রংপুরের পীরগাছায় আনসার ও ভিডিপি’র গ্রাম/আশ্রয়ণ প্রকল্প ভিত্তিক অস্ত্রবিহিন ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণের নামে প্রশিক্ষণার্থীদের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ ওঠছে। এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের নিকট থেকে এসব অর্থ হাতিয়ে নেয়া হয়।
চলতি অর্থ বছরে উপজেলার ইটাকুমারী ইউনিয়নের ঝিনিয়া মৌজায় সম্প্রতি ৬০ জন্য প্রশিক্ষণার্থীকে গ্রাম/আশ্রায়ণ প্রকল্প ভিত্তিক ১০ দিনের অস্ত্রবিহীন ভিডিপি মৌলিক প্রশিক্ষণ আয়োজন করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী প্রশিক্ষণার্থীদের অবশ্যই নিজ মৌজার স্থায়ী বাসিন্দা হতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট মৌজায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। কিন্তু কোন নিয়ম নীতির তোয়াক্কা করা হয়নি। সরেজমিনে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, কাগজে কলমে ইটাকুমারী ইউনিয়নের ঝিনিয়া গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য প্রশিক্ষণ দেয়ার কথা উল্লেখ করা হলেও অন্য মৌজার প্রশিক্ষণার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। একই সাথে ঝিনিয়া মৌজায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা না করে পাশ্ববর্তী কালীগঞ্জ মৌজায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়।
একাধিক প্রশিক্ষণ বঞ্চিত ব্যক্তি জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যোগসাজসে আনসার ও ভিডিপির ইউনিয়ন দলনেতা প্রশিক্ষণার্থীদের নিকট থেকে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করেন। এলাকার শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে এসব অর্থ হাতিয়ে নেয়। প্রলোভনের মধ্যে সরকারি চাকরীতে নিশ্চয়তা, সরকারি চাকরিতে আনসার ভিডিপির ১০ শতাংশ কোটা, প্রশিক্ষণ শেষে আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও পূজার দায়িত্ব পালনের পরে মোটা অংকের ভাতা পাওয়ার কথা বলা হয়। এসব লোভনীয় সুযোগ ও অর্থ উপার্জনের আশায় বেকার যুবক-যুবতীরা মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করেন। প্রতিটি মৌজায় ৬০ জন সদস্যকে প্রশিক্ষণ দেয়ার নিয়ম থাকলেও তা করা হচ্ছে না। যেসব মৌজায় অর্থের বিনিময়ে প্রশিক্ষণ গ্রহণের আগ্রহ দেখান শুধু সেসব মৌজায় প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার অভিযোগ উঠেছে।
প্রশিক্ষণার্থী আলেয়া আক্তার ও আজিজুল মিয়া বলেন, টাকা দিয়েছি এটা সত্য। কিন্তু টাকা ছাড়া কর্তৃপক্ষ প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে দেয় না। ফলে টাকা দিতে বাধ্য হয়েছি।
টাকার অভাবে প্রশিক্ষণ দিতে না পারা ঝিনিয়া মৌজার আনছার আলী জানান, প্রশিক্ষণের শুরুতে তার নাম ছিল। পরে টাকা দিতে না পারায় নাম বাদ দিয়েছে।
প্রশিক্ষণার্থীদের নিকট থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়া কল্যাণী ইউনিয়ন আনসার ভিডিপির দলনেতা আনিছুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রশিক্ষণ চলাকালীন সময়ে খরচ বাবদ সামান্য কিছু অর্থ আদায় করা হয়েছে। যত টাকার অভিযোগ করা হয়েছে তত না। প্রশিক্ষণার্থীদের নিকট থেকে টাকা আদায়ের বিষয়টি কর্তৃপক্ষ জানেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা আনসার ও ভিডিপির উপজেলা প্রশিক্ষক মোহাম্মদ আজম জানান, আমি শুধু প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি। অর্থ আদায়ের বিষয়ে আমার জানা নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা আনসার ও ভিডিপি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ধরনের অনিয়ম হয়ে থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন