোধের নিমিত্তে, কুরআনী শাসনের পরিবর্তে মানব রচিত শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন ঠেকানোর নিমিত্ত, জীবনের সর্বস্তরে ইসলামী নীতিমালা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অপশক্তির দাঁতভাঙ্গা জবাব দিতে গিয়ে প্রয়োজনে শাহাদাতের পেয়ালা পান করতে হবে। আমরা যেন ইমাম হোসাইনের ন্যায় সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য আত্মোৎস্বর্গের মাধ্যমে তাদের পথের পথিক হতে পারি সে কামনা করাই মুমিনের কাম্য হওয়া সময়ের দাবি।
উত্তর দিচ্ছেন : মুফতী হাবীবুল্লাহ মিছবাহ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন