শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

সামরিক সহযোগিতা ও তিস্তা চুক্তি

প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরে আলোচনায়

| প্রকাশের সময় : ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১২:০০ এএম

কূটনৈতিক সংবাদদাতা : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফর চূড়ান্ত। বাংলাদেশ এবং ভারত উভয় তরফ থেকেই এ নিয়ে এখন শেষ প্রস্তুতি চলছে। এ সফরের উপর বিশেষ দৃষ্টি রয়েছে চীনের। ভারতের পক্ষ থেকে বাংলাদেশকে ৪০টি চুক্তির বিষয়ে খসড়া সরবরাহ করলেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং ভারতীয় গণমাধ্যম সূত্রে জানা যাচ্ছে, এই সফরে ভারতের সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় ২৪টি চুক্তি, সমঝোতা স্মারক ও দলিল সই হতে পারে। তবে পররাষ্ট্র সচিব বলেছেন এবারে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কোন চুক্তি হবে না। সবগুলোই হবে এমওইউ।
এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশী আলোচনা চলছে তিস্তার পানি বণ্টন এবং সামরিক সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা স্মারক নিয়ে। সরকার এবং বিরোধীদের পক্ষে এ নিয়ে পাল্টাপাল্টি যুক্তি উপস্থাপন চলছে। সম্ভাব্য এসব চুক্তি নিয়ে অনেকে উদ্বেগও ব্যক্ত করেছেন। বাংলাদেশ ও ভারতের কূটনীতিক মহল অবশ্য এই প্রস্তাবিত চুক্তির বিষয় নিয়ে বিস্তারিত কিছুই বলছে না। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী এ সফর নিয়ে বলেছেন, এ সফর যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তেমনই স্পর্শকাতর। তাই এ সাবধানতা। অবশ্য বিরোধীদের পক্ষ থেকে এসব চুক্তি ও সমঝোতার মাধ্যমে দেশের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে বলে বলা হচ্ছে। তাই চুক্তির বিষয়গুলো প্রকাশ করে এ নিয়ে জনগণের মতামত এবং রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার উপরও তারা জোর দেন।
কিন্তু বাংলাদেশের ওপর চীনের ক্রমবর্ধমান সামরিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব এবং স¤প্রতি চীনের কাছে থেকে দুইটি সাবমেরিন কেনার পর ভারত বিচলিত হয়ে পড়ে। এর আগে ভারতের আপত্তির কারণেই কক্সবাজারের সোনাদিয়ায় চীনের অর্থায়নে প্রস্তাবিত গভীর সমুদ্র বন্দর স্থাপনের পরিকল্পনা থেকে বাংলাদেশ সরে আসে। এছাড়া গত অক্টোবরে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ঢাকা সফরকালে স্বাক্ষরিত ২৫ বিলিয়ন ডলারের ২৭টি চুক্তি সই ভারতের উদ্বেগকে অনেক বাড়িয়ে দেয়। আর তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকে বিশেষভাবে কাজে লাগাতে ব্যস্ত ভারত। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, প্রধানমন্ত্রীর আসন্ন ভারত সফরে তিস্তার পানি বণ্টন, গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্প, জলসীমায় সামরিক শক্তি বৃদ্ধি, গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির মেয়াদ বৃদ্ধি, ভারতের ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরণ, দুই দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য স¤প্রসারণ, পাট ও পাটজাত পণ্যের উপর ভারতের আরোপ করা এন্ট্রি ডাম্পিং শুল্ক প্রভৃতি বিষয় গুরুত্ব পাবে। এছাড়া দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকে হাইটেকনোলজি, স্পেস, আইটি, ইলেক্ট্রনিক্স, সিকিউরিটি ও সিভিল নিউক্লিয়ার এনার্জি বিষয়গুলো স্থান পাবে।
ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ঢাকা সফরকালে বাংলাদেশের জলসীমায় কোস্টগার্ডকে আরো শক্তিশালী করার ব্যাপারে ভারত সহযোগিতা করতে আগ্রহী বলে জানিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সফরে এ বিষয়ে একটি সমঝোতা হতে পারে বলে জানা গেছে। এছাড়া বাণিজ্য স¤প্রসারণের বিষয়েও বিভিন্ন চুক্তি ও সমঝোতা হবে। প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের অংশ হিসেবে গত ১৩ মার্চ ভারতীয় হাইকমিশনে দেশের অন্তত ৩০ জন ব্যবসায়ীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার।
ভারতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহারে চুক্তি হবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই সফরে। বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর চট্টগ্রাম ছাড়াও মংলা সমুদ্রবন্দর ব্যবহার, পায়রা বন্দরে মাল্টিপারপাস (কন্টেইনার) টার্মিনাল নির্মাণ, লাইটহাউজেস ও লাইটশিপস, কোস্টাল ও প্রটোকল রুটে যাত্রী এবং ক্রুজ সার্ভিস সংক্রান্ত বিষয়ে দু’দেশের সচিব পর্যায়ের বৈঠকে যে সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত হয়েছে, এবার তা চুক্তি হিসেবে রূপ নিতে পারে। এক্ষেত্রে ভারতের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, বন্দর ব্যবহারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী লেভি পাবে বাংলাদেশ। শুল্ক ও বন্দরের চার্জও ভারত দেবে। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলে তৃতীয় সমুদ্র বন্দর পায়রায় ভারতের ‘ইন্ডিয়ান পোর্ট গ্লোবাল’ নামে একটি সংস্থা টার্মিনাল বানাবে। এ ছাড়াও ভারতের আরও কয়েকটি বেসরকারি সংস্থা পায়রা বন্দরে টার্মিনাল নির্মাণে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্যাসেঞ্জার ক্রুজ সার্ভিস জাহাজ চালাচলের বিষয়েও আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছে।
তবে বিবিসি’র এক প্রতিবেদনে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা চুক্তির আওতায় কী রয়েছে, সে নিয়ে ভারতীয় সাংবাদিক ও বিশ্লেষক সুবীর ভৌমিক বিবিসিকে বলেন, সামরিক ক্ষেত্রে আরো বাড়তি যোগাযোগ, প্রশিক্ষণ ইত্যাদি- এসব ব্যাপারে দু’দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ স্থাপন করা সেটা একটা ব্যাপার। দু’নম্বর হচ্ছে, ভারত চাইছে যে ভারতের কাছ থেকে বেশি পরিমাণে বিভিন্ন অস্ত্রশস্ত্র কেনা হোক।
বর্তমানে বাংলাদেশে বেশিরভাগ অস্ত্র চীন থেকে কেনে- ভারত সেই জায়গাতে ঢুকতে চাইছে। আর তিন নম্বর যেটা সেটা হচ্ছে, কিছু কিছু সন্ত্রাসবাদী তৎপরতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে প্রয়োজন হলে যৌথ অভিযান বা সম্মিলিত অভিযান চালানো- সেরকম একটা সুযোগ তৈরি করার একটা ব্যাপার এ চুক্তির মধ্যে ভারত রাখতে চাইছে।
গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে উল্লেখ আছে চুক্তির মেয়াদ হবে ২৫ বছর, আর এর আওতায় বাংলাদেশকে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার বা প্রায় চার হাজার কোটি টাকা ঋণ দেয়ারও প্রস্তাব আছে ভারতের। দীর্ঘমেয়াদী ওই চুক্তি করতে ভারত বিশেষভাবে আগ্রহী। কিন্তু প্রশ্ন হলো- ভারত কেন এরকম চুক্তি করতে চায়? এ নিয়ে সুবীর ভৌমিক বলেন, ভারতের যে সমস্যাগুলো তার একটা হচ্ছে অভ্যন্তরীণ প্রতিরক্ষার সমস্যা, আর দ্বিতীয় হচ্ছে চীন। এটা মাথায় রেখেই এ ধরনের একটা ডিফেন্স কো-অপারেশন প্যাক্ট ভারত করতে চাইছে, বিশেষ করে নর্থ-ইস্টার্ন রিজিয়নে তার কৌশলগত স্বার্থ রক্ষার জন্য।
তবে প্রতিরক্ষা চুক্তির বিষয়টি নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে জানতে চাইলে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিব মোঃ শহীদুল হক বলেন, যখন ভিজিট হবে, তখনই আপনারা জানবেন যে কী কী চুক্তি হলো।
প্রতিরক্ষার বিষয়টি আলোচনার মধ্যে আছে কি-না এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব কিছুই আলোচনার মধ্যে আছে। প্রতিরক্ষা সবসময়ই আলোচনার মধ্যে ছিল।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে কতগুলো বিষয়ে চুক্তি হতে পারে জানতে চাইলে শহীদুল হক বলেন, দু’দেশের মধ্যে বিভিন্ন জিনিস নিয়ে আলাপ-আলোচনা হচ্ছে, আর সেগুলো সবগুলোই অলমোস্ট এমওইউ (সমঝোতা স্মারক)। দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কের পরিধি এত বেশি যে মোটামুটি সব জিনিস নিয়েই আলোচনা হবে। বেশ কিছু সংখ্যক এমওইউ হবে। চুক্তি না।
সামরিক বাহিনীর সংশ্লিষ্টতা থাকায় সার্বিক বিচারে প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত যে কোনো চুক্তি বা সমঝোতা বাংলাদেশের জন্য খুবই স্পর্শকাতর বলে মনে করেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল জামিল ডি. আহসান। তার মতে, প্রতিটা দেশেরই সামরিক নীতি থাকে। এগুলো নিজস্ব এবং গোপনীয় বিষয়। তাই প্রতিরক্ষা বিষয়টি বা প্রতিরক্ষা চুক্তি যেমন স্পর্শকাতর, তেমনি ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্কটাও কিন্তু স্পর্শকাতর।
সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করে জানা গেছে, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা আগে থেকেই ছিল। এর আওতায় দুই দেশের সেনাবাহিনী যৌথ মহড়ায় অংশ নিয়েছে। সামরিক বাহিনীর উচ্চপর্যায়ে সফর বিনিময় হয়েছে। এখন এমওইউ’র মাধ্যমে দুই দেশের সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর মধ্যে যোগাযোগ আরো নিবিড় হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের সামরিক বাহিনী প্রশিক্ষণ খাতে একে অপরকে সহযোগিতা দিতে পারবে। সমরাস্ত্র ক্রয়ের ক্ষেত্রেও এ সহযোগিতা সম্প্রসারিত হতে পারে।
কর্মকর্তারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের সাথে বাংলাদেশের এ ধরনের সামরিক সহযোগিতা রয়েছে। প্রতিরক্ষা সংলাপের আওতায় এ সহযোগিতাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেয়া হয়েছে। প্রতি বছর দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে প্রতিরক্ষা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীর সদস্যরা প্রশিক্ষণের জন্য যুক্তরাষ্ট্র যায়। আবার যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী যৌথ মহড়ায় অংশ নেয়ার জন্য বাংলাদেশে আসে। বাংলাদেশের নৌবাহিনীর জন্য যুক্তরাষ্ট্র যুদ্ধজাহাজ ও কোস্টগার্ডের জন্য উচ্চগতির নৌযান সরবরাহ করেছে। জলদস্যুদের বিরুদ্ধে সাগরে ও স্থলভাগে অভিযান চালাতে পারে- নৌবাহিনীর এমন একটি দলকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র সর্বশেষ প্রতিরক্ষা সংলাপ গত ৫ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের হাওয়াইতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সামরিক খাতে দুই দেশের সহযোগিতা গভীর ও শক্তিশালী করা, শান্তিরক্ষী বাহিনীর কার্যক্রমে অংশীদারিত্ব বাড়ানো, যৌথ সামরিক মহড়া ও সন্ত্রাসদমন নিয়ে আলোচনা হয়। এ ছাড়া লজিস্টিক সাপোর্ট চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দেয়া একটি প্রস্তাব নিয়ে এতে আলাপ হয়েছে।
তবে ভারতের সাথে প্রস্তাবিত প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত এমওইউতে ঠিক কী কী বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে- এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য পাওয়া যায়নি। সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ ইস্যুটি নিয়ে কাজ করছে। আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকেও এ সংক্রান্ত তথ্য বিনিময় করা হয় না। এমনকি ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলাও গত সোমবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি বা এমওইউ’র সম্ভাবনা সম্পর্কে কিছু জানেন না বলে জানান।
উল্লেখ্য, ১৯৭২ সালের মার্চে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বন্ধুত্ব, সহযোগিতা ও শান্তি চুক্তি সই হয়েছিল। বাংলাদেশের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ মুজিবুর রহমান ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধি সে চুক্তিতে সই করেছিলেন। ২৫ বছর মেয়াদি ওই চুক্তিতে সামরিক বিষয়াদি অন্তর্ভুক্ত থাকায় পরবর্তী সময়ে তা নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। চুক্তির ৯ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছিল, চুক্তিতে সই করা পক্ষদ্বয় তৃতীয় কোনো পক্ষকে পরস্পরের প্রতি সশস্ত্র সংঘাতে সহায়তা দেয়া থেকে বিরত থাকবে। যদি কোনো পক্ষ আক্রান্ত হয় বা আক্রমণের ঝুঁকিতে থাকে, তবে চুক্তিতে স্বাক্ষরকারী পক্ষদ্বয় ঝুঁকি মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে তাৎক্ষণিকভাবে সংলাপে বসবে এবং পরস্পরের দেশে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখবে।
পরবর্তী সময়ে চুক্তিটির মাধ্যমে বাংলাদেশের ওপর ভারতের অতিরিক্ত প্রভাব বিস্তারের সুযোগ রাখা হয়েছে, যা অন্যায্য- এই বিবেচনায় বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ১৯৯৭ সালে ২৫ বছর মেয়াদি এ চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়। সে সময় শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকলেও বাংলাদেশ ও ভারত চুক্তিটি নবায়ন না করার সিদ্ধান্ত নেয়।
এদিকে প্রধানমন্ত্রীর দিল্লী সফরের প্রস্তুতি হিসেবে গত ডিসেম্বরে ভারতের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পারিকর ঢাকা সফরকালে প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রস্তাব দেন। বাংলাদেশ বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবে বলে তাকে জানানো হয়। এরপর ফেব্রæয়ারিতে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব এস জয় শঙ্কর প্রতিরক্ষা চুক্তির পরিবর্তে এমওইউ’র প্রস্তাব দেন।
গত সপ্তাহে দুটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে যোগ দিতে দিল্লী যান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বলার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে শেখ হাসিনার আসন্ন সফরের জন্য হোমওয়ার্কও শুরু করে দিয়েছে দিল্লী। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল যাদের আমন্ত্রণে দিল্লীতে সন্ত্রাসবাদবিরোধী সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন, সেই ‘ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন’কে বর্তমান বিজেপি সরকারের আমলে ভারতের সবচেয়ে প্রভাবশালী থিংকট্যাঙ্ক বলে গণ্য করা হয়। যার সাথে বিজেপি তথা আরএসএসের প্রভাবশালী  সিনিয়র নেতারা যুক্ত। দিল্লীতে তার সঙ্গে আলাপচারিতায় ভারতের মন্ত্রিরা একটা কথাই বুঝতে চেয়েছেন, আর তা হলো জঙ্গিবাদ দমনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে সহযোগিতাকে ঠিক কতদূর নিয়ে যেতে রাজি।
ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতা বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সাহায্যের কথা ইন্ডিয়া ফাউন্ডেশন নেতৃবৃন্দ স্বীকার করেন অকুণ্ঠে। কিন্তু সেই সহযোগিতাকে এখন অন্যান্য ক্ষেত্রেও এগিয়ে নেয়ার সময় এসেছে বলে দিল্লীতে অনেকের অভিমত। আর শেখ হাসিনার সফরের ঠিক আগে সেই জিনিসটাই তারা ঝালিয়ে নিতে চেয়েছেন বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছ থেকে। সেই বোঝাপড়া প্রত্যাশিত গতিতে এগোলে অদূর ভবিষ্যতে শুধু গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ই নয়, ভারত ও বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী জঙ্গি দমনে একযোগে কাজ শুরু করতে পারে। এমনকি চালাতে পারে যৌথ অভিযানও।
সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমও ভারতের রাজধানীতে এ সময় ছিলেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আয়োজিত এক সম্মেলনে যোগ দিতে। বিজেপি ও তাদের আদর্শগত অভিভাবক আরএসএস- দুটোতেই অত্যন্ত প্রভাবশালী বলে পরিচিত ভারতের বর্তমান স্বাস্থ্যমন্ত্রী জগৎ প্রকাশ নাড্ডা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ’রও খুবই আস্থাভাজন এবং তার সঙ্গে মোহাম্মদ নাসিমের কথাবার্তাতেও যথারীতি ছায়া ফেলেছে শেখ হাসিনার আসন্ন ভারত সফর।
বিজেপির এক সিনিয়র কেবিনেট মন্ত্রী সংবাদমাধ্যমকে বলেন, শেখ হাসিনার আসন্ন সফর এর আয়োজনের হোমওয়ার্ক হিসেবেই আমরা বাংলাদেশের সফররত দুই মন্ত্রীর সঙ্গে কথাবার্তা বলে কিছুটা কাজ এগিয়ে রাখলাম!
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরব রয়েছে বিরোধী দল বিএনপি। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ভারতের সঙ্গে যেকোনো চুক্তির আগে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের আলোচনা করা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, যে চুক্তির কথা আমরা শুনতে পাচ্ছি, এই চুক্তি দেশের জন্য, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকিস্বরূপ।
দলটির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভারতের সামরিক অস্ত্রভান্ডার সেকেলে, আধুনিক প্রযুক্তি থেকে অনেক দূরে, এগুলো মানসম্মত নয়। তাছাড়া ভারত নিজেই হচ্ছে সামরিক সরঞ্জাম আমদানিকারক দেশ। সেই ভারত কী ধরনের সমরাস্ত্র বাংলাদেশে রফতানি করবে, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।
প্রতিরক্ষা চুক্তির প্রস্তাব দেয়ার পেছনে ভারতের অন্য উদ্দেশ্য আছে। ভারতের কাছ থেকে সামরিক হার্ডওয়্যার আমদানি করলে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা হবে ভারতীয় প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার এক্সটেনশন মাত্র। এই চুক্তি হলে ভারত অস্ত্র কেনার শর্তে বাংলাদেশকে ৫০ কোটি মার্কিন ডলার লাইন অফ ক্রেডিট দেবে। অর্থাৎ এই অর্থ দিয়েই ভারত থেকে অস্ত্র কিনতে হবে। এটি ভারতের ‘কৈ এর তেল দিয়ে কৈ ভাজা’র চানক্য নীতি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্য উদ্ধৃত করে রিজভী বলেন, ভারতের সঙ্গে অতীতে দেশবিরোধী ট্রানজিট, করিডোর ছাড়াও আপনারা আরও গোপনীয় ৫০টি চুক্তি সম্পাদন করেছিলেন। ওইসব চুক্তির কথা আজও জনগণ জানতে পারেনি। তিনি আরো বলেন, ভারতের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হলেও তা চুক্তি সম্পাদনের পথে একটা বাধ্যবাধকতা তৈরি করবে। তাই বাংলাদেশ সরকারের জন্য সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষরও হবে বিপজ্জনক।  
তবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে সার্বভৌমত্ব সমুন্নত রেখে যে চুক্তি জনগণের জন্য প্রয়োজন সেটাই করবেন। সেখানে গোপনে কোন চুক্তি হবে না।
গত বৃহস্পতিবার ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পানিসম্পদমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তি নিয়ে তার রাজ্যের অবস্থান স্থিতিশীল। তিনি বলেন, তিস্তা চুক্তি নিয়ে এখনো পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের পক্ষে পজিটিভ কিংবা নেগেটিভ কোনো ভাবনাই ভাবা হয়নি। তিস্তা চুক্তি হলে পশ্চিমবঙ্গ লাভবান না ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সে ব্যাপারেও কোনো মন্তব্য করতে চাননি তিনি।
কিন্তু রংপুরে তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, ভারত তাদের উজানে গজল ডোবা ও সিকিমসহ বিভিন্ন স্থানে তিস্তা নদীর ওপর বেশ কিছু বাঁধ নির্মাণ করায় তিস্তা নদীর পানিপ্রবাহ একেবারে কমে গেছে। প্রমত্তা তিস্তা এখন মরা খালে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তিস্তা নিয়ে চুক্তি করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। কিন্তু কিসের ভিত্তিতে এ চুক্তি হচ্ছে তা আগে দেশের জনগণকে জানাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ভারত যদি আগেভাগেই নদীর ৫০ থেকে ৬০ ভাগ পানি প্রত্যাহার করে নেয়, আর তারপর অবশিষ্ট ৪০ ভাগ নিয়ে চুক্তি হয়, তবে তা রংপুরসহ উত্তরাঞ্চলের কোটি কোটি মানুষের স্বার্থের পরিপন্থী হবে।
ভারতের হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, সফরে প্রধানমন্ত্রীকে বিরল সম্মাননা দেবে দিল্লী। তিনি বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ অনেক কমন বিষয় শেয়ার করে। দুই দেশই লাভবান হয় এ রকম বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে। আলোচনায় স্থান পাবে- হাইটেকনোলজি, স্পেস, আইটি, ইলেক্ট্রনিক্স, সিকিউরিটি ও সিভিল নিউক্লিয়ার এনার্জি। আমরা সেসব বিষয়ই ফোকাস করবো যেগুলো আমাদের উন্নয়নে সাহায্য করবে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের হয়তো ধারণা, আসন্ন সফরে শুধু প্রতিরক্ষা বিষয়ে কথা হবে। মোটেও এমনটি নয়। এই খাতে এর মধ্যেই আমরা পরস্পরকে সহযোগিতা করে চলেছি।
পারস্পরিক সহযোগিতার জায়গাগুলো দেখিয়ে তিনি বলেন, রেকর্ড সংখ্যক বাংলাদেশি সামরিক কর্মকর্তা ভারতে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। পাশাপাশি ভারতীয় সেনা কর্মকর্তারাও বাংলাদেশে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। দুই দেশের আর্মি, নেভি ও এয়ারফোর্সের কর্মকর্তারা যৌথ অনুশীলনে অংশ নিচ্ছেন। এটি একটি দ্বিপাক্ষিক নিয়মিত বিষয়।
তিনি বলেন, আমরা শুধু ভালো মিটিং-ই আশা করছি না, আমরা চাই- দুই প্রধানমন্ত্রী এমন কিছু সিদ্ধান্তে আসুন যাতে দুই দেশের সাধারণ মানুষ, বিশেষ করে তরুণ সমাজ উপকৃত হবে।
উন্নয়ন কার্যক্রমের বিষয়গুলো নিয়ে তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদার হয়ে অবকাঠামোর উন্নয়ন করবে। এর মধ্যে থাকবে- বন্দর, বিমানবন্দর, সড়ক, রেল ও অন্যান্য সুবিধাগুলো।
তিনি বলেন, অর্থনৈতিক আন্তঃসংযোগের কারণে ভারতের যেমন বাংলাদেশকে ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব নয়, তেমনি বাংলাদেশেরও ভারতকে ছাড়া। এটি ভাইস-ভার্সা। পারস্পরিক সুবিধার জায়গা নিশ্চিত করে আমাদের এগুতে হবে। সাব-রিজিওনাল কো-অপারেশনের মাধ্যমে এটি অর্জন সম্ভব হবে।
তিনি জোর দিয়ে বলেন, প্রথমবারের মতো আমরা হিউম্যানেটেরিয়ান অ্যাসিসট্যান্স অ্যান্ড ডিজাস্টার রিলিফ (এইচএডিআর) কার্যক্রম হাতে নিচ্ছি। এয়ারফোর্সকে কাজে লাগিয়ে কীভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা করা যায়, এইচএডিআর সেই বিষয়টি নিয়ে কাজও নিশ্চিত করবে।
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে নরেন্দ্র মোদি ঢাকা সফরে যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, স্থলসীমা চুক্তি ছাড়া কার্যত আর কিছুই বাস্তবায়ন হয়নি। তিস্তার পানিও গড়ায়নি। অথচ তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তির বিষয়টি ২০১৮-এর শেষে হতে যাওয়া নির্বাচনে শেখ হাসিনার কাছে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক বাধ্য-বাধকতা হতে চলছে। ভারতীয় পত্রিকা আনন্দবাজারের মতে, স¤প্রতি শেখ হাসিনা বলেছেন, শুধু তিস্তা নয়, ভারত থেকে বয়ে আসা সব নদীর পানিরই ন্যায্য ভাগ চায় বাংলাদেশ।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (16)
রাসেল ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১১:০৭ এএম says : 0
কোনভাবেই ভারতের সাথে সামরিক চুক্তি করা যাবে না।
Total Reply(0)
রাকিবুল হাসান ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১১:০৮ এএম says : 0
আশা করি এবার তিস্তা সমস্যার সমাধান হবে।
Total Reply(0)
হারুন ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১১:০৮ এএম says : 0
ভারতের সাথে যেকোন সামরিক চুক্তি আত্মঘাতী হবে।
Total Reply(0)
জুনায়েদ ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১১:১২ এএম says : 0
শুধু সামরিক চুক্তি বা সহযোগিতা চুক্তিই নয়, তাদের সাথে যেকোন চুক্তি করার ক্ষেত্রে অনেক চিন্তা ভাবনা করে তারপরে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। না হলে আমরা বড় ধরনের ক্ষতির সম্মুখিন হতে পারি।
Total Reply(0)
S Alam Patowary Shams ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১১:৪২ এএম says : 0
স্বৈরাচার মেনে নিলেও পরাধীনতা মেনে নেবো না,কোনো রকম গোলামী চুক্তি হলে আর ঘরে বসে থাকবো না.
Total Reply(0)
Rahman Sadman ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১১:৪৩ এএম says : 0
সম্মান তো এমনি দিবেনা... পাওয়ার যোগ্য বলেই, তা দিবে।তবে এতে আমরা আনন্দীতও বটে তাই বলে, নিরাপত্তা অজুহাত দেখিয়ে কোন সামরিক চুক্তি আমরা মনতে রাজি নই,বা মানবো না।কারণ আমরা নেপাল বা ভূটান নই,বা আমরা আগের অবস্হানেও নেই।আজও পর্যন্ত ভারতের সাথে কোন চুক্তিতে আমাদের দেশ উপকার পায়নি।তাই আর নয়।
Total Reply(0)
Sohel Rana ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১১:৪৪ এএম says : 0
যেখানে ভারতের সেনা বাহিনি চিন পাকিস্তানের হাতে প্রতিদিন মার খায়, তাদের দেশের মাওবাদি হামলায় মরে তাদের সাথে সামরিক চুক্তি করে কতটা লাভ হবে কে জানে
Total Reply(0)
Jashim Uddin ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১১:৪৪ এএম says : 0
আশা করি শেখ হাসিনার ভারতের ফাঁদে পা দিয়ে দেশটা ধংস করবেনা,, গোলামীর শিকলও পরবেনা,,তাছাড়া সামরিক দিক থেকে তো নয়ই।
Total Reply(0)
Ahmed Moha ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১১:৪৫ এএম says : 0
Tistar dorkar nai , Desh bikri kore tista chokti koreo nezzo hissa pabena geranty ,,, Kinto samorik chokti Korar jonne tista chokti samne aseche
Total Reply(0)
Hanif Abu ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১১:৪৬ এএম says : 0
কি সহযোগিতা করবে যারা নিজেরাই বেকার
Total Reply(0)
Amanoth Ullah ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১১:৪৬ এএম says : 0
লেন্দুপ দর্জিও সম্মানিত হতেন প্রথম প্রথম তারপর...
Total Reply(0)
Emon Islam ১৮ মার্চ, ২০১৭, ১১:৪৭ এএম says : 0
ভারতের সাথে কোনো ধরনের সামরিক চুক্তি মেনে নিবো না
Total Reply(0)
Nur- Muhammad ১৮ মার্চ, ২০১৭, ২:০৮ পিএম says : 0
লেন্দুপ দর্জিকে বিরল সন্মান করলো, আর একটি স্বাধীন দেশকে তারা গ্রাস করলো। গ্রাস করার অভিজ্ঞতা তাদের আছে, এখানেই আমাদের ভয় হচ্ছে। তাই বুজে শুনে আগাতে হবে, পা পছলালে ভয়ানক বিপদে পরতে হবে।
Total Reply(0)
ওবাইদুল ইসলাম ১৮ মার্চ, ২০১৭, ৯:৩২ পিএম says : 0
কঠিন শর্তের ভারতের দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ এর বিপরীতে সহজ শর্তে চীন ঋণ দিয়েছে ২৪ বিলিয়ন ডলার । আশা করি ভারত যা দিবে চীন তার ২৪ গুণ বেশী দিবে । আর তাই সরকারের উচিৎ হবে যত বেশী পারা যায় ভারত থেকে আদায় করে নেওয়া ।
Total Reply(0)
Nur- Muhammad ১৮ মার্চ, ২০১৭, ৯:৪৯ পিএম says : 0
জানুয়ারীর নির্বাচন দেশ বিদেশ(তদের ছাড়া) কেহই সমর্থন করে নাই। তাই তারা কিছু পাবে এই ভোটারবিহীন সরকারের কাছে, এটাই সবার কাছে প্রতিয়মান হয়। দর্জিকে তারা বিরল সন্মান করলো। দর্জি জাতীর স্বাধীনতা তাদের কাছে বিকিয়ে দিল। দর্জি জাতীর সাথে বেইমানী করলো। ইতিহাস কলন্কের দাগ তার কপালে লেপে দিয়েছে। যা তার কপালে চিরদিন থাকবে। বঙ্গবন্ধুকে তারা বিরল সন্মান করলো।বঙ্গবন্ধু মাথা উচু করে সন্মানের জবাব দিল। জাতীয় স্বার্থ একচুল ও হের ফের করলো না। স্বাধীন দেশে তাদের সেনা সদস্য একদিন ও থাকতে দিলো না। গর্বিত হলো দেশ ও জাতী। গর্বিত হলো মজিব। হলো দেশ ও জাতী।জাতীর কাছে উপাধী পেল, জাতীর পিতা শেখ মজিব। তারা এখন শেখ হাসিনাকে বিরল সন্মান দিবে। হাসিনা কোন পথে যাবে, দর্জি না বঙ্গবন্ধুর পথ? ভয় আমাদের এখানে। কেন ভয়? বঙ্গবন্ধু গণতন্র গণতন্র বলে জীবন দিলো। গণভোট প্রতিষ্ট করলো। ভোটের মাধ্যমে জনগণের হাতে ক্ষমতা দিল। আর 5 জানুয়ারীর নির্বাচন হলো উল্টো করলো। জনগণকে ভোটাধিকার হতে বন্ঞ্চিত করলো। শুধু তাই নয়। বঙ্গবন্ধু আয়ুউবের মৌলিক গণতন্রের ঘোর বিরুধী ছিল, আজ সরকার এটা ফিরায়ে আনলো। তবে শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর কন্যা। তাই দেশ ও জাতীয় বিরুধী কোন চুক্তি হবে না বলে আমরা আশায় আছি। সফর শুভ হউক, স্বার্থক হউক। এই কামনা করছি।
Total Reply(0)
এস, আনোয়ার ২০ মার্চ, ২০১৭, ১:১০ পিএম says : 0
ভারত নিজেতো একাই একশো। বাংলাদেশের মতো ক্ষুদ্র দেশের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তির জন্য এতো পাগল হয়ে পড়েছে কেন? তার কিছু শত্রু বাংলাদেশকে উপহার দেবার জন্য? আসলে ধান্ধাল তার প্রতি পদে পদে ধান্ধাবাজি ছাড়া আর কিছুই বোঝেনা। দক্ষীণ এশিয়ায় একমাত্র ধুরন্ধর সন্ত্রসী ধান্ধাবাজ দেশ হলো এই ভারত। প্রতিটি প্রতিবেশী ছোট দেশের সাথে ধান্ধালি করতে করতে ধান্ধাবাজি তার সাংবিধানের বিষয় হয়ে গেছে। ১৯৭১ সাল থেকে এ যাবৎ কাল একমাত্র এই ভারতই সবচেয়ে বেশি বেঈমানী ও ধান্ধাবাজি করেছে বাংলাদেশের সাথে। সব চাইতে বেশি লুটেপুটে খেয়েছে বাংলাদেশ থেকে এবং সর্বোতভাবে বাংলাদেশের সব চাইতে বেশি ক্ষতি সাধনও করেছে এই ভারত। তবু কিসের আশায় ওই শয়তানের দ্বারস্থ হওয়া.?? সমুদ্র না থেকেও নেপাল আর ভূটান কি অস্তিত্বহীন হয়ে গেছে.?? আসলে আমরাই সাময়িক সামান্য স্বার্থ সিদ্ধির জন্য ভারতকে গুরু ধরি বলেই ভারত আমাদের মাথায় কাঁঠাল ভেঙ্গে খাবার সুযোগ পায়।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন