বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ফরিদপুর পদ্মার তীব্র ভাঙ্গনে গোলডাঙ্গী ব্রিজ হুমকির মুখে

৫০টি বাড়ী বিলীন পাউবোর প্রাণপণ চেষ্টা

ফরিদপুর থেকে আনোয়ার জাহিদ | প্রকাশের সময় : ১৫ জুন, ২০২১, ১:৪২ পিএম

ফরিদপুর সদর থানার নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের প্রাণ, গোলডাঙ্গী এলাকা। এখানে প্রায় ৫০ হাজার লোকের বসবাস। হটাৎ করে পদ্মার পানি বৃদ্ধির কারনে গোলডাঙ্গী ব্রীজ এলাকা হতে গোলডাঙ্গী দুলাল মেম্বারের কলা বাগান পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার ফসলি জমি নদী গর্ভে বিলিন হয়ে গেছে বলে স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ রাজিব সেখ জানান।
তিনি আরো বলেন, ৪০/৫০ টি পরিবার ভাঙ্গনের কবলে পড়লে বিপরীত পাশের চরে নতুন বসত ঘর বানানোর চেষ্টা করছেন। নতুন করে ভাঙ্গনের ফলে প্রায় ২ শতটি পরিবারের ক্ষেতের ফষল নষ্ট হলে তারা চরম ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পরছে এবং মানবেতর জীবন যাপন করছে।

তীব্র ভাঙ্গনের ফলে ঐ এলাকার বৃহওর স্কুল তথা ৩ নং চড় টেপোরাকান্দি প্রাথমিক বিদ্যায়লয় এবং উস্তাডাঙী প্রাথমিক বিদ্যালয় দুটি ভয়াবহ হুমকীর মুখে আছে। বর্তমানে ভাঙ্গনের তীব্র পয়েন্ট থেকে স্কুল দুটি ও শত শত বসতির বাড়ী ঘরের দুরত্ব মাত্র ৩ শত গজ। সরেজমিন ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন কালে কথা হয় গোলডাঙ্গী এলাকার মোঃ আইয়ুব মিয়া, এনায়েত হালদার তারা জানান, যে ভাবে পানি বাড়ছে আর ভাঙ্গন শুরু হইছে তাতে গোলডাঙ্গীর বৃহওর ব্রীজটি রক্ষা করা খুব কষ্ট। কথা হয় নর্থচ্যানেল এলাকার প্রবীন ব্যক্তি মোঃ ওয়াহেদ আলী ( ৭৫) এর সাথে তিনি প্রতিনিধিকে বললেন, এই নিয়ে আমার পরিবার ৪ বার ভাঙ্গনের শিকার। পাশেই চায়ের দোকানে কথা হয় দৈনিক ইনকিলাব ভক্ত সেখ লালু (৮০) এর সাথে তিনি বললেন, আমার বাড়ী আইজুদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙী আমি ৫ বার নদী ভাঙ্গনের মধ্যে পরছি।

উল্লেখিত, ২ মুরব্বী জানালেন আমাদের চোখের সামনে এই এলাকার ২০/২৫ টি মসজিদ, ৬/৭ পাঠশালা ২/৩ টা ছোট মন্দির পদ্মায় বিলিন হয়ে গেছে। অপরদিকে, পদ্মার ভাঙ্গনে ইতোমধ্যেই বিলিন হয়েছে ডিক্রীরচর ইউনিয়নের ৮/৯ গ্রাম বা ডাঙ্গী। এই বিষয় প্রবীন ব্যক্তি মোঃ জামাল ফকির জানান আমাদের চোখের সামনে ফরিদপুর সদর থানার এই ইউনিয়নের মানচিত্র থেকে বিলিন হয়েছে প্রায় ১৭ টি গ্রাম।

এর মধ্যে, ভ্ইুয়াডাঙী, রোকন মাতুব্বরের ডাঙ্গী, রোকন হাজীর ডাঙ্গী, গেন্দু মোল্যার হাট, ঐতিহ্যবাহী পালবাড়ী বাজার, পালের বাড়ী, পাল বাড়ী হাইস্কুল, মাদ্রাসা, মসজিদ, আপতাব পালের জমিদারি ষ্টেট, ভাঙ্গীডাঙ্গী, ব্যাপারী ডাঙ্গী, তাহের ফকিরের ডাঙ্গী, উজির হাজির ডাঙী, মৃধা ডাঙী সহ, ৭টি স্কুল, ৮ মসজিদ, ২ টি মন্দির এবং প্রায় ৪ হাজার পরিবার নদী ভাঙ্গনের কবলে পরে সব কিছু হারিয়ে জেলার বিভিন্ন জায়গায় কেউ কেউ বাড়ী ঘর করছেন। যারা নিঃস্ব অবস্থায় ছিল তারা রাস্তার পাশে ঘরবাড়ি তৈরী করে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। এখনও আছেন। গোলডাঙ্গী এলাকার তীব্রতর নদী ভাঙ্গন গোলডাঙ্গী বৃহওর ব্রীজ ও প্রায় ৩ কিলোমিটার এলাকার রক্ষার বিষয় প্রতিনিধির সাথে হয় ফরিদুর বাপাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব, সুলতান মাহমুদের সাথে। তিনি জানান,আমরা প্রানপন ভাঙ্গন ঠেকানোর চেষ্টা করছি। যেখানে যা কিছু প্রয়োজন বিশেষ ব্যবস্হায় অগ্রাধিকার ভিওিতে অত্যান্ত আন্তরিকতা সাথে সকলে মিলে কাজ করছি। গত ২/৩ দিন আগ থেকে ভাঙ্গন ঠেকাতে পাউবো জিওব্যাগ দিয়ে ভাঙ্গন ঠেকাতে কাজ করছেন তা প্রশংসার দাবী রাখে।

ভাঙ্গন ঠেকাতে ও পানির গতি কমাতে ফরিদপুর নদী গবেষনার বৈজ্ঞানিকরা বৈজ্ঞানিক পদ্মতিতে ১০/১২ টি বাঁশের ওয়াটার ব্রেক রেকার দিয়ে ভাঙ্গন ঠেকাতে চেষ্টা করছেন। পাশাপাশি ফরিদপুর শহরমুখী তথা বৃহওর ব্রীজটি দক্ষিণ মুখে রেখে ডান দিকের পানির তোর কমাতে বাংলদেশ বিআইডব্লিউটি বাম প্রান্তে ড্রেজার বসিয়ে ভাঙ্গন প্রান্তের তথা কবলিত স্পড থেকে পানি গতি বামে নেওয়ার জন্য কাজ করছেন।
পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশল সাহেব আরো জানান, ড্রেজার দিয়ে ডুবচর কেটে ডান দিকের পানি বাম দিকে নেওয়ার চেষ্টাও চলছে। এতে পানির গতি বেগ কমবে এবং ভাঙ্গনও কমবে। জরুরি ভাবে ভাঙ্গন এলাকায় কতদি কাজ করবেন এবং কি পরিমান বরাদ্দ হয়েছে? জানতে চাইলে তিনি প্রতিনিধিকে জানান, ঠিকাদার মোফাজ্জেল এবং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহেব দেখে শুনে কাজ করছেন, এই কাজ আরও ৭ দিন চলবে। আপততঃ ৫০ লাখ টাকা ভাঙ্গন ঠেকাতে বরাদ্দ হয়েছে, প্রয়োজনে আরো বাড়বে। এই বিষয়, ডিক্রিরচর ইউপি’র চেয়ারম্যান মোঃ মিন্টু ফকির এবং নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোস্তাক হোসেন জানান, আমাদের সাধ্যের মধ্যে যতটুকু সম্ভব আমরা নদী ভাঙ্গনের কবলে পরা সকলের জন্য সাহায্য করবো।
সর্বশেষে , দেখাগেলো ১২/ ১৪ হাজার জিও ব্যাগ বড় বলগেট ভর্তি ভরাট বালু জিও ব্যাগে ভরে, নদী ভাঙ্গনের স্থানে বাঁধানোর কাজ চলছে। যাতে বৃহত্তর ব্রীজটি রক্ষা হয়।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন