বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১, ১৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

ব্যর্থতা ঢাকতেই জিয়াউর রহমানকে টেনে আনা হচ্ছে: রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০২১, ৭:৩৬ পিএম

সরকার যখনই কোন বিপদে পড়ে, কোথাও ব্যর্থ হয় তখনই জিয়াউর রহমানকে টেনে আনে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর দেড় বছর সময় পেয়েছে এই সরকার। কিন্তু ঢাকার দু’একটা নামকরা প্রাইভেট হাসপাতাল বাদ দিয়ে দেশের কোন হাসপাতালেই চিকিৎসা ব্যবস্থা নেই, অক্সিজেন নেই, ভেন্টিলেটর নেই, ওষুধ নেই। মানুষ চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল থেকে হাসপাতালে ঘুরছে, হাসপাতালে জায়গা না পেয়ে অনেকেই রাস্তায় গাড়িতে মারা যাচ্ছে। এই ব্যর্থতা ঢাকার জন্য সরকার এখন জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কুৎসা রটনা ও অপপ্রচার চালাচ্ছে। তবে মনে রাখতে হবে জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে যতই অপপ্রচার চালাবেন ততই তার জনপ্রিয়তা বাড়বে।

শনিবার (১৪ আগস্ট) টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে করোনা চিকিৎসা ও সুরক্ষা সামগ্রী বিতরণ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে তিনি ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

জিয়াউর রহমানকে নিয়ে আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের বক্তব্যের সমালোচনা করে রুহুল কবির রিজভী বলেন, তিনি বলেছেন বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে জিয়াউর রহমান জড়িত। অদ্ভুত তথ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন তিনি।

আইনমন্ত্রীর উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, শহীদ জিয়ার চরিত্র হরণের জন্য আপনি নানা কথা বলে বেড়াচ্ছেন। আপনার এ কথা জনগণ দুই পয়সাও দাম দেয় না। কারণ তারা মনে করে আপনার আত্মা বিক্রি করা, আপনি মোসাহেবের মন্ত্রী। আপনার অতীতের অপকর্ম ঢাকতে এবং প্রধানমন্ত্রীকে খুশি করতেই এসব করছেন। কারণ জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে কথা বললে প্রধানমন্ত্রী খুশি হবেন।

আনিসুল হকের ইতিহাস জ্ঞান আছে কিনা সে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান সরকারের চাকরি করতেন। সেসময় তো আরও অনেকে চাকরি করতেন, কেউ সচিব, ডিজি, আইজি ছিলেন। তাদের কি ক্ষমতা ছিল? অথচ আপনাদের নিজ দলের লোকেরা হত্যাকান্ড ঘটিয়ে সেই রক্তের ওপর দিয়ে শপথ নিয়েছেন। সেই শপথ কে পড়িয়েছে? এইচটি ইমাম। কই তার বিরুদ্ধে তো কিছু বলছেন না। মোস্তাকের ক্যাবিনেটে বাকশাল ক্যাবিনেটের ২২ জন গিয়েছিলেন তাদের বিরুদ্ধে তো কিছু বলেন না। জিয়াউর রহমান ছিলেন সেনা বাহিনীর উপ-প্রধান। কিন্তু সেনা প্রধানের দায়িত্ব ছিল প্রেসিডেন্টকে প্রটেকশন দেয়ার। তার বিরুদ্ধে কিছু বলেন না। কারণ উনি আওয়ামী লীগের এমপি হয়েছেন। খন্দকার মোশতাকের ক্যাবিনেটের অনেকেই এমপি হয়েছেন। টাঙ্গাইলের মান্নান সাহেব, মালেক উকিল সাহেব হয়েছেন। তাদের নিয়ে কোন কথা নেই।

রিজভী আওয়ামী লীগ নেতাদের স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, যতই জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছেন ততই তার জনপ্রিয়তা বাড়বে। কারণ তিনি গণতন্ত্র, বাক স্বাধীনতা, সংবাদ পত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন। তার এই কৃতিত্ব ঢাকবে কিভাবে?

খালেদা জিয়াকে নিয়ে হাসানুল হক ইনুর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, উনি উদ্ভট, অদ্ভুত কথা বলার পারঙ্গম। অনেক দিন চুপচাপ ছিলেন এখন বলছেন, মন্ত্রিত্ব পাওয়ার সম্ভাবনা আছে কিনা। নাহলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে কথা বলা শুরু করেছেন কেন? তিনি বলেছেন খালেদা জিয়ার আত্মা বাংলাদেশ ও বাঙালির আত্মা নয়। সেক্টর কমান্ডারের স্ত্রী সম্পর্কে একথা বলছেন। যার সাথে মাটি ও মানুষের নিবিড় সম্পর্ক তার সম্পর্কে যখন এধরণের অরুচিকর কথা বলছেন তা অত্যন্ত দুঃখজনক। জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ধারায় বেগম জিয়া মানুষের কাছে গর্বের, প্রেরণার আদর্শ। যিনি কখনো আধিপত্যবাদের কাছে মাথা নত করেননি। আপনারা যেটা হর হামেশায় করেন।

রিজভী বলেন, কুলাঙ্গাররা মনে করছে দেশে কোনদিন গণতন্ত্র ফিরবে না তাই যা ইচ্ছা তাই করবো, বলবো। গণতন্ত্র না থাকলে বেলেল্লাপনা কথা-বর্তা, মন্ত্রিত্ব পাওয়ার জন্য, নেতা হওয়ার জন্য নেত্রীকে খুশি করার জন্য এমন কথা বলে। যদিও তাদের মধ্যে কোন আদর্শ থাকে না।

বিএনপিকরোনা কার্যক্রম সম্পর্কে বলতে গিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, বিএনপিকে দমন পীড়নের মধ্য দিয়ে নিঃশেষ করার জন্য যতরকম কিছু করা দরকার সরকার সবরকম চেষ্টা করে যাচ্ছে। বিএনপি প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে, নিজের জীবন বিপন্ন করে নেতাকর্মীরা কাজ করছে। করোনার শুরু থেকে বিএনপি, ড্যাব অঙ্গসংগঠনগুলো কাজ করছে। দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে জনগণের জন্য যা করার দরকার বিএনপি তা করেছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উদ্যোগ, তাগিদেই এসব কর্মসূচি পালিত হচ্ছে। তার নির্দেশে কেউ বসে নেই বৈশ্বিক মহামারির মধ্যে ছুটে বেড়াচ্ছেন, কাজ করছেন।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও মির্জাপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকীর সভাপতিত্বে এসময় আরও বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম, যুক্ত ছিলেন- বিএনপির তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ওয়াহিদুজ্জামান অ্যাপোলো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন