উজিরপুর উপজেলায় ৯টি ইউনিয়ন, লোক সংখ্যা দুই লাখ ৭৭ হাজার ৯৫৯ জন। এই ৯টি ইউনিয়নে রয়েছে ৯টি উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্র থাকলেও এতে ২৮টি পদের মধ্যে ১৯টি পদই শূন্য। শূন্য পদের মধ্যে মেডিক্যাল অফিসার ৯ জন, এসএসিএমও তিনজন, ফার্মাসিস্ট পাঁচজন ও অফিস সহায়ক দুইজন। প্রত্যেকটি কেন্দ্রে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে একজন করে মেডিক্যাল অফিসার অনুমোদন থাকলেও দীর্ঘদিন ধরে এই হাসপাতালগুলোতে কোনো চিকিৎসক না থাকায় তীব্র তাপ ও পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হয়ে সহস্রাধিক শিশু ও বয়স্ক রোগশয্যায় দিনাতিপাত করছেন। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে হাসপাতালটি উপজেলার পূর্ব শেষ প্রান্তে হওয়ায় অন্যান্য আট ইউনিয়ন থেকে এই হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসতে যোগাযোগ ভালো না থাকায় রোগীদের ভোগান্তির শেষ থাকে না।
এই উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলোর মধ্যে সাতলা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, চারটি পদের মধ্যে তিনটি পদ শূন্য, হারতা উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, দুটি পদের মধ্যে দুটি পদই শূন্য, জল্লা উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, দুটি পদের মধ্যে দুটি পদই শূন্য, মশার উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, চারটি পদের মধ্যে দুটি পদ শূন্য, আটিপাড়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, চারটি পদের মধ্যে দুটি পদই শূন্য, চথলবাড়ী উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রে, চারটি পদের মধ্যে দুটি পদ শূন্য, শিকারপুর উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্র, চারটি পদের মধ্যে তিনটি পদ শূন্য, শোলক উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, দুটি পদের মধ্যে দুটি পদই শূন্য, গুঠিয়া উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র, দুটি পদের মধ্যে একটি পদ শূন্য।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পঃপঃ কর্মকর্তা মো. শামছউদ্দিন আহমেদ ইনকিলাবকে বলেন, এই উপজেলায় ৯টি উপ-স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণকেন্দ্রে ৯টি মেডিক্যাল অফিসারের পদ রয়েছে। সেখানে দুটি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ডা. সানজিদা খান ও ডা. শ্রাবন্তী মালা নিয়োগ থাকলেও তারা একজনে চিকিৎসা করেন ঢাকা মেডিক্যাল আর একজন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, যাদের ক্ষমতা আছে তাদের পক্ষে সকল কিছুই সম্ভব। তারা এখান থেকে বেতন ও সকল সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে আর চিকিৎসা করছে পছন্দমতো স্থানে। এই চিকিৎসকদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গরিব অসহায় শত-শত রোগী। মোবাইল ফোনে ডা. সানজিদা খানকে অনেক চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি। ডা. শ্রাবন্তী মালার সাথে ফোনালাপে বলেন, সরকার আমাকে প্রশিক্ষণের জন্য সংযুক্তি ঢাকায় বদলি করেছেন।
এ বিষয় স্বাস্থ্যসেবার মান উন্নয়ন কমিটির সহ-সভাপতি উপজেলা চেয়ারম্যান মো. হাফিজুর রহমান ইকবাল বলেন ৯ জন চিকিৎসকের জায়গায় দুইজন চিকিৎসক নিয়োগ আছে, তারা নিজ কর্মস্থানে চিকিৎসা না দিয়ে অতিরিক্ত আয়ের জন্য অনুমতিতে তারা অন্যত্র চিকিৎসা দিচ্ছে। শূন্য পদগুলো পূরণ না করায় চিকিৎসাসেবা বঞ্চিত প্রায় তিন লাখ মানুষ। যাতে সেবা পেতে পারে এ বিষয় স্বাস্থ্যমন্ত্রীসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন