কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কুষ্টিয়ায় গরুর খামারিরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। ভালো দাম পাওয়ার আশায় গরুর খামারিরা শেষ সময়ে গরুর পরিচর্যা ও বিভিন্ন হাটে নেয়ার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন হাটে গরু উঠতে শুরু করেছে। জানা যায়, গোশতের দাম ও চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কুষ্টিয়ায় গরু মোটাতাজাকরণ খামার গড়ে ভাগ্যের চাকা ঘুরতে শুরু করেছে খামারিদের। বাণিজ্যিকভাবে কয়েক হাজার গরু মোটাতাজাকরণ খামার গড়ে উঠেছে। কেউ শখের বশে, কেউ বেকারত্বের অভিশাপ ঘোচাতে, কেউ সংসারে সচ্ছলতা আনতে এসব খামার গড়ে তুলেছেন।
ঈদকে সামনে রেখে কোরবানির পশু বিক্রির উদ্দেশে এ জেলায় সাড়ে চার লাখ গরু মোটাতাজাকরণ করা হয়েছে। এ জেলার বড় গরুর সুনাম রয়েছে চারিদিকে। জেলার ৯৮৫টি গ্রামই এখন যেন একেকটি গো-খামারে পরিণত হয়েছে। গ্রামাঞ্চলের এমন কোনো বাড়ি পাওয়া যাবে না, যেখানে গরুর খামার নেই। বিগত কয়েক বছর গরু খামার করে অনেকেই ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়েছেন। বেকার যুবক ও দরিদ্ররা খামার করে একদিকে যেমন প্রতিষ্ঠিত হয়েছেন, অপরদিকে খামারের গোবর থেকে বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট করে সংসারে জ্বালানির সাশ্রয় করছে। ফলে জেলার বিভিন্ন গ্রামে বেকার যুবকরা এ বছরও গরু মোটাতাজাকরণে মন দিয়েছেন। গরুর ভালো দাম পেলে আগামীতেও তারা গরুমোটাতাজারণ প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখবেন বলে জানান।
গরু মোটাতাজাকরণ প্রসঙ্গে জেলার পশুসম্পদ কর্মকর্তা জানান, খামারিরা নিয়মতান্ত্রিকভাবে পশুকে পরিচর্যা ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ান না। ফলে খামারিদের পশু ঠিকভাবে বেড়ে ওঠে না।
গ্রামাঞ্চলের অনেক খামারি গরু দ্রুত মোটা করার জন্য ভারতীয় নিম্নমানের ওষুধ খাওয়ান। এগুলো খাওয়ানো ঠিক না। এতে পশুর চামড়ার নিচে পানি জমে মোটা দেখালেও কার্যত গোশত বৃদ্ধি হয় না। এতে পশুর প্রচন্ড সমস্যা হয়। যে কোনো মুহূর্তে ওইসব পশু দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে। এসব এড়াতে কুষ্টিয়ার খামারিদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও গণসচেতনতা সৃষ্টি করা হয় বলে জানালেন জেলার প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা।
ঈদের আগ মুহূর্তে খামারিদের ব্যস্ত সময় কাটছে। ভালো দাম পাওয়ার আশায় খামারিরা দেশের বিভিন্ন হাটে বিক্রির পরিকল্পনা করেছেন। ভারতের পশু আমদানি না হলে খামারিদের এ আশা পূরণ হতে পারে। তাই দেশীয় পশুর বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার ভারতীয় গরু আমদানি বন্ধ করবে এ দাবি জেলার খামারিদের।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন