ফরিদপুর সদর উপজেলার বঙ্গোশ্বরদীর সম্মিলনী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলামকে প্রায় ১৩ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। যদিও ওই শিক্ষক তাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে বরখাস্ত করা হয়েছে দাবি করেছেন।
বিদ্যালয় সুত্রে জানা গেছে, মো. সিরাজুল ইসলাম স্কুলটিতে ১৯৯১ সালের ১ জানুয়ারি সহকারী শিক্ষক পদে যোগদান করেন। অতপর ২০১৪ সালের ২৫ মার্চ তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে পুণ:নিয়োগ নেন। বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আ. মান্নান মল্লিককে ২০১৫ সালের ১ মে তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদ সাময়িক বরখাস্ত করলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দ্বায়িত্বপান সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত প্রায় ৯ মাস দ্বায়িত্ব পালন করেন। প্রধান শিক্ষক আইনি প্রক্রিয়ায় নির্দোষ প্রমাণিত হলে ২০১৬ সালের ৩১ মার্চ থেকে পুনরায় দ্বায়িত্ব পান। বর্তমান প্রধান শিক্ষক আ. মান্নান মল্লিক ও অন্যান্য শিক্ষকরা জানান, প্রায় ৯ মাস দায়িত্বে থাকাকালে ব্যাংক থেকে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ টাকা উত্তোলন ও ছাত্রছাত্রীদের নিকট থেকে টিউশন ফিসহ নিয়মিত আদায়ের প্রায় ১৩ লাখ টাকা বিদ্যালয়ের আয় ব্যায়ের ক্যাশ খাতায় লিপিবদ্ধ করেননি তিনি। যা আগস্ট মাসে সরকারি নীরিক্ষাকালেও ধরা পড়ে।
বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মো. খায়ের মিয়া জানান, ক্যাশখাতা ঠিক না করায় বারবার তাকে তাগিদ দেয়া হয়, একই সাথে তার কাছে থাকা প্রায় ১৩ লাখ টাকার হিসাব দাখিলের জন্যে বারবার অনুরোধ করা সত্তে¡ও কর্ণপাত না করায় ২০১৮ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় গত ২৫ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের পরিচালনা পর্যদের সভায় সর্বসম্মতিক্রমে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সে মোতাবেক তাকে ২৭ সেপ্টেম্বর চিঠি ইস্যু করা হয়। তিনি জানান, এ ঘটনা তদন্তে বিদ্যালয়ের সভাপতিকে প্রধান করে দাতা সদস্য মো. ফিরোজ আহমেদ ও নির্বাচিত অভিভাবক প্রতিনিধি মো. হাবিবুর রহমানকে নিয়ে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, যাদের আগামী ৫ অক্টোবরের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে। তদন্ত কমিটির সদস্যরা জানান, এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছে তদন্ত কমিটি, তদন্ত শেষে যথা সময়ে প্রতিবেদন জমা দেয়া হবে। বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সদস্য মো. শাফিজার রহমান ও মো. তবিবুর রহমান জানান, স্কুলের অর্থ কেউ আত্মসাত করলে সঠিকভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এদিকে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সহকারি প্রধান শিক্ষক মো. সিরাজুল ইসলাম। তিনি জানান, প্রতিহিংসাবশতঃ আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতে উদ্দেশ্যমুলকভাবে এসব করা হচ্ছে। তিনি দাবি করেন, যথা নিয়মেই সবকিছু প্রধান শিক্ষকের নিকট বুঝিয়ে দেয়া হলেও কোন প্রমাণ রাখা হয়নি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন