করোনাভাইরাসের কারণে সীমিত পরিসরে জাপানে চলছে টোকিও অলিম্পিক-২০২০ এর আয়োজন। অলিম্পিক পদক জেতা যে কোনও ক্রীড়াবিদের জন্যই সবচাইতে বিশেষ মুহূর্তের একটি। পদকের পাশাপাশি বিজয়ী অ্যাথলেটদের শুভেচ্ছা জানাতে প্রদান করা হয় রঙিন ফুলের তোড়া। তবে এবারের টোকিও অলিম্পিকে তাদের দেয়া ফুলগুলোর রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব ও তাৎপর্য।
অলিম্পিক এবং প্যারালিম্পিক গেমসে সবমিলিয়ে অ্যাথলেটদের হাতে ৫ হাজারেরও বেশি তোড়া তুলে দেওয়া হবে বলে মনে করা হচ্ছে। আনুষ্ঠানিক আসরে যে ফুলগুলো দেয়া হচ্ছে তা মূলত উত্তর-পূর্ব জাপানের তিনটি জেলা থেকে আনা হয়েছে। জাপানে ২০১১ সালের ভূমিকম্প এবং সুনামিতে জেলাগুলো বিধ্বস্ত হয়।
আজ থেকে ঠিক ১০ বছর আগে প্রলয়ঙ্করী সেই ভূমিকম্প ও সুনামিতে জাপানের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল ফুকুশিমা, ইওয়াতে, মিয়াগির প্রায় ২০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়; ভূমিকম্প ও সুনামিতে হাইড্রোজেন বিস্ফোরণ হয়ে ফুকুশিমার পারমাণবিক কেন্দ্রের তিনটি পারমাণবিক চুল্লিও ধ্বংস হয়ে যায়। হলুদ, বেগুনি এবং নীল রঙয়ের যে তিনটি ফুল এবারের আসরের ফুলের তোড়ায় শোভা পেয়েছে, তা এই তিনটি জেলায়ই জন্মেছে।
তোড়ার মধ্যে সবচেয়ে উজ্জ্বল রঙে ফুটে থাকা হলদে সূর্যমুখীগুলো মিয়াগি থেকে আনা। ২০১১ সালের দুর্যোগে অনেকের সন্তান নিহত হয়। সেই হতভাগ্য বাবা-মায়েরা মৃত সন্তানের স্মৃতির উদ্দেশ্যে পাহাড়ের পাদদেশে এসব ফুল রোপণ করে। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে তাদের সন্তানেরা দুর্যোগের হাত থেকে বাঁচতে আশ্রয় নিয়েছিল বলে শোনা যায়।
আরও রয়েছে সাদা আর বেগুনি রঙা ছোট ছোট ইউস্টোমাস এবং সলোমন'স সিল-এই দুটি ফুলই ফুকুশিমার। ২০১১ সালের ভূমিকম্প জাপানের কৃষি উৎপাদনকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। দুর্যোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় অর্থনীতিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত একটি অলাভজনক উদ্যোগের অধীনে এই ফুল দুটোর চাষ শুরু হয় ফুকুশিমায়।
ছোট উজ্জ্বল নীল রঙের জেন্টিয়ান্স ফুলগুলো ইওয়াতে হতে উত্থিত। সুনামির বিশাল ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে গিয়েছিল এ রাজ্য। সবশেষে টোকিওতে জন্মানো সবুজাভ অ্যাস্পিডিস্ট্রা দিয়ে তোড়াটি সম্পূর্ণ করা হয়েছে। এ বছর অলিম্পিকের ‘হোস্ট’ শহরের প্রতিনিধিত্ব করার জন্য এই ফুল বেছে নেওয়া।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন