শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

সাহিত্য

কবিতা

| প্রকাশের সময় : ৮ এপ্রিল, ২০২২, ১২:০৯ এএম

দীর্ঘশ্বাসের রাত্রি

শাহ মুহাম্মাদ মাসউদ
হঠাৎ ঘুম ভেঙে জেগে দেখি
কিসে যেন ছুঁয়ে দিচ্ছে কান—
দুটি নরম ঠোঁট...

সুবহে সাদিক
ফুলের সুবাসে মেতে উঠার ছন্দে নাচি
হাসনাহেনার মোহিনী সুবাস, নাকি গন্ধহীন কাশফুল?
—হয়তো দলছুট অপরাজিতা!

বুক ভরে ঘ্রাণ নিতে গিয়ে দেখি, কল্পনার অতলান্তে ডুবে আছি দশকজুড়ে
কান ছুঁয়ে ভেসে উঠছে দীর্ঘশ্বাসের বুদবুদ!

 

অস্তিত্ব

উৎপলেন্দু পাল

বুঁচির মা এখন বিহাইন্যা খাওয়নের পাতে
ভাঙ্গা সানকিতে শুটকি ভর্তা আর পান্তা ভাত
তিল তিল কইর‌্যা গইড়া তোলা সংসারে সে
আস্তাকুঁড়ের ছাই ফেলাইবার ভাঙ্গা কুলার মতন
কত বসন্ত কত বাইস্যা কাইট্যা গেছে জীবনে
তবুও শীতের রাইতে গতরে মন সেঁকে বুঁচির বাপ
পোলা মাইয়া দুই দিনের সুখের পায়রা বাপুরে
বুড়া মরদের পিড়িত যেন আষাইঢ়া কাডলের আঠা
যৌবন কারে কয় বুঝবার সময় পায় নাই সে
পাটা পুতার ঘষাঘষির মতোই কাইট্যা গেছে সময়
রাইত হইলে চোক্ষে লাগছে রঙ্গীন স্বপ্নের রেশ
বিহানেই পুইরা গেছে উনানের রাক্ষইসা চিতায় ,
তবুও এখনো স্বপ্ন ভাসে চোখে বাইলসের উপর
বুঁচির বাপের সোহাইগ্যা সংসারের লতাপাতা ফুল
অঞ্জলী দেয় পোলা মাইয়াগো ভবিষ্যতের ব্রতে
তার পর নিজের অস্থিপিঞ্জরের প্রতিমা নিরঞ্জন ।

 

চৈত্রালী বৃষ্টি
সাজিয়া ইসলাম দিবা
চৈত্রের শেষ প্রহরে বৃষ্টিতে
ভিজে মাটির নেশা ভরা গন্ধে
জেগে উঠে জীবন নতুন ছন্দে
পরছে জল আমের মুকুল লিচুর ফুল ছুয়ে
শেষ রাতে বৃষ্টিতে সুপারি পাতা যাচ্ছে নুয়ে
নয়নতারায় জমেছে বিন্দু বিন্দু জল
জল পেয়ে পরম আনন্দে হাসছে তৃনের দল
বৈশাখী আগমনী সুর বাতাসে ভাসে
চারিদিক ছেয়ে আছে মিষ্টি আবেশে
প্রকৃতি যেন এমনি স্নিগ্ধ শান্ত রয়
পুরো রমজান যেন সুধাময় হাওয়া বয়
চৈত্রালী বৃষ্টিতে আজ হয়েছে উতলা মন
খুঁজে পাক শান্তির ঠিকানা কেটে যাক অশুভ ক্ষণ।

 

তবুও বসন্ত
এম এ রহমান
রোদ বিছানো দূপুর,চৈতালি উত্তাপ
ক্লদ-ক্লান্ত তনু পাখি চোখে খুঁজে ছায়া
একটু বাতাস-ঝিরিঝিরি,চাতক মনের তৃষ্ণায়
তবুও বসন্ত- তবুও বসন্ত চারিপাশ
সময়েরা হেঁটে যায় পড়ন্ত বিকেল বেলা
অস্থিরতার উত্তাপ নেই-
অপেক্ষার ঝিরিঝিরি বাতাসেরা বয়
পড়ন্ত সূর্যের আলো,তোমার ছায়া-মায়া বাড়ে
হৃদয়ে আমার।

আশার আলোরা নিভে অবহেলা বেয়ে নামে সন্ধ্যা
তবুও বসন্ত চারিপাশ - চাঁদের জোছনা আলো
আদতে মানুষ মরে, মানুষ হারিয়ে যায় তবু
তার মায়া-ছায়া কি কখনো হারায়,চারুলতা?
তুমিও হারাওনি- জোছনার আলোর মতোই
হৃদকাশে আলো ছড়াও বেদনার আঁধার তেড়ে
জেগে থাকো ঘুমহীন চোখের তারায় তারায়
শুধু চুরি হয়ে যায়,হারিয়ে যায় আমার
স্নিগ্ধ কিছু ভোর- শিউলী ঝরা সকাল!

 


রামাদানের ছড়া
পারভেজ হুসেন তালুকদার

রামাদানে খোদার রহম বৃষ্টি হয়ে ঝরে,
আয় না সবে বৃষ্টি ভিজি সিয়াম সাধন করে।
আমরা পাপী তাই জীবনে পাপ বেঁধেছে বাসা,
রামাদানে পাপ মুছে আয় পূণ্েয পুষি আশা।

আয় না ছুটে মসজিদে যাই কোরান তেলাওয়াতে,
সময় মত নামাজ পড়ি প্রভুর খুশি তাতে,
এই রামাদান জীবনময়ে নিয়ে আসুক ভালো,
সবার মাঝে নেমে আসুক মহান প্রভুর আলো।

মাগফিরাতও নাযাত আছে রামাদানের দিনে,
এমন দয়ার কে আছে আর রাব্বে কারীম বিনে।
এই রামাদান হোক আমাদের পরকালের পুজি,
প্রভুর প্রেমে হৃদয় সপে তারই দয়া খুঁজি।

 

বসন্তকাল
বেদুঈন ইসলাম
রাঙা ফুলের ডালে বসে কুটুম পাখি,
ভর দুপুরে কেঁদে মরে।
চোখ দু›টি তার সন্ধ্যা আকাশ,
ঘরে ফেরার নেই যে তাড়া।

ক্লান্ত হাওয়ায় ঝিমায় এখন,
রক্ত রাঙা লাজুক চোখে।
বসন্তের হলুদ ঠোঁটে,
কাতর ধ্বনি।

ডাকছো কেনো?
কিসের ব্যথা!
এই অবেলায় বুকের ভিতর নেই কেনো ভয়।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন