সোমবার, ০৬ মে ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ব্যবসা বাণিজ্য

বছর ব্যবধানে ফান্ডে লভ্যাংশ কমেছে ১০ শতাংশ

পুঁজিবাজারে পতন

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

দেশের সর্ববৃহৎ এ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানী ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) সাবসিডিয়ারি আইসিবি এ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানীর (আইসিবি এএমসিএল) ফান্ডগুলোর (মেয়াদি) অবদান গত বছরের তুলনায় বেশ কমেছে। এ বছর আইসিবি এএমসিএল এর ফান্ডগুলোর সর্বমোট ডিভিডেন্ডের পরিমাণ ৪৪ দশমিক ৭৩ কোটি টাকা। গত বছর যার পারিমাণ ছিলো প্রায় ৫০ কোটি টাকা। গত বছরের তুলনায় এ বছর ডিভিডেন্ড প্রদানের পরিমাণ প্রায় ১০ শতাংশ কমেছে।
অপরদিকে বাংলাদেশ রেস ম্যানেজমেন্টের চলতি বছর সর্বমোট ডিভিডেন্ড প্রদানের পরিমাণ ২৪৪ দশমিক ৬৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৫৭ দশমিক ১৭ কোটি টাকা ক্যাশ এবং ১৮৭ দশমিক ৫০ কোটি টাকা পুনঃবিনিয়োগ। গত বছর রেস পরিচালিত ফান্ডগুলোর সর্বমোট ডিভিডেন্ড প্রদানের পরিমাণ ছিলো ৩১২ দশমিক ১৬ কোটি টাকা এর ৫৮ দশমিক ১১ কোটি টাকা ক্যাশ এবং ২৫৪ দশমিক ০৫ কোটি টাকা রিইনভেস্টমেন্ট। গত বছরের তুলনায় রেস এর লভ্যাংশ প্রদানের পরিমাণ ২১ দশমিক ৬২ শতাংশ কমেছে। মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ক্ষেত্রে বোনাস শেয়ার প্রদানের বিষয়ে বাংলাদেশ অর্থনীতি কাউন্সিলের সহ-সভাপতি ড. জামালউদ্দীন আহমেদ এফসিএ বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে কোনো মিউচ্যুয়াল ফান্ড পুনঃবিনিয়োগ দিতে চাওয়া বা দেওয়া স্বাভাবিক এবং এটি আইনসিদ্ধ। কাজেই না বুঝে পুনঃবিনিয়োগকে কোনো কোনো মহল বিতর্কিত করছেন।
পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য ফাউন্ডেশনের সভাপতি মোঃ রুহুল আমিন আকন্দ বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমান অবস্থায় বিনিয়োগকারীরা মোটেই ভালো নেই। তারা অত্যন্ত কষ্টে এবং মানবেতর জীবন-যাপন করছেন। এমন পরিস্থিতিতে শেয়ারহোল্ডারদের পুনঃবিনিয়োগের পাশাপাশি নগদ লভ্যাংশ প্রদান করলে সেটি হবে অত্যন্ত সম্মৃদ্ধি ও যুগোপযোগী। ডিএসই ব্রোকার্স এসোসিয়েশনের সভাপতি মোস্তাক মোহম্মদ সাদেক বলেন, পুঁজিবাজারের বর্তমান প্রেক্ষাপটে শেয়ারহোল্ডারদের জন্য পুনঃবিনিয়োগের পাশাপাশি নগদ লভ্যাংশ প্রদান যথাযথ আছে। কারণ বাজারের বর্তমান দুরাবস্থায় মিউচ্যুয়াল ফান্ডগুলোর আয় কমেছে। এর ফলে ডিভিডেন্ড কমাটাও অস্বাভাবিক কিছু নয়।
সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (মিউচ্যুয়াল ফান্ড) বিধিমালা, ২০০১ অনুযায়ী ফান্ডগুলো নগদ লভ্যাংশের পাশাপাশি পুনঃবিনিয়োগ পদ্ধতিতে লভ্যাংশ প্রদান করে থাকে। পুনঃবিনিয়োগ মিউচ্যুয়াল ফান্ড সমূহের একটি ডিভিডেন্ড প্রদানের পদ্ধতি যা নগদ লভ্যাংশের একটি বিকল্প পদ্ধতি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এ পদ্ধতিতে বিনিয়োগকারীগণ নগদ লভ্যাংশের পরিবর্তে ফান্ড ইউনিট পেয়ে থাকেন যা তাদের বিনিয়োগ মন্দা কমাতে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ২০১৩ সালের ৮ জানুয়ারি প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পুনঃবিনিয়োগ প্রদানের অনুমতি প্রদান করে যা তৎকালীন পুঁজিবাজারের মন্দাবস্থা কাটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে।
মন্দাবস্থায় পুঁজিবাজারে পুনঃবিনিয়োগ নগদ লভ্যাংশ প্রদানের চেয়ে বেশি বাজারবান্ধব। ফলে পুনঃবিনিয়োগ মন্দাবাজারে সহায়ক ভ‚মিকা পালন করে। এর কারণ- একটি ফান্ড যদি নগদ অর্থ বিনিয়োগকারিদের প্রদান করতে চায় তাহলে ফান্ডটিকে তার বিনিয়োগকৃত শেয়ার বাজারে বিক্রি করতে হয়। এতে বাজারে বিক্রির চাপ তৈরি হয় এবং বাজারে বৈরী প্রভাব তৈরি হওয়ার আশংকা থাকে। কিন্তু যদি ফান্ডটি পুনঃবিনিয়োগ করে, তবে তার হোল্ডিং শেয়ার বিক্রয়ের ঝুঁকি নিতে হয় না। বরং ফান্ডের অর্থ বাজারে পুনঃবিনিয়োগ করতে পারে। এতে করে বাজারে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়, যা মন্দাবাজারে গুরুত্বপূর্ণ ভ‚মিকা রাখে। এছাড়া পুনঃবিনিয়োগ প্রদান দীর্ঘ মেয়াদী রিটার্ন তৈরিতেও সহায়ক।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন