সোনামসজিদ স্থলবন্দরে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে রাজস্ব আয় হয়েছে ৫৫৮ কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা। গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসের তুলনায় ৩৬২ কোটি ৬৩ লাখ ১৮ হাজার টাকা বেশি আয় হয়েছে। বৃহস্পতিবার সকালে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সোনামসজিদ স্থল বন্দরের কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মমিনুল ইসলাম। কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে- গত মার্চ মাসে রাজস্ব আদায় হয়েছে ১৩১ কোটি ৭৫ লাখ ১৮ হাজার টাকা। গত বছরের মার্চ মাসে রাজস্ব আয় হয়েছিল ৩৭ কোটি ৭৭ লাখ টাকা। গত ৯ মাস থেকে পর্যায়ক্রমে পণ্য আমদানি বাড়ছে এবং রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাচ্ছে। কাস্টমস কর্মকর্তাদের দাবি- কারোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে সোনামসজিদ বন্দরে প্রতিমাসেই রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে। কাস্টমস কর্মকর্তাদের সঠিক তদারকি ও কঠোর নজরদারির ফলে বন্দরে রাজস্ব আহরণ বেড়েছে। গত ২০১৯-২০ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি হয়েছে ১২ লাখ ৩৩ হাজার ৮০৬ মেট্রিক টন। কিন্তু চলতি অর্থবছরে করোনা পরিস্থিতি কিছু স্থির হওয়ায় আমদানির পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২২ লাখ ৭০ হাজার ২০৮ মেট্রিক টন। একই ভাবে গত অর্থবছরের ৯ মাসে বাংলাদেশ থেকে ভারতে এ বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি হয়েছিল ১৩ হাজার ৯৪২ মেট্রিক টন। যা চলতি অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে ১৭ হাজার ৬৬৫ মেট্রিক টন। চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ পর্যন্ত রাজস্ব আদায় হয়েছে ৫৫৮ কোটি ৮৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা। গত বছরের একই সময় আদায় হয়েছিল ১৯৬ কোটি ২২ লাখ টাকা। যা গত বছরের তুলনায় এ বছরের ৩৬২ কোটি ৬৩ লাখ টাকা বেশি আয় হয়েছে। সোনামসজিদ স্থল বন্দরে রাজস্ব বৃদ্ধিতে কাস্টমস বদ্ধ পরিকর। আমদানি-রপ্তানী বৃদ্ধি ও রাজস্ব ফাঁকি রোধে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। তবে সুযোগ সন্ধানি এক শ্রেণীর আমদানিকারক সিএন্ডএফ এজেন্টেরা রাজস্ব ফাঁকি দিতে সব সময় চেষ্টা করে আসছে। বিশেষ করে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যেমে এ রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়। গত ৯ মাসে মিথ্যা ঘোষণায় ১’শটির অধিক আমদানি পণ্য আটক, অতিরিক্ত রাজস্ব আদায় ও জরিমানা করা হয়েছে। এছাড়াও গত ৯ মাসে বিভিন্ন পণ্য আমদানি-রপ্তানি ছাড়করণে অনিয়মের সঙ্গে জড়িত থাকা সিএন্ডএফ এজেন্টের লাইসেন্স সাময়িক বাতিল করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে। এ বিষয়ে সোনামসজিদ স্থল বন্দরের কাস্টমসের সহকারী কমিশনার মমিনুল ইসলাম জানান, রাজস্ব বৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে আমদানি-রপ্তানি বাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। পাশাপাশি আমদানি-রপ্তানির পণ্য দ্রুত ছাড়করণের লক্ষে দ্বিগুন জনবল পদায়ন করা হয়েছে। একই সঙ্গে রাজস্ব ফাঁকি রোধ করতে শুল্ক গোয়েন্দা বিশেষ টিমকে আমদানিকৃত শতভাগ পণ্য চালান নজরদারির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়েছে। ফলে মিথ্যা ঘোষণার মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি শুন্যের কোটায় নেমেছে। তিনি আরও জানান, এ বন্দরে আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমকে গতিশীল ও সহজতর করতে অনলাইনে আইজি এম দাখিলসহ বাধ্যতামূলক ই-পেমেন্ট সিস্টেম চালু করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ফলে আমদানিকারকদের ইজি ডুইং বিজনেসের গতিশীলতা বাড়ছে। বিভাগীয় কাস্টমস কমিশনার রাজশাহীর নিদের্শক্রমে অধিকাংশ আমদানিকারক/ স্টেকহোল্ডারগণ আঞ্চলিক হওয়ায় নিয়মিত তাদেরকে সংশ্লিষ্ট বিধিবিধান সর্ম্পকে অবগত করা সম্ভব হচ্ছে। রাজস্ব ফাঁকি রোধে দ্বিগুন জরিমানাও করা হচ্ছে। কাস্টমস কর্মকর্তারা সঠিক তদারকি ও নজরদারির ফলে বন্দরে আমদানি-রপ্তানি দুটোই বেড়েছে। সোনামসজিদ স্থলবন্দর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল আওয়াল জানান, বর্তমানে স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে। একই সঙ্গে রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। আমদানি রপ্তানিকৃত পণ্য দ্রুত লোড আনলোড করার জন্য ও ব্যবসায়ীদের হয়রানি রোধে অতিরিক্ত শ্রমিক কাজ করছে বলে জানান পানামা সোনামসজিদ পোর্ট লিংক লিমিটেডের জেনারেল ম্যানেজার বেলাল হোসেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন