শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ

জরাজীর্ণ ভবনে মান্ধাতা নিয়মে ঝুঁকি নিয়ে চলছে কাজকর্ম

দুপচাঁচিয়া প্রধান পোস্ট অফিসের বেহাল দশা

| প্রকাশের সময় : ২২ জুলাই, ২০১৭, ১২:০০ এএম

দুপচাঁচিয়া (বগুড়া) থেকে মোঃ গোলাম ফারুক : দুপচাঁচিয়া উপজেলা সদরের প্রধান ডাকঘরটি দীর্ঘদিন যাবত সংস্কার না করায় বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে মান্ধাতা আমলের নিয়মেই কাজকর্ম চলছে। ফলে এলাকার গ্রাহকদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। প্রকাশ, বগুড়া জেলার বৃহত্তর উপজেলার মধ্যে দুপচাঁচিয়া একটি উল্লেখযোগ্য। ব্যবসা-বাণিজ্যের দিক থেকে উপজেলাটি সু-প্রতিষ্ঠিত। একই সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থাও অত্যন্ত উন্নত। দেশের বিভিন্ন কর্মকান্ডের সাথে গতিশীল রেখে উপজেলা প্রশাসনের কাঠামোর ব্যাপক পরিবর্তনের সাথে দুপচাঁচিয়া পোষ্ট অফিসটি কাঠামোগত ব্যাপক পরিবর্তন ঘটে। ১৯৮৫ সালে ডাক বিভাগের নিজস্ব অর্থায়নে উপজেলা সদরের পূর্বপাড়াস্থ পুরাতন মাটির ডাক ভবনটি ভেঙ্গে পাকা এমারত তৈরি করা হয়। পোষ্ট অফিসের প্রশাসনিক কাজে ফিরে আসে গতিশীল। সরেজমিনে এই ডাকঘরে গিয়ে দেখা গেছে, দীর্ঘদিনের নির্মিত নতুন ভবনটির অবস্থাও করুন। ভবনটি দীর্ঘ দিন সংস্কার না করায় দেয়ালের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরেছে। ছাদের ও ছাদের বীমের প্লাস্টার উঠে গিয়ে রড গুলো কঙ্কালের মত বের হয়ে পড়েছে। অফিস সংলগ্ন পোষ্ট মাষ্টারের বাসভবনটি ইতিপূর্বে পরিত্যক্ত ঘোষনা করা হয়েছে। যা বর্তমান পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। অপরদিকে জরাজীর্ণ পোষ্ট অফিসে এই ভবনেই নিয়মিত কাজ কাম চলছে। ভবনটির ছাদের প্লাস্টার উঠে যাওয়ায় বৈদ্যুতিক ফ্যানগুলো খুলে রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে গরমের তীব্রতার মাঝেও কর্তব্যরত পোষ্ট মাষ্টার ও কর্মচারীরা তাদের দায়িত্ব পালন করছে। এ দিকে আকাশের বৃষ্টির পানি থেকে রক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ কম্পিউটার ও অন্যান্য জিনিসপত্র আকাশে মেঘ দেখলেই পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হচ্ছে। ডাকঘরটির পশ্চিম পার্শ্বে সীমানা প্রাচীর বহু পূর্বে ভেঙ্গে পড়েছে। এ ব্যাপারে পোষ্ট মাষ্টার আব্দুল হাকিম মিয়া এর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি “দৈনিক ইনকিলাব” কে জানান, ভবনটি সংস্কারের জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জায়গায় আবেদন করেছেন। গত ১৭ জুলাই সোমবার ডাক বিভাগের বগুড়া বিভাগের ডেপুটি পোষ্ট মাষ্টার জেনারেল ড. জিয়াউর রহমান ভবনটি পরিদর্শন করেছেন। জরুরী সংস্কারের জন্য প্রাথমিক ভাবে সরেজমিনে স্কিম তৈরীও করেছেন। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলেই ভবনটি সংস্কার করা হবে বলে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন। এদিকে প্রধান এই ডাকঘরেরও লোকবলের অভাবও রয়েছে। এখানে পোষ্ট অপারেটর ২ জনের স্থলে কর্মরত রয়েছে ১ জন, পোষ্টম্যান ৩ জনের স্থলে কর্মরত রয়েছে মাত্র ১ জন। ফলে একজন পোষ্টম্যান দ্বারা এই ডাকঘরের আওতায় উপজেলা সদরের বিভিন্ন অফিস ব্যাংক বীমা সহ ৪১ টি গ্রাম এবং পার্শ্ববর্তী কাহালু উপজেলার বীরকেদার ইউনিয়নের ২৭ টি গ্রামে চিঠি পত্র বিলি করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। পোষ্ট অফিসটি গুরুত্বপূর্ণ লেনদেন সঞ্চয়পত্র বিক্রয়, এস,বি সঞ্চয় পত্র ও এফ,ডি যাতে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ১০ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা আদান প্রদান হয়ে থাকে। এক্ষেত্রে নিরাপত্তার চরম অভাব রয়েছে। সেই সাথে লোকবলের অভাবে গ্রাহকদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। উপজেলার এই পোষ্ট অফিসটি সরকারের রাজস্ব আয়ের একটি বড় উৎস অথচ তা পড়ে রয়েছে অবহেলায়। এ দিকে প্রতি মাসে প্রায় ১ কোটি টাকার রাজস্ব আয়ে এই ডাকঘরটি এখনো চলছে মান্ধাতা নিয়মেই। ফলে গ্রাহকদের ভোগান্তি পাশাপাশি দিন দিন তাদের মাঝে ক্ষোভের দানা বাঁধছে। এ ব্যাপারে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জরাজীর্ণ এই ডাক ভবনটি দ্রæত সংস্কারের জন্য ডাক বিভাগের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন