বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

ধর্ম দর্শন

প্রশ্ন: তথ্য পরিবেশনে ইসলামী মূল্যবোধ জরুরী কি না ?

| প্রকাশের সময় : ২২ মার্চ, ২০১৮, ১২:০০ এএম

উত্তর: তথ্য একটি মহাশক্তি। তথ্যহীন মানুষ অন্ধত্বের সামিল। তথ্য সমাজ পরিবর্তনের মূল চাবিকাঠি। যাদের নিকট যত বেশি তথ্য রয়েছে। তারা ততো বেশি শক্তিশালী। তথ্য মানুষের মনের গতি পরিবর্তন করে। তথ্য আদান-প্রদানের ফলে সমাজে সচেতনতা তৈরী হয়। নবী-রাসূলগণ আল্লাহ তা‘আলার পক্ষ ওহী লাভ করতেন। ওহী এক ধরনের তথ্য বা সংবাদ। নবী ও রাসূলগণ তাদের প্রাপ্ত ওহী বা তথ্য গুলোকে উম্মতের নিকট হেদায়াতের উদ্দেশ্যে সংবাদ আকারে প্রচার করেছেন। নবী ও রাসূলগণের তথ্য দেয়া-নেয়ার উদ্দেশ্যে ছিলো বিপথগামী মানুষকে সত্য ও ন্যায়ের পথ দেখানো। বিপথগামী মানুষকে ক্ষমা লাভের সুসংবাদ দেয়া। সামাজিক বিশৃংখলা তৈরীর জন্যে গুজব ছড়ানোর উদ্দেশ্যে মিথ্যা তথ্য আদান-প্রদান করা ইসলামী নীতি ও মূল্যবোধ পরিপন্থী। ইসলামী বিধান মতে যারা গুজব তৈরীর উদ্দেশ্যে মিথ্যা মনগড়া তথ্য তৈরী ও প্রচার করে তারা হলো ফাসিক। তথ্যের সত্যতা যাচাই করে সংবাদ পরিবেশন করাই হলো ইসলামের নীতি ও বিধান। তথ্য পরিবেশনের পূর্বে তথ্য সম্পাদনা এ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ, যদি কোনো ফাসিক তোমাদের কাছে কোনো খবর নিয়ে আসে, তাহলে তোমরা যাচাই করে নাও। এ আশংকায় যে তোমরা অজ্ঞতাবশত কোনো কওমকে আক্রমণ করে বসবে, ফলে তোমরা তোমাদের কৃতকর্মের জন্য লজ্জিত হবে।’ (সূরা হুজরাত: ৬)।
তথ্য সব সময় ইতিবাচক হতে হবে। ইসলাম সমাজের জন্যে ইতিবাচক ও কল্যাণকর তথ্য আদান- প্রদানকে উৎসাহ প্রদান করে। মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করে সমাজের মধ্যে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা ফাসিক তথা মোনাফিকদের কাজ। আর মোনাফিক ব্যক্তি কাফেরের চেয়ে নিকৃষ্ট। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘মুনাফিক দল, যাদের অন্তরে কুফরীর ব্যাধি রয়েছে ও যারা মদীনায় গুজব রটনা করে বেড়ায়, তারা যদি বিরত না হয়, তাহলে আমি নিশ্চয়ই আপনাকে তাদের ওপর প্রবল করে দেবো, অতঃপর এরা সেখানে আপনার প্রতিবেশী হিসেবে সামান্য কিছু দিনই থাকতে পারবে।’ (সূরা আহযাব: ৬০)।
ভ‚য়া ও মিথ্যা তথ্য পরিবেশনের ক্ষেত্রে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। মোনাফিকরা সব সময় তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে কুটকৌশলের আশ্রয় নিয়ে থাকে। মিথ্যা তথ্য প্রচার করে ঝগড়া-বিবাধ সংঘটিত করা মোনাফিকের কাজ। তাই যে কোনো তথ্য প্রাপ্তীর পর মোমিনদেরকে অবশ্যই তথ্যের ভিত্তি ও সত্যতা যাচাই করে নিতে হবে। কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘যে বিষয়ে তোমাদের কোনো জ্ঞান নেই, তার পিছনে পড়ো না; কেননা কান, চোখ ও অন্তর, এ সব কয়টির (ব্যবহার ) সম্পর্কে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে’। (সূরা বনী ইসরাঈল: ৩৬)।
যারা দ্বন্দ্ব সংঘাত সৃষ্টির লক্ষে মিথ্যা তথ্য প্রচার করবে। তাদেরকে কেয়ামতের দিন কঠিন শাস্তি ভোগ করতে হবে। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে,‘ অতঃপর তার চাইতে বড় অত্যাচারী আর কে হতে পারে যে মানুষকে গোমরাহ করার জন্যে অজ্ঞতাবশত আল্লাহর নামে মিথ্যা রচনা করে; নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক সীমা লংঘনকারী জাতিকে সঠিক পথে পরিচালিত করে না।’ (সূরা আন‘আম: ১৪৪)। সুতরাং রাগ, বিরাগ, গোষ্ঠী ও ব্যক্তি স্বার্থ পরিহার করে সত্য ও কল্যাণের উদ্দেশ্যে তথ্য পরিবশেন করলে আখেরাতে নেয়ামত লাভের সুযোগ আছে।
উত্তর দিচ্ছেন : ফিরোজ আহমাদ

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন