গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে অসময়ে তিস্তার ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন এলাকাবাসী। ভাঙন ঠেকানোর তাৎক্ষণিক কোন ব্যবস্থা না থাকায় ভিটে-মাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন চরবাসী। অব্যাহত ভাঙনে প্রতি বছর বাড়ি-ঘর স্থানান্তর করতে নাকাল অবস্থা পতিত হয়েছেন তারা। গত এক মাসের ভাঙনে হাজারো একর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের মুখে রয়েছে আরো হাজারো একর আবাদি জমি, বসতবাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা। গত বছরের ভয়াবহ বন্যার ধকল সেরে উঠতে না উঠতে তিস্তা নদীর লাগামহীন ভাঙন চরবাসীকে অস্থির করে তুলেছে। ভাঙনের কারণে প্রতিনিয়ত চরবাসীকে অসহনীয় কষ্ট পোহাতে হচ্ছে। চাষাবাদ করে জীবিকা নির্বাহে কৃষকের স্বপ্ন নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে।
শুকনো মৌসুমে পানির স্তর নীচে নেমে গেলেও কাপাসিয়া ইউনিয়নের ভাটিকাপাসিয়া বাদামের চরে তিস্তার ভাঙনে ভুট্টার আবাদসহ তিনশ একর জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। বাদামের চরের নদী ভাঙনের শিকার রাজা মিয়া, জলিল, লুৎফর রহমানসহ ১৬ জন ভুট্টা চাষী তাদের ক্ষয়ক্ষতির সাহায্যের জন্য বিভিন্ন দফতরে আবেদন করেছেন।
কাপাসিয়া চরের কৃষক আ. করিম, আয়তন্নেছা ও জোহরা বেগম জানান, যে বছরেই একটু মাথা তুলে দাড়াতে চাই সে বছরই নদীর বুকে স্বপ্ন ভেঙে যায়। কাপাসিয়া ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন সরকার জানান, নদী পাড়ের মানুষ আমি নিজেও। আমি জানি নদী ভাঙনের কষ্ট এবং জ্বালা যন্ত্রণা। নদী ভাঙন রোধে সরকারের বড় পদক্ষেপ ছাড়া আমাদের পক্ষে কোন কিছু করা সম্ভব নয়।
গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীর অফিস সূত্র জানায়, নদী ভাঙন রোধ, সংস্কার ও তীর সংরক্ষণে ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে। কাজ শেষ হলে চরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন হবে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ জানান, নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত কয়েকজন কৃষক সাহায্যের আবেদন করেছেন। সামনের মৌসুমে কৃষি প্রণোদনার সার-বীজ ছাড়া দেয়ার মত কোন সুযোগ নেই। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ আল মারুফ জানান, নদী ভাঙনের শিকার কয়েকজন কৃষক তাদের ফসলের ক্ষয়ক্ষতির জন্য সাহায্যের আবেদন করেছেন। চেষ্টা করছি কিভাবে সাহায্য করা যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন