২০১৭ সালের ১৩ জুন রাঙামাটিতে ভয়াবহ পাহাড় ধসে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক ক্ষতি হয়। ওই সময় জেলাজুড়ে সড়কের ১৫১টি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ক্ষতিগ্রস্ত সেসব সড়ক মেরামত, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও পাহাড় ধস রোধে ২৩৯ কোটি টাকার প্রকল্প গ্রহণ করেছে রাঙামাটি সড়ক বিভাগ।
জেলা সড়ক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে এ প্রকল্পের কাজ চলমান। প্রকল্পের মধ্যে রয়েছে- ৫ হাজার ৪৭০ মিটার রিটেইনিং ওয়াল, ৭ হাজার ৭৩৫ মিটার ড্রেন, ধস প্রতিরোধক কংক্রিট ঢালাই ৭২ হাজার ১৫০ বর্গমিটার। এরমধ্যে ৫ মিটার উচ্চতার রিটেইনিং ওয়াল ৫১টি ও ৬ মিটার উচ্চতার রিটেইনিং ওয়াল ৭৩টি এবং ৭ মিটার উচ্চতার রিটেইনিং ওয়াল হবে ২৭টি স্পটে। পাইল ফাউন্ডেশনের দৈর্ঘ্য ১২-১৮ মিটার।
এছাড়া তিন পার্বত্য জেলার পাহাড় ধস রোধে সড়ক গবেষণা কাজে এ প্রকল্পের ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এরই মধ্যে গবেষণার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। ২০২২ সালের ৩০ জুন প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হবে। রাঙামাটি সড়ক ও জনপদ বিভগের দ্বায়িত্বশীল সূত্রে আরো জানায়, চট্টগ্রাম-রাঙামাটি সড়কের ৩৭ কিলোমিটার থেকে ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে ৪২টি স্পটে ১ হাজার ৬৬০ মিটার রিটেইনিং ওয়াল হবে। প্রকল্প ব্যয় ৭০ কোটি ৫৭ লাখ টাকা।
মানিকছড়ি মহালছড়ি সড়কের প্রথম ২০ কিলোমিটারের মধ্যে ৩১টি স্পটে ১ হাজার ৯২ কিলোমিটার রিটেইনিং ওয়াল হবে। প্রকল্প ব্যয় ৪০ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। খাগড়াছড়ি-মহালছড়ি সড়কের ২০ কিলোমিটার থেকে ৪১ কিলোমিটার পর্যন্ত ২৫টি স্পটে রিটেইনিং ওয়াল হবে। প্রকল্প ব্যয় ৪১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা।রাঙামাটি-বান্দরবান সড়কের ৪০০ কিলোমিটারের মধ্যে ৩৪টি ও বাঙালহালিয়া-রাজস্থলী সড়কের ৭ কিলোমিটার থেকে ২০ কিলোমিটারের মধ্যে ৬টি স্পটে সার্ফেস ড্রেনসহ আরসিসি রিটেইনিং ওয়াল হবে। প্রকল্প ব্যয় ৫৫ কোটি ৮৩ লাখ টাকা।
রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. শাহে আরেফীন জানান, ফিশারি সংযোগ সড়ক বাঁধের ৬০০ মিটার এলাকার মধ্যে ২০০ মিটার অংশে যেসব স্থান হুমকিতে আছে তা মেরামত করা হচ্ছে। অতিমাত্রায় ঝুঁকিপূর্ণ ৬০০ মিটার বাঁধের মধ্যে বিভিন্ন স্থানে ২০০ মিটার রিটেইনিং ওয়াল নির্মাণ করা হবে। মূল সড়ক থেকে ৩৩ মিটার দূরত্বে প্রতিটি ওয়াল ৫ মিটার উঁচু ও রাস্তার লেভেল থেকে ১ মিটার নিচে হবে। ২ দশমিক ৪ মিটার পর পর ১২ মিটার উচ্চতার পাইলিং হবে।
তিনি আরো জানান, ২৩৯ কোটি টাকার এ প্রকল্পে কীভাবে তিন পার্বত্য জেলার পাহাড় ধস রোধ করা যায় তা নিয়ে গবেষণা করা হবে। ধসের ঝুঁকি নিরূপণ ও ঝুঁকি ম্যাপ, স্ট্র্যাটেজিক ফ্রেম ওয়ার্ক এবং ভ‚মিধস প্রকল্পে করণীয় নির্ধারণ করবে পুরো রাঙামাটি জেলার। এরই মধ্যে গবেষণার জন্য দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এ জন্য বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৩০ কোটি টাকা।
নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, তিন পার্বত্য জেলায় ১ হাজার ৯২ কিলোমিটার সড়ক আছে। সড়কের মাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে। এরপর কোন স্থানে কী পদ্ধতিতে পাহাড় ধস ঠেকানো যায়, তা নিয়ে কাজ করা হবে। ভবিষ্যতেও এ গবেষণা কাজে লাগবে। এ ধরনের গবেষণা দেশে এবারই প্রথম হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন