মঙ্গলবার ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উপ সম্পাদকীয়

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যাক্কারজনক ঘটনা এবং প্রাসঙ্গিক সতর্ক-বার্তা

| প্রকাশের সময় : ৫ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০০ এএম

মোহাম্মদ আবদুল গফুর : দেশের সর্বোচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। বৃটিশ-শাসিত অবিভক্ত ভারতবর্ষে ১৮৫৭ সালে কলিকাতাসহ অপর দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠান নিয়ে তেমন সমস্যা না হলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা নিয়ে যে নজীরবিহীন সমস্যা সৃষ্টি হয়, তা ইতিহাস সচেতন ব্যক্তি মাত্রেরই মনে থাকার কথা। এর আগে ১৯০৫ সালে শাসনকার্যের সুবিধার্থে বাংলা বিহার উড়িষ্যা নিয়ে গঠিত বিশাল বেঙ্গল প্রেসিডেন্সী বিভক্ত করে ঢাকা রাজধানীসহ ‘পূর্ববঙ্গ ও আসাম’ নামের একটি নতুন প্রদেশ গঠিত হলে তার বিরুদ্ধে কলিকাতা-প্রবাসী পূর্ববঙ্গের হিন্দু জমিদারদের নেতৃত্বে বিরাট আন্দোলন গড়ে তোলা হয়।
তখন মুক্তি দেয়া হয়েছিল বঙ্গভঙ্গের দ্বারা বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের মত পাপ হবে। অথচ এ বক্তব্য যে একেবারেই অসত্য, তার প্রমাণ পাওয়া গেল মাত্র কয়েক দশক পরেই ১৯৪৭ সালে যখন বৃটিশ শাসনের অবসনে ভারত ও পাকিস্তান নামের দুটি স্বতন্ত্র স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়। সে সময় মুসলিম লীগের হোসেন শহীদ সোহরওয়ার্দী ও আবুল হাশিম এবং কংগ্রেসের শরৎচন্দ্র বসুর নেতৃত্বে স্বাধীন ভারত ও পাকিস্তানের বাইরে সার্বভৌম বাংলাদেশ আন্দোলনের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হয়। পাকিস্তান আন্দোলনের প্রধান নেতা কায়েদে আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ও সার্বভৌম বাংলা আন্দোলনের প্রতি সহানুভূতিশীল থাকলেও গান্ধী, নেহেরু, প্যাটেল প্রমুখ অবাঙ্গালী নেতা এবং বিশেষ করে হিন্দু মহাসভার বাঙ্গালী নেতা ড. শ্যামা প্রসাদ মুখার্জীর প্রবল বিরোধিতার কারণে সার্বভৌম বাংলা প্রতিষ্ঠার যে প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়।
তখন শেষোক্ত নেতা (ড. শ্যামা প্রসাদ মুখার্জী) এমনও বলেছিলেন, ভারত ভাগ না হলেও বাংলা ভাগ হতেই হবে। নইলে বাঙ্গালী হিন্দুরা চিরকালের জন্য বাঙ্গালী মুসলমানদের গোলাম হয়ে যাবে। সুতরাং ১৯০৫ সালের বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে যারা যুক্তি (কুযক্তি) দিয়েছিল যে, এর দ্বারা বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের মত পাপ হব, এর চাইতে বড় অসত্য আর কিছুই বাস্তবে হতে পারেনা। ১৯৪৭ সালে যারা বলেছিল যে, ভারত ভাগ না হলেও বাংলা ভাগ হতেই হবে, নইলে বাঙ্গালী হিন্দুরা চিরতরে বাঙ্গালী মুসলমানদের গোলাম হয়ে যাবে তারাই বাংলা ভাগের জন্য মূলত দায়ী। তারা বৃহত্তর সার্বভৌম বাংলার বিরুদ্ধে অবাঙ্গালী-প্রধান ভারতীয়দের দ্বারা শাসিত হওয়াকেই অধিক পছন্দনীয় মনে করেছিল।
বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে যারা আন্দোলন করেছিল, তারা যুক্তি দেখিয়েছিল যে এর দ্বারা বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের মত পাপ হবে, তাদের এ যুক্তি যে ছিল পুরাপুরিই কুযুক্তি, তার প্রমাণ তারা নিজেরাই দেন যখন ১৯৪৭ সালে তারা দাবী করেন ভারত ভাগ না হলেও বাংলা ভাগ হতেই হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে তারা যুক্তি দেন, এর দ্বারা নাকি বাংলা সংস্কৃতি বিভক্ত হয়ে যাবে। আসলে তাদের আপত্তির আসল কারণ তাদের আরেক বক্তব্যে ফাঁস হয়ে পড়ে। তাদের এ যুক্তি ছিল : পূর্ববঙ্গের অধিকাংশ বাসিন্দা অশিক্ষিত মুসলমান চাষা ভূষা, তাই তাদের উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় কোন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন নেই। এর আরেক অর্থ হলো পূর্ব বঙ্গের অধিকাংশ মানুষ মুসলমান চাষাভূষা। তারা অশিক্ষিত আছে, তাই থাক। তাদের শিক্ষা বা উচ্চশিক্ষার জন্য ঢাকায় কোন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন নেই।
এতসব বাধা বিপত্তির কারণে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল স্বপ্নদ্রষ্টা নবাব সলিমুল্লাহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অপূরিত স্বপ্নের এক বুক বেদনা নিয়ে ১৯১৫ সালে মৃত্যুর মুখে পতিত হন। অথচ এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তিনি তার নিজের জমিদারীর বিশাল এলাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দান করে যান। নবাব সলিমুল্লাহর মৃত্যুর পর যে দুই মহান ব্যক্তি অসংখ্য বাধা মোকাবেলা করে ১৯২১ সালে সলিমুল্লাহর স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হন, তারা হলেন ধনবাড়ীর জমিদার সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরী এবং তদানীন্তন উদীয়মান জননেতা (শেরে বাংলা) এ. কে ফজলুল হক।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে দেশের তৎকালীন নেতৃবৃন্দের অসামান্য অবদান ছিল এমন বলা হলেও এতে একটু ফাঁকও ছিল। যারা এক কালে বলেছিল বঙ্গভঙ্গ হলে তার দ্বারা বঙ্গমাতার অঙ্গচ্ছেদের মত পাপ হবে। তারাই যেমন ১৯৪৭ সালে বঙ্গভঙ্গের জন্য উম্মত্ত হয়ে উঠেছিল এই কুযুক্তিতে যে বঙ্গভঙ্গ না হলে বাঙ্গালী হিন্দুরা চিরতরে বাঙ্গালী মুসলমানদের গোলাম হয়ে যাবে, তেমনি তারাই ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় হলে তার ফলে বাঙ্গালী সংস্কৃতি দ্বিখÐিত হয়ে যাবে বলে যাবে বলে ভয় দেখিয়েছিল, তারাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে বহু দিন পর্যন্ত মক্কা বিশ্ববিদ্যালয় বলে উপহাস করতো তাদের অবাক করে দিয়ে ঢাকা বিশ্বদ্যালয় এক পর্যায়ে অক্সফোর্ড অব দ্য ইস্ট তথা প্রাচ্যের অক্সফোর্ড বলে বিশ্বে পরিচিত লাভ করেছিলেন যা উভয় বাংলার প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয় কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষে কখনও সম্ভব হয়নি।
শুধু শিক্ষার ক্ষেত্রেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুখ্যাতি সীমাবদ্ধ ছিল না। ১৯২১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত জাতির যা কিছু অর্জন-পাকিস্তান আন্দোলন, ভাষা আন্দোলন, স্বায়ত্তশাসন আন্দোলন, সর্বশেষে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একাত্তুরের মহান মুক্তিযুদ্ধ সব ক্ষেত্রেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক ও ছাত্র সমাজের অবদানকে অস্বীকার করা আর ইতিহাসকে অস্বীকার করা একই কথা। সে নিরিখে আজকের বাংলাদেশ নামের স্বাধীন রাষ্ট্রটির প্রতিষ্ঠার পেছনেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অবদানকে বাদ দিয়ে প্রকৃত ইতিহাস রচনা আসলেই সম্ভব নয়।
এই যেখানে বাস্তব ইতিহাস, সেখানে সংকীর্ণ রাজনৈতিক কারণে সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের যা কিছু ঘটেছে তাতে লজ্জায় জাতির মাথা হেঁট হয়ে যাবার উপক্রম। পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত বিবরণী থেকে জানা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষকদের অধিকাংশ এখন প্রকাশ্যে রাজনীতিতে সংশ্লিষ্ট হয়ে পড়ায় ছাত্র সমাজ এখন আর তাদেরকে আর আগের মত শ্রদ্ধার দৃষ্টিতে দেখে না। দেখে তাদের স্বদলীয় বা বিরোধী দলীয় লোক হিসাবে। একটি দৈনিকে প্রকাশিত এসম্পর্কিত এক বিবরনীতে বলা হয়েছে : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতকরা ৭৫ ভাগ শিক্ষক রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ১,৯৯২ জন শিক্ষকের প্রায় সহ¯্রাধিক শিক্ষকই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষে দলীয় রাজনীতির, সঙ্গে জড়িত। তরুণ শিক্ষকরা রাজধানী করেন অপেক্ষাকৃত ভাল থাকার জন্য, একটি বাসস্থান কলারশিপের, ছুটিও সিডিকেট সদস্য হওয়ার জন্য। বায়োজ্যেষ্ঠ শিক্ষকদের রাজনীতির লক্ষ্য থাকে প্রক্টর, প্রভোষ্ট, ডীন, প্রো-ভাইসচ্যান্সেলর বা ভাইস চ্যান্সেলর হওয়ার দিকে।
সব কিছুতেই নির্বাচন প্রয়োজন। এমন কি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক যে কোন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসতে গেলেও প্রয়োজন হয় নির্বাচন। আর নির্বাচন মানেই সমর্থক সংগ্রহের রাজনীতি। শিক্ষক-রাজনীতির সব চাইতে বড় কারণ এই ব্যবস্থা। ১০টি অনুষদের ডীন, ৬ সিন্ডিকেট সদস্য, সিনেটের ৩৫ শিক্ষক প্রতিনিধি ও ২৫ রেজিষ্ট্রার্ড গ্রাজুয়েট প্রতিনিধি, ৩ সদস্যের ভিসি প্যানেলের নির্বাচন সবকিছুতেই সমর্থক সংগ্রহের প্রয়োজন হওয়াতে বিশ্ববিদ্যালয় এখন হয়ে উঠছে রাজনীতির আখড়া। চ্যান্সেলর মনোনীত বিভিন্ন পদে রাজনৈতিক প্রভাব না পড়ার কথা। কিন্তু দেশে রাজনৈতিক দলের সরকার থাকাতে চ্যান্সেলর-মনোনীত পদগুলিতেও সরকার দলীয় প্রভাব থাকছে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কিছুতেই থাকছে দলীয় রাজনীতির অনিবার্য প্রভাব। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকের মধ্যে বাস্তবতার নিরিখে এ ধারণা প্রবল হয়ে গেছে যে, বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতে হলে রাজনীতি করা ছাড়া উপায় নেই। এটা যেমন শিক্ষক পদে নিয়োগ পাওয়ার জন্য প্রয়োজন, তেমনি প্রয়োজন নিয়োগ পাবার পর বাড়তি কোন সুযোগ সুবিধা পাওয়ার জন্য।
এমন কি যারা মনে প্রাণে রাজনীতি পছন্দ করে না তাদেরও সম্মানজনক পজিশনের জন্য কোন না কোন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করে চলতে হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করার জন্য। আবার ছাত্ররা যদি শিক্ষকদের পছন্দের দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রক্ষা করে চলতে না পারে। তাদের এ্যাকাডেমিক জীবন ও সে জন্য বিঘিœত হতে পারে। সে ভয়েও তারা সংশ্লিষ্ট্য শিক্ষকের পছন্দের দলের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখে চলতে চেষ্টা করে।
দেশের রাজনীতিতে পরিবর্তন হলেও বিশ্ববিদ্যালয়েরও তার প্রভাব পড়ে। বিশেষ করে ছাত্রদের মধ্যে। অতীতে এমনও বহুবার দেখা গেছে, জাতীয় রাজনীতির ক্ষেত্রে কোন পরিবর্তন আসার সঙ্গে নতুন আসা ক্ষমতাসীন দলের দাপটের ফলে বিরোধী দলের ছাত্র সংগঠন ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য হয়েছে। শুধু তাই নয় জাতীয় রাজনীতিতে নতুন ক্ষমতাসীন দলের ছাত্র নেতাদের ভয়ে তাদের বিরোধী শিক্ষকদের বাধ্য হয়ে অতিরিক্ত সতর্ক হয়ে উঠতে দেখা গেছে। এটা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যই নয়, শিক্ষকদের বাঞ্ছিত মর্যাদার নিরিখেও দূর্ভাগ্যের কথা।
যারা শিক্ষকতা করেন, বিশেষত : যারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত দেশের প্রাচীনতম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন, তাদের মর্যাদা হতে হবে, দেশের সকলের ঊর্ধে। দেশের সকল লোক তাদের প্রতি স্বত:স্ফূর্তভাবে শ্রদ্ধাশীল থাকবেন, এটাই কাম্য। কিন্তুু বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা বর্তমানে দলীয় রাজনীতির পঙ্কে যেভাবে হাবুডুবু খাচ্ছেন, তাতে তাদের মর্যাদা তো আর আগের মত থাকার কথা নয়। বরং অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় শিক্ষক হওয়া সত্তে¡ও তাদের অনেকেরই ব্যক্তিত্ব একজন দাপুটে ছাত্রনেতার ইচ্ছা-অনিচ্ছার কাছে বিকিয়ে দিতে হয়। এর চাইতে দু:খজনক কথা আর কী হতে পারে? যে-রাজনীতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের মত জাতির সম্মানিত ব্যক্তিদের মর্যাদার নিশ্চয়তা দিতে পারে না, সে রাজনীতিতে কি তাদের জড়িত না হলেই নয়?
সমাজে শিক্ষকদের মর্যাদা সব চাইতে সর্বোচ্চ পর্যায়ে দেখতেই আমরা অভ্যস্ত এর অন্যথা অনিবার্য করে তোলে যে রাজনীতি, তাকে যে কোন মূল্যে বর্জন করা উচিৎ নয় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষকদের? শিক্ষকরা তো শুধু সাধারণ চাকুরেদের মতো চাকুরী করেন না। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা তো সমগ্র জাতির শিক্ষক তথা পথপ্রদর্শকও বটেন। তারা শিক্ষকতার চাকুরীর স্বার্থে নিজেদের মর্যাদা তো আর ধুলায় মিশিয়ে দিতে পারেন না। তাদের নিজেদেরও ব্যক্তিত্বকে সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখতে না পারলে তাদের অমর্যাদার শিক্ষকতা না করাই ভালো। তাদের মনে রাখতে হবে তাদের কাজ অন্যান্য চাকুরেদের চাকুরীর মতো নয়। তাদের নিজেদের মর্যাদা রক্ষা করতে নিজেদেরই সচেষ্ট হতে হবে। এর কোন অন্যথা হলে সে ধরনের শিক্ষকতা না করাই যেমন তাদের জন্য, তেমনি জাতির জন্য অধিক কল্যাণকর হবে।
যে রাজনীতির কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে হাতাহাতির মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা আমাদের দেখতে হচ্ছে সে রাজনীতির কবল থেকে মুক্তি পাবার কি আমাদের কোন উপায়ই নেই? ভি-সি প্যানেল নির্বাচন উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানিত শিক্ষক ও ছাত্রদের মধ্যে যে প্রকাশ্যে মারামারি -হাতাহাতির মত নোংরা ঘটনা সংগঠিত হয়েছে তা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় শত বছরের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাসকে কালিমালিপ্ত করেছে। যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জাতির সকল গুরুত্বপূর্ণ অর্জনে গৌরবজনক অবদান রেখেছে সে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই লজ্জাকর পতনকে সহজভাবে গ্রহণের কোন উপায় নেই। যে কোন মূল্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধপতনের ধারা থেকে উদ্ধার করা জাতির বিবেকবান মানুষদের আজ প্রধান কর্তব্য বলেই আমাদের ধারণা।
এ কর্তব্য পালনে কোন দ্বিধা-দ্ব›েদ্বর প্রশ্রয় দেয়া হবে বাংলাদেশ নামের স্বাধীন রাষ্ট্রটির মর্যাদা নিয়ে ছিনিমিনি খেলার শামিল। কারণ বাংলাদেশ নামের আমাদের এই প্রিয় স্বাধীন রাষ্ট্রটির অভ্যুদয়ের মূলে যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক অবদান রয়েছে, তার এই অধ:পতনের কুপ্রভাব জাতির সুন্দর ভবিষ্যৎ নির্মাণের উপর পড়তে বাধ্য। এ ব্যাপারে জাতির ও দেশের মহান বিবেকবান ব্যক্তিদের আশু দৃষ্টি আকর্ষণ করেই আজকের লেখার ইতিটানছি। বিলম্বে জাতির ভাগ্যে এমন কিছু ঘটতে পারে, যা পরবর্তীতে হাজারো অনুতাপ করেও কোন লাভ হবে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (4)
সবুর খান ৫ আগস্ট, ২০১৭, ১১:৪৯ এএম says : 0
এটাই দেখার বাকি ছিলো।
Total Reply(0)
তমাল ৫ আগস্ট, ২০১৭, ১১:৪৯ এএম says : 0
কিছু বলার নাই
Total Reply(0)
৬ আগস্ট, ২০১৭, ১২:০৮ এএম says : 0
যদি ইসলামী শিক্ষা শিক্ষিত হতো তাহলে আজ এঘটনা হতো না, ইসলামী শিক্ষা বাধ্যতামূলক পড়ানো হোক,আমি চেলেন্জ দিচ্ছি তাহলে আর এমন ঘটনা হবে না।
Total Reply(0)
মাহমুদুলহাসান ১১ আগস্ট, ২০১৭, ১:১৪ পিএম says : 0
"বাধ্যতা মুলোক আরবী পড়ানো হক, ও ইসলামি ইতিহাস পড়ানো হক "" ইন্সা আল্লাহ , ওস্তাদের (শিক্ষকদের) সন্মান বড়দের সন্মান আপনাপনী এসে যাবে। ১০০%
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন