শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সাহিত্য

কবিতা

| প্রকাশের সময় : ২০ মে, ২০২২, ১২:০৩ এএম

চৈত্রজাতক, পুষ্পজাতক

রেদওয়ান খান
চৈত্রজাতক আমি। রৌদ্রদগ্ধ এই দেহ এই মন সারাদিন রোদে
পোড়ে আর নিন্দাপতির সঙ্গীতে বেজে উঠি দুঃখের আমোদে–
আমি এক রোদের রাখাল– ঝাঁ ঝাঁ হলদে রোদে স্নান করে উঠি
করতলে গোলাপ বাগান–পুষ্পজাতক– কতোবার ফুল হয়ে ফুটি !

মায়াবী সূতোয় বোনা-এ ফুলতোলা ভালোবাসা– চৈত্রের আগুন
মরা তটিনীর যেন, ঘুমিয়েছে আমারই হৃদয়-পোড়া বিষণ্ন ফাগুন
শিমুল ফুলের পুকুরে সে, ডুব দেয়– যে ছিল ভীষণ তৃষ্ণা-কাতর
তার পর উড়ে যায়, কতদূর যায় সে, সাদা বক– আকাশ-পাথর ?
চৌচির হলে মন, রোদ-পোড়া দেহটারে ঠোঁকরায় শিকারি শকুন
তপ্ত বালুর কফিনে ঢাকা তার ইতিহাস, করোটিতে ধরেনি কি– ঘুন !
ঝাঁ ঝাঁ হলদে রোদে পুড়ছি, তবু মনে হয়– দীর্ঘতর হোক এই ঋতু
যে-জীবন খরায় ঊষর তার পত্র ঝরা দিনমান, কিছু নাই থিতুৃ.

 


মালাকুল কি ক্লান্ত ভিষণ আজ
ওলি মুন্সী
মালাকুল কি ক্লান্ত ভিষণ আজ
মিক্রাইলে মানুষ মারছে
আকাশ থেকে ফালছে ভিষণ বাজ
মালাকুল কি ক্লান্ত ভিষণ আজ।
হাওয়ায় দিচ্ছে মহামারী
সেই ভয়েতে দোয়ার আঠা
ঘরে দিচ্ছে ডেঙ্গু মশার সাজ
মালাকুল কি ক্লান্ত ভিষণ আজ।
হাসছেন প্রভু ভুল বলেছি
শস্য ক্ষেতে ফেলছে কত শিল
তারচে করুক ধ্বংস আওয়াজ
কোথায় তোমার সিঙ্গার ইসরাফিল।
মানুষ ছুয়ে মরছে মানুষ
সংক্রমণে কাঁপছে ধরা আজ
করোনা কাল বড়ই আজব
মানুষ গুলিই আজরাইলের সাজ।
মালাকুল কি ক্লান্ত ভিষণ আজ।

 


সংসার
বেদুঈন ইসলাম
বৈশাখী দুপুর
কিশোরী দুলির হাতে ছাগলের দড়ি
পিছনে - শিশুর মা মা চিৎকার
দুলি, হেঁটে যায় চকে -আয় আয় রবে
তার পৃথিবীর আকাশে ভাসে সোনালি হাওয়া,
রোদস্নানে ফিরে আসে ঘরে
ক্ষুধার্ত শিশু বুক চাটে অবিরাম
দুলি চেঁচায়-
এখন তার মেলা কাজ।
ও, চিংেিড় মতো ছটফট করে।
কোলের শিশুটি মা মা ডাকে...

 


বৈশাখী তাণ্ডব
শুভজ্যোতি মন্ডল
ঈশাণ কোনে জেগেছে কাদম্বিনী,
অমানিশায় ছেয়েছে দ্যুলোক,
এলোকেশী রুপে ধূর্জটির জটা খোলা তান্ডব
প্রলয়ে মাতম ভেঙ্গেচুরে তছনছ,
মরুতের তীব্রতা, কালবৈশাখী ক্ষ্যাপাটে নটরাজ

অশনির ঝলকানি,হুঙ্কারে কম্পন,
নির্দয়,মার মুখো, নর মনে জেগে ওঠে বিভীষণ
ইন্দ্রের বজ্র ছুটে চলা হুঙ্কার,
উন্মাদিনী বেশে ধ্বংসের প্রতীক কালবৈশাখীর আগমন।
বিটপী, তরু বন,সমূলে উৎপাটন,
বায়ুতে মিলে যেন দানবের আগমন
প্রকৃতি দেখে চেয়ে, দানবের গর্জন,
ঘর-বাড়ি চূড়মার ক্ষনিকের ওঠা ঝড়,
বৈরিতা সাথে লয়ে ধ্বংস যজ্ঞের আলাপন
উজানের বুকে ডেকে ওঠে বান,
তটিণী-র বুকে হিল্লোল তুলে হয়ে ওঠে উত্তাল।
দুই ধারে ভাঙ্গনে
ভাঙ্গে পাড়,ভাঙ্গে চর,
চর ভাসি জীবনে নামে ক্রন্দন।
পশুপাখি তোলে সুর,আর্তনাদে মাতম
বর্ষন ঝড়ে বিধ্বস্ত প্রাণীকূল,
নিরাপদ নেই কোন আবাসন
ফসলের জমিনে দুর্বার ঘূর্ণি,
কৃষানের স্বপ্ন,স্বাদ - আহ্লাদ হয়ে যায় চূর্ণি
দানবের খেলা চলে,ভাঙ্গনের তালে তালে, এলোকেশী বৈশাখী আগমন।

 

আমার একটা...
নাসরীন খান
আমার একটা সেই তুমি চাই
যে তুমিতে শুধু আমাকে পাই
মনের কোনে তার ঘর জুড়ে
আমিই একা আর সব বহুদূরে
মুগ্ধতা আর কথার খেলা দুটোয়
আমায় ছুঁয়ে রাখবে তোমার মুঠোয়
তুমিই আমার সব অন্য কিচ্ছু নয়
সবটুকু ভালোবাসা হবে তুমিময়
লং ড্রাইভে গল্প করে কাটিয়ে দিবে
হাজার কথার ফুল বিছানায় নিবে
চোখের পাতায় শ্রান্তি এনে ঘুমহীন
কাটাতে পারবে অনায়াসে রাতদিন
ফুচকার প্লেটে মরিচের ঝাঁজ
একসাথে কুঁচকে চোখের ভাঁজ
আমার চাওয়াগুলো ছুঁয়ে থাকবে
পূর্ণতায় তোমার রূপান্তর টানবে
আমার একটা সেই পুরুষ চাই
যে তুমিতে শুধু আমাকে পাই!

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
রেদওয়ান খান ২৪ মে, ২০২২, ১:৫৯ পিএম says : 0
আমার কবিতা প্রকাশের জন্য শ্রদ্ধেয় সাহিত্য সম্পাদক ফাহিম ফিরোজ ভাইকে ভালোবাসা। সকলের লেখাই পড়লাম। আয়োজন সুন্দর। সকলের মঙ্গল হোক।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন