আমাদের শিশুদের চারপাশে এখন অপসংস্কৃতির জাল। বিদেশি টিভি চ্যানেলগুলো শিশুদের পরিবেশকে বিষাক্ত করে তুলতে সাহায্য করছে। কার্টুন চ্যানেল আর স্টার জলসার মতো চ্যানেলগুলো অপসংস্কৃতির আগ্রাসনে ভূমিকা রাখছে। পড়ার টেবিলে যাওয়ার সময় খেয়ে ফেলছে এই বিদেশি চ্যানেলগুলো। অনেক মা স্টার জলসার প্রগ্রাম দেখার জন্য পারিবারিক অশান্তি সৃষ্টি করছেন। সংসারে ফাটল সৃষ্টি করছেন। শিশুদের ভেতরকার কল্পনাশক্তির ভিত্তিটা তৈরি হয় ছোটবেলাতেই। আশপাশের পরিবেশ, সাংস্কৃতিক পরিচর্যা আর চিন্তা-চেতনার বিকাশের মাধ্যমে শিশুরা যা কল্পনা করে তারই বাস্তবরূপ দেখতে চায়। প্রিয় কার্টুন বা অন্য প্রিয় চরিত্র নিজেদের মধ্যে ধারণ করতে চায় শিশুরা। ফলে বিদেশি ভাষায় চরিত্রগুলোর মতো সেই ভাষায় কথা বলতে চায়। এ ক্ষেত্রে হিন্দি ভাষার প্রভাব বেশি। সঙ্গে সঙ্গে সে ভাষার সংস্কৃতিকে ধারণ করতে চায়। এভাবে চলতে থাকলে মাতৃভাষা যেমন সংকটে পড়বে, তেমনি হুমকির মুখে পড়বে। বাংলা ভাষার ক্রমবিকাশ থাকবে না। বিকৃত হতে থাকবে, যা এখন অনেকটা শুরুই হয়ে গেছে। অনেক শিশুকেই এখন হিন্দিতে কথা বলতে দেখা যায়। দেখা যায় যে গ্রামের তুলনায় শহরের শিশুদের মধ্যে ভিনদেশি ভাষা ও সংস্কৃতির আগ্রাসন ভয়াবহভাবে বেড়েই চলেছে। গ্রামের অবস্থাও তাই। দেশীয় সংস্কৃতি ভুলতে বসেছে অনেক শিশু। সবচেয়ে চিন্তার বিষয় এসব চ্যানেলে দেখানো সিরিজগুলো শুরু হলে শেষই হতে চায় না। অত্যন্ত কৌশলে শিশুখাদ্য ও পণ্যে চ্যানেলে দেখানো শিশুদের প্রিয় চরিত্রগুলোর ছবি ব্র্যান্ড হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে বিক্রির পরিমাণও বেড়ে যাচ্ছে। ব্যবসা সফল হচ্ছে। ভালো অনুষ্ঠানের অভাবই শিশুদের বিদেশি চ্যানেলগুলোর ওপর নির্ভরশীল করছে। এ জন্য আমাদের সামাজিক ও পারিবারিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে হবে। আমাদের বেসরকারি চ্যানেলগুলোকে এ ব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
আবু আফজাল মোহা. সালেহ
বিআরডিবি, লালমনিরহাট।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন