আখের অভাবে চিনিকলগুলোতে অব্যাহত লোকসান কমাতে চলতি মৌসুমে উত্তরাঞ্চলের তিনটি চিনিকলে আখ মাড়াই শেষ হয়েছে। এবারও আখ মাড়াই করে চিনি উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারেনি। জয়পুরহাট চিনিকলটি লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের কম উৎপাদন হয়েছে চিনি।
জানা যায়, ২০২০-২০২১ সালের মাড়াই মৌসুমে এক লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১০ হাজার ৬৯২ মেট্রিক টন চিনি উপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করে জয়পুরহাট চিনিকল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু আখের অভাবে চিনি উৎপাদন হয়েছে মাত্র ৪ হাজার ৬৮৫ মেট্রিক টন। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অর্ধেকের কম। আখ মাড়াইয়ে চিনি আহরণের শতকরা হার ছিল ৫.১০ ভাগ।
চিনিকল সূত্র জানায়, ২০২০ সালের ১৮ ডিসেম্বর উত্তরাঞ্চলের তিনটি চিনিকল এলাকার আখ নিয়ে জয়পুরহাট চিনিকলের ২০২০-২১ মাড়াই মৌসুমের উদ্বোধন করা হয়। মাড়াই মৌসুমে ১ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ১০ হাজার ৬৯২ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। জয়পুরহাট চিনিকল গত ৩ মাসে ৯৩ হাজার ৮০৯.৯৪ মেট্রিক টন আখ মাড়াই করে ৪ হাজার ৬৮৫ মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন করে। চিনিকলগুলোতে আখের অভাবে অব্যাহত লোকসান কমাতে সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উত্তরাঞ্চলের তিনটি চিনিকল যথাক্রমে জয়পুরহাট, রংপুর ও মহিমাগঞ্জ চিনিকল এলাকার ১ লাখ ৬২ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে দেশের বৃহত্তম জয়পুরহাট চিনিকল কর্তৃপক্ষ মাড়াই শুরু করে।
এরমধ্যে জয়পুরহাট চিনিকল এলাকার ৬০ হাজার, শ্যামপুরের ৫০ হাজার ও মহিমাগঞ্জ চিনিকলের ৫২ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চলতি ২০২০-২১ আখ মাড়াই মৌসুমের জয়পুরহাট চিনিকল এলাকার ৩৭ হাজার ৫৮৭ দশমিক ৭৭ মেট্রিক টন, রংপুর চিনিকল এলাকার ২৯ হাজার ৯৯৭.৪৬ মেট্রিক টন ও মহিমাগঞ্জ এলাকার ২৬ হাজার ৯২৪.৭১ মেট্রিক টন আখ জয়পুরহাট চিনিকলে মাড়াই হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জয়পুরহাট চিনিকলের দুজন শ্রমিক নেতা জানান, এবার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্ধেকও না হওয়ায় বড় ধরনের লোকসানে পড়বে জয়পুরহাট চিনিকল। কৃষকরা আর আগের মতো আখ চাষ না করায় চিনিকলে আখের সঙ্কট দিন দিন প্রকট হচ্ছে। আখের বদলে অন্য ফসল আবাদ করে বেশি লাভবান হওয়ায় আখ চাষ থেকে কৃষকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। ফলে চিনিকলগুলো পর্যাপ্ত আখ পাচ্ছে না।
জয়পুরহাট চিনিকলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মো. আবু বকর জানান, জয়পুরহাট থেকে রংপুর ও মহিমাগঞ্জ এলাকা অনেক দূরে হওয়ার কারণে জমি থেকে আখ কাটার পর সেগুলো সংগ্রহ করে জয়পুরহাটে আনতে বেশ সময় লাগে। ফলে আখ শুকিয়ে যায়। সংগত কারণে চিনি আহরণের হার কমে যায়। পর্যাপ্ত আখ না থাকায় চিনিকলের ২০-২১ মৌসুমের মাড়াই ইতোমধ্যে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন