শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

অভ্যন্তরীণ

ছিটমহলের বাতিঘর দাসিয়ারছড়া উচ্চ বিদ্যালয়

ফুলবাড়ী (কুড়িগ্রাম) থেকে মহসিন আলী মনজু | প্রকাশের সময় : ১৯ আগস্ট, ২০১৮, ১২:০২ এএম

কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়ায় শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে ‘দাসিয়ারছড়া সমন্বয়পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়’। এখানে প্রায় তিন শতাধিক ছাত্রছাত্রী পড়ালেখা করছে। গত ৬৮ বছরের অন্ধকারের বন্দীদশা থেকে মুক্তি পাওয়া জনগোষ্ঠীর পিছিয়ে পড়া সন্তানরা এই বিদ্যালয়ের সঠিক শিক্ষা গ্রহণের মাধ্যমে এগিয়ে যাচ্ছে পড়ালেখায়। ফলে গত ২০১৭ সালের জেএসসির ফলাফলে এই বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রী শতভাগ পাস করেছে।
জানা গেছে, গত ২০১৫ সালের বিলুপ্ত ছিটমহাল দাসিয়ারছড়ায় এক একর জমির উপর বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠা হয়। স্থানীয় বিদ্যানুরাগী ব্যক্তিদের সহায়তায় নির্মিত টিনশেড ঘরে শুরু হয় ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান কার্যক্রম। শিক্ষকদের ঔকান্তিক প্রচেষ্ঠায় ২০১৭ সালের জেএসসি পরিক্ষায় আশানুরূপ ফলাফল করে শিক্ষার্থীরা। সন্তোষজনক ফলাফলে বিদ্যালয়টির সুনাম ছড়িয়ে পড়ে গোটা ছিটমহলে দূরদূরান্ত থেকে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা ভর্তি হওয়ায় ২০১৭ সালের শেষের দিকে বিদ্যালয়টির পাঠদান কার্যক্রম দশম শ্রেণিতে উন্নীত করা হয়। সেই থেকে তিন শতাধিক শিক্ষার্থী নিয়ে সাফল্যের সাথে এগিয়ে চলছে দাসিয়ারছড়া সমন্বয়পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়।
ওই স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র আনিছুর রহমান ও অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী রাশেদা আক্তার বলেন, আমাদের শিক্ষকেরা পাঠদানের ব্যাপারে খুবই আন্তরিক। রুটিনমাফিক পাঠদানের বাইরেও তারা অতিরিক্ত ক্লাস নেয়ায় আমরা অনেক উপকৃত হচ্ছি।
এ ব্যাপারে দাসিয়ারছড়া সমন্বয়পাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নূর ইসলাম জানান, একসময় ছিটমহলে পড়ালেখা করার কোনো সুযোগ-সুবিধা ছিল না। আমরা অনেক কষ্ট করে কয়েক মাইল হেঁটে গিয়ে বাংলাদেশে পড়ালেখা করে আসছি। ওই বিদ্যালয়ের সভাপতি আলতাফ হোসেন জানান, বিদ্যালয়ের প্রায় ১৪ জন শিক্ষক কষ্ট করে পড়ালেখা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাই সরকারের প্রতি আক‚ল আবেদন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্কুলটি যেন এমপিওভুক্ত করা হয়। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জানান, দাসিয়ারছড়া ছিটমহলের অবরুদ্ধ জনগোষ্ঠীর পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের সঠিক শিক্ষাদানের মাধ্যমে এগিয়ে নেয়ার সচেষ্ট রয়েছে ছিটমহল দাসিয়ারছড়া সমন্বয়পাড়া স্কুলের শিক্ষকেরা। ফলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বর্তমানে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা অনেক বেড়ে গেছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন