আশিক বন্ধু : একটি গান যখন জনপ্রিয়, সবাই কন্ঠটাকে খুঁজে নেন। কিন্তু যারা ইনস্ট্রুমেন্ট বাজিয়ে গানটাকে সুন্দর করে সবার কাছে পৌঁছে দেন তারা আড়ালে পড়ে থাকেন। সৃষ্টির পেছনের মানুষদের খোঁজ অনেকেই নেন না। এমনই একজন ভায়োলিন শিল্পী সেলিম আহমেদ। তার ভায়োলিনে বাজানো অসংখ্য জনপ্রিয় গান রয়েছে। গানকে প্রান দেয়ার পেছনে ভায়োলিনের সুর প্রয়োজন। সঙ্গীতে নিরলস পরিশ্রম করে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন সুর তৈরি করছেন সেলিম আহমেদ। ভায়োলিন বাজানোকেই পেশা হিসেবে নিয়েছেন তিনি। স¤প্রতি এ ভায়োলিন শিল্পীর সাথে কথা হয়।
ভায়োলিন বাজানো শুরু করলেন কিভাবে?
যখন আমি ক্লাস সেভেনে পড়ি, তখন থেকে ভায়োলিনের প্রেমে পড়ি। স্কুল জীবন ভায়োলিনের সুর শুনে পাগল হয়েছি। ক্লাস শেষে বাসায় এসে ভায়োলিন নিয়ে বসে পড়তাম। বিকেলে খেলাধুলা না করে ভায়োলিন বাজানো শুরু করতাম। এভাবেই বাবা মোহাম্মদ চান মিয়ার কাছে প্রথম হাতেখড়ি নিয়েছি। তারপর ওস্তাদ সুনীল চন্দ দাসের কাছে শিখেছি।
আপনার ভায়োলিনে বাজানো জনপ্রিয় গানগুলোর কথা বলবেন?
আমার ভায়োলিন বাজানো দিয়ে অনেক গান জনপ্রিয় হয়েছে। তারমধ্যে কয়েকটি গান হলো, ভালোবাসবো বাসবোরে, যায় দিন যায় একাকী, এক মুঠো রোদ্দুর হাতে, জানি একদিন আমি চলে যাবো, মেয়ে এখনো আমায় বন্ধু ভাবো কি, প্রিয়া প্রিয়ারে, জানরে, এক মুঠো স্বপ্ন, পাগল তোর জন্যরে, সখীরে সখীরে, নীল আকাশ, তোমায় ভেবে, যাবি যদি, পথ প্রমুখ।
এ পর্যন্ত কতগুলো গানে বাজিয়েছেন?
২৫ হাজারের মতো গানে ভায়োলিন বাজিয়েছি। একটানা ১৮ বছর ধরে সুরের জগতে পড়ে আছি। সিনেমার গান বাজিয়েছি প্রায় চারশ’। এছাড়া অডিও, স্টেজ, টিভিতে নিয়মিত কাজ করে যাচ্ছি। এখনো নিয়মিত রেকর্ডিং এ বাজাতে হয়। আমার সবচেয়ে ভালো লাগে স্টুডিওতে রেকর্ডিং বাজাতে।
সঙ্গীতে দীর্ঘদিন ধরে আছেন, কোনো অপ্রাপ্তি আছে কি?
সঙ্গীতে প্রতিনিয়ত দিয়ে যাচ্ছি, অর্জন অনেক হয়েছে। তবে যোগ্য সম্মানটুকু পাইনি। তবে অনেকেই সম্মানিটুকুও যথাযথ দেয়না আমাকে। এতো জনপ্রিয় গান উপহার দেয়ার পরও পুরস্কার পাইনি। অনেকে আমাকে জিজ্ঞেস করেন, কেন আপনাকে পুরস্কার দেয়া হলোনা। এর জবাব আমার কাছে নেই। বেঁচে থাকতে কদর নাই। মরে গেলে কদর দিয়ে কি হবে।
স্টেজে যখন বাজান তখন শ্রোতাদের কেমন সাড়া পান?
অনেক অনুষ্ঠানে অনেক ঘটনাই ঘটেছে। স্টেজে যখন ভায়োলিন বাজাচ্ছি, তখন শ্রোতাদের মুগ্ধতা দেখে ভালো লাগে। সুর শুনে শ্রোতারা চোখ মুছেন, জীবনের ঘনিষ্ঠ কোন ঘটনার সাথে সুরের মিল খুঁজে পান। অনেকেই ইমোশনাল হয়ে চোখের পানি ঝরান। আসলে প্রত্যেকের জীবনেই ভায়োলিনের সুর মিশে আছে। সুরের মাঝে জীবনের গল্প খুজে নেন অনেকেই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন