আধুনিক সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাগারে পরিচালিত অসংখ্য গবেষণা হতে রসুনের বিবিধ ঔষধি গুণাবলী সম্বন্ধে তথ্য পাওয়া গেছে। নি¤েœ রসুনের কতিপয় ঔষুধিগুণ বৈজ্ঞানিক তত্ত¡ ও যুক্তিসহ ব্যাখ্যা করা হলো :
রক্তের কোলেস্টেরেল নিয়ন্ত্রণ করে : লাইপোপ্রোটিন-এর অক্সিডেশান কমায় এবং এলডিএলকে অক্সিডেশান প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন করার মাধ্যমে রক্তের কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণ করে। রসুন কোষকলাও রক্তরসের মধ্যে লিপিড (চর্বি)-এর ভারসাম্যতা রক্ষা করে এবং যকৃত (লিভার)-এর ইপোক্সিডেজ এনজাইমের কার্যকারিতা বন্ধ করার মাধ্যমে রক্তরসের মধ্যে লিপিড (চর্বি)-এর ভারসাম্যতা রক্ষা করে এবং যকৃত (লিভার)-এর ইপোক্সিডেজ এনজাইমের কার্যকারিতা বন্ধ করার মাধ্যমে রক্তরসে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে।
এথেরোস্কে¬ারোসিস নিয়ন্ত্রন করে : রসুন এলডিএল-এর অক্সিডেশান কমায় ফলে ধমনীতে এথেরোস্কে¬রোসিস সৃষ্টি হয় না এবং এথেরোস্কে¬রোসিসের ফলে সৃষ্ট প্লাক-এর পরিমাণ হ্রাস পায়। গবেষণা হতে জানা যায় যে, এথেরোস্কে¬রোসিস নিয়ন্ত্রণে রসুন পুরুষ ও মহিলা উভয়ের ক্ষেত্রেই কার্যকর।
রক্তনালীতে অণুচক্রিকার জমাটবদ্ধতা নিয়ন্ত্রণ করে : রসুন রক্তনালীর অভ্যন্তরে অণুচক্রিকা কোসেল জমাটবদ্ধতা (থ্রম্বাস) প্রতিহত করে। ফলে রক্তের প্রবাহ ঠিক থাকে। আর এক্ষেত্রে রসুনের এলিসিন নামক উপাদানটি কার্যকর ভ‚মিকা পালন করে।
উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে : রসুন রক্তনালীতে জমে থাকা কোলেস্টেরল কমায় এবং নতুন করে জমতে বাধা দেয়। ফলে রক্তনালী প্রশস্ত হয় এবং রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহ হয়। এভাবে রসুন উচ্চরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।
হৃদরোগ প্রতিরোধে : রক্তের অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, এথেরোস্কে¬রোসিস ও রক্তনালীতে অনুচক্রিকার জমাবদ্ধতা (থ্রম্বোসিস) হৃদরোগ ও হার্ট অ্যাটাকের মূল কারণ। গবেষণা হতে জানা যায় যে, রসুন রক্তের কোলেস্টেরল কমায়, এথেরোস্কে¬রোসিস ও থ্রম্বোসিস প্রতিহত করে। তাই হৃদরোগ নিয়ন্ত্রণ ও হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধে রসুন এক অসাধারণ ভেষজ।
পাকস্থলি ও মলাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধে : পাকস্থলি ও মলাশয়ের ক্যান্সার প্রতিরোধে রসুন খুবই কার্যকর। সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণা হতে জানা যায় যে, যারা প্রতিদিন দেড় থেকে দুই কোয়া করে রসুন খায় তাদের পাকস্থলির ক্যান্সার ও মলাশয়ের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি যথাক্রমে ৪৭% ও ৪০% কমে যায়। গবেষণা হতে আরো জানা যায় যে, রসুন ক্যান্সার কোষসমূহের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি রোধ করার মাধ্যমে ক্যান্সার নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
আলসার প্রতিরোধ : এক প্রকার গ্রাম নেগেটিভ ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে আমাদের গ্যাস্ট্রাইটিস ও পেপটিক আলসারের সৃষ্টি হয়। সাম্প্রতিক সময়ের গবেষণা হতে জানা যায় যে, রসুনে বিদ্যমান ডাই এলাইল সালফাইড ও ডাই এলাইল সালফাইড-এর রয়েছে ব্যাকটেরিয়া ধ্বংসকারী ক্ষমতা। তাই এই ব্যাকটেরিয়াজনিত গ্যাস্ট্রাইটিস ও আলসার নিরাময়ে রসুন খুবই কার্যকর।
জীবাণু প্রতিরোধে : রসুনের রয়েছে জীবাণু (ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়া, ছত্রাক প্রভৃতি) প্রতিরোধী ক্ষমতা। শুধু তাই নয়, যেসব জীবাণু এন্টিবায়োটিক র্যাজিস্ট্যান্ট (প্রতিরোধক্ষম) হয়ে গেছে সেসব জীবাণু ধ্বংসে রসুন খুবই কার্যকর।
পুরনো জ্বরে : যখন পুরানো জ্বর ছাড়ে না, বাড়ে-কমে কিন্তু একটু থেকেই যায়, তখন ৫/৭ ফোঁটা রসুনের রসের সাথে আধা কাপ গাওয়া ঘি মিশিয়ে খেলে ২/৪ দিনের মধ্যেই জ্বর কমে যাবে।
শরীর ক্ষয়ে : খায় দায় শুকিয়ে যায়, সেক্ষেত্রে ১/২ কোয়া রসুন বেটে এক বা আধা পোয়া দুধে পাক করে সেটা খেতে হয়। এটা ক্ষয় বন্ধ হবে; অধিকন্তু আস্তে আস্তে ওজন বেড়ে যাবে।
শুক্র তারল্যে : অল্প গরম দুধের সাথে ১/২ কোয়া রসুন বাটা খেলে শুক্রতারল্য হয় না; অস্থির বল বাড়ে; অস্থির ক্ষয় হ্রাস পায় : শরীরের নিত্যক্ষয় রুদ্ধ হয়। পেটের বায়ুতে : এক্ষেত্রে ঠাÐা পানিতে ২/৪ ফোঁটা রসুনের রস মিশিয়ে খেলে উপকার পাওয়া যায়।
বাতের যন্ত্রণায় : গাওয়া ঘিয়ের সঙ্গে ২/৩ কোয়া রসুন বাটা অথবা ৫/৭ ফোঁটা রস মিশিয়ে খেলে উপকার হয়।
মাথা ধরায় : সর্দি হয় না অথচ মাথা ধরে (বায়ুর জন্য), এরকম হলে ২/১ ফোঁটা রসুনের রসের নস্যি নিলে উপকার পাওয়া যায়।
ক্ষত নিরাময়ে : ক্ষতের পচা অংশ কিছুতেই যেতে চায় না, এরূপ হলে রসুন বাটা ক্ষতে লাগালে ক্ষত নিরাময় হয়ে যাবে।
ষ ডা. আলমগীর মতি
চেয়ারম্যান, মডার্ন হারবাল গ্রæপ।
মোবাইল : ০১৯১১৩৮৬৬১৭
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন