শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬ বৈশাখ ১৪৩১, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আদিগন্ত

ট্রাম্পকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করে লাভ নেই

| প্রকাশের সময় : ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

জালাল উদ্দিন ওমর : ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প শপথ গ্রহণ করেছেন। এর আগে ২০১৬ সালের ৮ নভেম্বর অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের ৫৮তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের নেতা হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। নির্বাচনপূর্ব অধিকাংশ জরিপে ডেমোক্র্যাট দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটনের বিজয়ের আভাস প্রকাশিত হলেও, নির্বাচনে তিনি পরাজিত হয়েছেন। অপরদিকে নির্বাচনপূর্ব অধিকাংশ জরিপে ডোনাল্ড ট্রাম্প পিছিয়ে থাকলেও এবং বিতর্কিত বিভিন্ন মন্তব্যের জন্য বেশ বিতর্কিত হলেও নির্বাচনে তিনিই বিজয়ী হয়েছেন। এমনকি রিপাবলিকান দলের শীর্ষ নেতারা ট্রাম্পের বিপক্ষে অবস্থান করা সত্ত্বেও ট্রাম্পই বিজয়ী হয়েছেন। বরাবরই আমার বিশ^াস ছিল, হিলারি নয় বরং ট্রাম্পই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হবেন। বাস্তবেও সেটাই ঘটেছে। মূলত এই নির্বাচনে মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের আদিকাল থেকে চলে আসা কিছু রীতি বহাল রয়েছে। প্রথমত যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে আজ পর্যন্ত কোনো নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়নি। এবারও সেটার ব্যতিক্রম হয়নি। অপরদিকে ১৭৭৬ সালের ৪ জুলাই ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জনকারী যুক্তরাষ্ট্রের ২৪০ বছরের ইতিহাসে ডেমোক্র্যাট বা রিপাবলিকান কোনো দলই পরপর তিনবার প্রেসিডেন্ট পদে বিজয় লাভ করেনি। এবারও সেই নিয়ম অপরিবর্তনীয় রয়েছে। তার মানে যুক্তরাষ্ট্রের লোকজন ঐতিহ্যপ্রিয় এবং তারা ঐতিহ্য ধরে রেখেছেন। এদিকে ৭০ বছর বয়সে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। কারণ অতীতে এত বেশি বয়সে কেউ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়নি। একইভাবে তিনি আগে কখনও কংগ্রেসম্যান বা সিনেটর ছিলেন না। সরাসরি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্পের বিজয় এবং প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব গ্রহণ করার পর থেকেই তার শাসনামল কেমন হবে, তা নিয়ে চুলচেরা বিশ্লেষণ চলছে। আর অধিকাংশ বিশ্লেষণেই ট্রাম্পের শাসন নিয়ে দুশ্চিন্তা প্রকাশিত হয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র নীতির একজন গবেষক এবং বিশ্লেষক হিসাবে এ কথা আমি দৃঢ়তার সাথে বলছিÑ ট্রাম্পকে নিয়ে দুশ্চিন্তা করে কোনো লাভ নেই। কারণ ব্যক্তি এবং দলের পরিবর্তনে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতির তেমন কোনো পরিবর্তন হয় না। দৃষ্টির গভীরতা আর দৃষ্টির প্রসারতা দিয়ে দেখলে বিষয়টি সবার কাছেই পরিষ্কার হবে।
ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তার রয়েছে বিশাল এক ব্যবসার সা¤্রাজ্য। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও পৃথিবীর অনেক দেশেই তার ব্যবসা-বাণিজ্য রয়েছে। রয়েছে বিশাল নেটওয়ার্ক। তিনি এখন পৃথিবীর একক পরাশক্তি এবং ৯৬ লাখেরও বেশি বর্গকিলোমিটার আয়তনবিশিষ্ট পৃথিবীর চতুর্থ বৃহত্তম এ দেশটির ৩০ কোটি জনগণের রাষ্ট্রপতি। স্বাভাবিকভাবেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি। তার ইশারায় বিশ্ব নড়ে এবং তার নির্দেশেই বিশ্ব চলে। এক্ষেত্রে তাকে বাধা দেয়ার শক্তি কারো নেই। সুতরাং তার ইচ্ছাতেই অশান্তি এবং তার ইচ্ছাতেই শান্তি। তার ইচ্ছাতেই দেশে দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রাজতন্ত্র আবার তার ইচ্ছাতেই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দখলদারিত্ব। সুতরাং বিশ্বে শান্তি, গণতন্ত্র এবং সম্প্রীতির প্রতিষ্ঠায় তার দায়িত্ব সবচেয়ে বেশি। একইভাবে বিশ্বে অশান্তি এবং হানাহানি সৃষ্টির জন্য তিনিই বেশি দায়ী। আর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, সেখানকার শাসনের গতিপ্রকৃতি এবং পররাষ্ট্রনীতি একটি নির্দিষ্ট নীতিতে পরিচালিত হয় বিধায় আগের দল বা ব্যক্তির গৃহীত পদক্ষেপ পরবর্তী দল বা ব্যক্তির আমলেও অব্যাহত থাকে। ফলে ফরেন পলিসিতে তেমন কোনো পরিবর্তন আসে না এবং বিশ^ব্যবস্থা আগের মতোই চলে। তাই যুক্তরাষ্ট্রে কোন দল ক্ষমতায় এলো এবং প্রেসিডেন্ট পদে কে অধিষ্ঠিত হলো তা নিয়ে চিন্তা এবং গবেষণা না করে আমাদের উচিত হবে নিজেদেরকে অধিকতর যোগ্য এবং শক্তিশালী করে তোলা। আর এর মাধ্যমেই কেবল নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন এবং ভাগ্য উন্নয়ন সম্ভব। কারণ শক্তি হচ্ছে শান্তি এবং নিরাপত্তার গ্যারান্টি। আসুন এবার বাস্তবতার নিরিখে বিষয়গুলোকে একটু পর্যালোচনা করি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ সমাপ্তির ৭০ বছরেরও বেশি সময় পার হয়েছে। কিন্তু সেই ১৯৪৫ সালে জাপান, জার্মানি ও ইতালির পরাজয়ের পর যুদ্ধবিধ্বস্ত সেইসব দেশ পুনর্গঠন ও নিরাপত্তার নামে মার্কিনিরা সেখানে যে সৈন্য মোতায়েন এবং ঘাঁটি করেছিল- তা কিন্তু এখনো বহাল আছে এবং সেই সৈন্য প্রত্যাহারের আদৌ কোনো সম্ভাবনা নেই। ১৯৭৩ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের আগে সমগ্র আরব জাহানে, এমনকি সমগ্র মুসলিম বিশ্বের কোনোদেশেই একজন মার্কিন সৈন্যও ছিল না। কিন্তু আজ ১৬টি মুসলিম দেশে মার্কিন সৈন্যদের ঘাঁটি রয়েছে। এসব দেশ হচ্ছে বাহরাইন, কুয়েত, জর্ডান, কাতার, সৌদি আরব, ওমান, আরব আমিরাত, ইয়েমেন, জিবুতি, মিসর, তুরস্ক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান, উজবেকিস্তান, তাজিকিস্তান ও ইরাক। ১৯৯১ সালে কুয়েত মুক্তির নামে এবং সাদ্দামের হাত থেকে সৌদি আরব, কুয়েত, কাতার, বাহরাইন, আমিরাত প্রভৃতি দেশকে তথাকথিত রক্ষার নামে সেই সব দেশে মার্কিনিরা তখন যে সৈন্য মোতায়েন ও সামরিক ঘাঁটি প্রতিষ্ঠা করেছিল, কুয়েত মুক্তির ২৫ বছর পেরিয়ে গেলেও এমনকি তথাকথিত তাদের সেই ভয়ের উৎস সাদ্দাম হোসেনকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করে ফাঁসি দিলেও মার্কিনিরা কিন্তু সেসব দেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না। অথচ আজ তো সাদ্দাম নেই। একইভাবে কিউবা এবং ল্যাটিন আমেরিকার প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের বৈরী নীতির কোনো পরিবর্তন হয়নি। রাশিয়া এবং চীনের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুতাও কমেনি। ৭০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ইসরাইলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের অকুণ্ঠ সমর্থন অব্যাহত আছে। ফলে ফিলিস্তিন সমস্যার সমাধান হয়নি। এই দীর্ঘ সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় বিভিন্ন ব্যক্তিরা এসেছে। কিন্তু ফলাফল একই। ওবামার আমলেও ইরাক-আফগানিস্তানে দখলদারিত্ব অব্যাহত ছিল। গুয়ানতানামো কারাগারও বন্ধ হয়নি। অধিকন্তু ওবামার শাসনামলেই সিরিয়ার গৃহযুদ্ধে পাঁচ লাখ মানুষের প্রাণহানি এবং চল্লিশ লাখ মানুষ উদ্বাস্তু হয়েছে। লিবিয়ায় ন্যাটোর নেতৃত্বে সামরিক আগ্রাসন পরিচালিত হয়েছে। লিবিয়ার নেতা গাদ্দাফীকে হত্যা করা হয়েছে। লিবিয়া আজ বহু খ-ে বিভক্ত একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র। মিসরের নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত এবং সেনাবাহিনীর বর্বর নির্যাতন সবই ওবামার শাসনামলেই হয়েছে। ওবামার আমলেই ইয়েমেনে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়েছে। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন ওবামার আমলেও অব্যাহত ছিল, এখনও আছে। তাহলে ওমাবার আমলেও তো বিশে^ শান্তি প্রতিষ্ঠা হয়নি। অতএব শুধু শুধু ট্রাম্পের সমালোচনা করে তো কোনো লাভ নেই।
যে সমস্ত মানুষ ট্রাম্পের বিজয়ে বিশ্বে অশান্তি বাড়ার দুশ্চিন্তায় উদ্বিগ্ন, তাদেরকে বলছি- আপনাদের অহেতুক টেনশন করার দরকার নেই। আর এতে কোনো লাভও নেই। যুক্তির খাতিরে ধরে নিলাম, ডোনাল্ড ট্রাম্প একজন অত্যন্ত খারাপ মানুষ। অতএব, তিনি বিশ্বে আগ্রাসন এবং যুদ্ধ ছড়িয়ে দেবেন। তিনি বিশ্বে হানাহানি শুরু করবেন এবং অশান্তির আগুন ছড়িয়ে দেবেন। কিন্তু ট্রাম্প যদি যুদ্ধবিগ্রহ বাঁধিয়ে দেন তাহলে সেটা তো নতুন কিছুই নয়। কারণ পৃথিবীর দেশে দেশে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন তো চলছেই। বছরের পর বছর ধরে সেটা প্রবাহমান। বাস্তবতা হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে মূলত তেমন কোনো পার্থক্য নেই। তাই তাদের ক্ষমতারোহণ এবং ক্ষমতা থেকে বিদায়ে বিশ্বের রাজনীতিতে কোনো প্রভাব পড়ে না। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ২৪০ বছরের ইতিহাসকে যদি পর্যালোচনা করি তাহলে দেখা যাবে এর প্রায় অর্ধেক সময় শাসন করেছে রিপাবলিকানরা এবং বাকি অর্ধেক সময় শাসন করেছে ডেমোক্র্যাটরা। কিন্তু উভয়ের শাসনামলেই যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি একই ছিল। সাম্রাজ্যবাদ ও আধিপত্যবাদ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে উভয়ের পলিসি একই। কয়েকটি উদাহরণ দিলে বিষয়টি পরিষ্কার হবে। সেই ১৯৪৭ সাল থেকেই ইসরাইল-ফিলিস্তিনিদের ওপর দমন নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এই নির্যাতনের পরিমাণ ডেমোক্র্যাট আর রিপাবলিকান উভয়ের শাসনামলেই সমান। প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে সবচেয়ে উদারপন্থি হিসাবে বিবেচিত ছিলেন। অথচ তার আমলেও ফিলিস্তিনিদের প্রতি মার্কিন আচরণ একই ছিল এবং ফিলিস্তিনের বিপক্ষে ও ইসরাইলের পক্ষে জাতিসংঘে সবসময় ভেটো প্রয়োগ করেছিল। ক্লিনটনের শাসনামলেই বসনিয়ার মুসলমানদের বিরুদ্ধে সার্বরা চালিয়েছিল ভয়াবহ নির্যাতন এবং হত্যাকা-, যাতে কয়েক লাখ নিরাপরাধ মুসলমান মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করেছিল। সেদিন কিন্তু নিরাপরাধ মুসলমানদেরকে বাঁচাতে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপ কেউই এগিয়ে আসেনি। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্ট সিনিয়র বুশ কুয়েত উদ্ধারের নামে ১৯৯১ সালে ইরাকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করেন এবং সেই সময় কুয়েত এবং সৌদি আরবসহ আরো কয়েকটি উপসাগরীয় মুসলিম দেশে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক ঘাঁটি গাড়েন। পরবর্তীতে ডেমোক্র্যাটরা ও তার নেতা ক্লিনটন আট বছর যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত থাকলেও কিন্তু কুয়েতসহ এসব উপসাগরীয় দেশ থেকে সৈন্য প্রত্যাহার করেনি, ঘাঁটিও বন্ধ করেনি। বরং সেখানের ঘাঁটিসমূহকে মজবুত করেছে। পাকিস্তান এবং ইরানের পরমাণু কর্মসূচির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান বরাবরই এক। ইসরাইলকে সমর্থনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানও বরারবই এক। তাহলে রিপাবলিকান এবং ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে মৌলিক পার্থক্যটা কোথায়? এবং প্রকৃতপক্ষে কোনই পার্থক্য নেই। সুতরাং রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের যেই ক্ষমতায় আসুক না কেন এবং ব্যক্তি হিসেবে যেই প্রেসিডেন্ট হউক না কেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রনীতি অপরিবর্তনীয়। আর ট্রাম্পের অভিবাসী এবং মুসলিমবিরোধী নীতি দেখে উদ্বেগ প্রকাশ করে তো লাভ নেই। কারণ মুসলমানদেরকে সন্ত্রাসী বলা, হিজাবকে কটাক্ষ করা, মুসলিম দেশগুলোতে আগ্রাসন, মুসলমানদেরকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি এবং ইসরাইলের প্রতি একনিষ্ঠ সমর্থনÑ সবই তো আগের প্রেসিডেন্টগুলোর আমল থেকে চলমান। পার্থক্য শুধু এটাই ট্রাম্পের আগের প্রেসিডেন্টরা সরাসরি মুসলিমবিরোধী কথা বলেননি, আর ট্রাম্প সেটা বলছেন। কিন্তু কাজের বেলায় সবাই সমান। এটাই হচ্ছে বাস্তবতা।
সুতরাং ট্রাম্পের বিজয় এবং ক্ষমতায় আরোহণে পৃথিবীতে অশান্তি ছড়িয়ে পড়বেÑ এমনটি না ভেবে আমাদের উচিত হবে আগামীতে পৃথিবীর নেতৃত্ব দেয়ার জন্য নিজেদেরকে তৈরি করা। আর মুসলমানদের উচিত হবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরতা কমিয়ে নিজেদের মধ্যে ঐক্য এবং সংহতি প্রতিষ্ঠা করা। তাহলে আর কোনো সমস্যা থাকবে না এবং আপনার সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করতে হবে না। কারণ আপনার যখন শক্তি থাকবে তখন সবাই আপনাকে স্যালুট করবে। আর যখন দুর্বল থাকবেন তখন সবাই আপনাকে লাথি মারবে। সুতরাং শক্তি অর্জন করুন এবং সামনের দিকে এগিয়ে যান। যুক্তরাষ্ট্রের বৈরিতা সত্ত্বেও অনেক দেশ কিন্তু নিজেদেরকে যোগ্য করার মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে। চীন, ইরান, উত্তর কোরিয়া, কিউবা, সুদান, ইকুয়েডর, ভেনিজুয়েলা, ভিয়েতনামসহ অনেক রাষ্ট্রই তার বাস্তব উদাহরণ। সুতরাং ট্রাম্পের শাসনামল কেমন হবে, তার শাসনামলে বিশে^ অশান্তি বাড়বেÑ এসব চিন্তা মাথায় নিয়ে টেনশন না বাড়িয়ে বরং নিজের এবং নিজের দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করুন। ট্রাম্পকে নিয়ে না ভেবে নিজেকে নিয়ে ভাবুন। আর এর মাধ্যমে শক্তি অর্জন করুন এবং আগামীদিনের জন্য নিজেদেরকে যোগ্য এবং শক্তিশালী করে গড়ে তুলুন। তাহলেই কেবল বিশ^ব্যাপী শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা করা সম্ভব।
লেখক : প্রকৌশলী ও কলামিস্ট
omar_ctg123@yahoo.com

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন