একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নোয়াখালীর ৬টি আসনে বিএনপি তাদের প্রার্থীতা নিশ্চিত করলেও ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের প্রার্থীতা নিয়ে সবার দৃষ্টি এখন দলীয় হাইকামন্ডের উপর। নোয়াখালীর ৬টি আসনের মধ্যে ৫টিতে আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী রয়েছে। ফলে একাধিক প্রার্থী থাকায় দলীয় হাইকমান্ড চুলচেরা বিশ্লেষন করছে। এদিকে মনোনয়ন প্রাত্যাশীদের টেনশন বৃদ্ধি পেয়েছে। দলীয় মনোনয়ন লাভ করে কখন কার আবির্ভাব ঘটবে, সে প্রত্যাশায় প্রহর গুনছে অনেকে। আবার মনোনয়ন বঞ্চিত হলে কয়েক বছরের জন্য পিছিয়ে পড়ার জটিল হিসেব নিকেশ কষছে অনেকে।
নোয়াখালী-১ (চাটখিল-সোনাইমুড়ী একাংশ) আসনে এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী বর্তমান এমপি এইচ এম ইব্রাহিম, প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী জাহাঙ্গীর আলম, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের গোলাম কুদ্দুস, জাহাঙ্গীর কবির, মেয়র মোহাম্মদ উল্লা, ছালেহ আহমদ চৌধুরী, নাজমা কাওসার, খন্দকার রুহুল আমিন।
নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ি একাংশ) বর্তমান এমপি মোরশেদ আলম, তমা গ্রুপের কর্ণধার আতাউর রহমান ভূঁইয়া মানিক, বাংলাদেশ অর্থনীতি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ এফসিএ, জাফর আহমদ চৌধুরী ও লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক। নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) আসনে বর্তমান এমপি মামুনুর রশিদ কিরন ও শিল্পপতি মিনহাজ আহমেদ জাবেদ শিল্পপতি এনায়েত উল্লা। নোয়াখালী-৪ (সদর-সূবর্ণচর) আসনে বর্তমান এমপি একরামুল করিম চৌধুরী একমাত্র প্রার্থী হলেও বিকল্পধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান যুক্তফ্রন্টের ব্যানারে এ আসন থেকে প্রতিদ্বন্ধিতা করার জন্য ক্ষমতাসীন দলে জোর লবিং করছে। এতে মেজর (অব.) আবদুল মান্নান সুবিধা করতে না পারলে একরামুল করিম চৌধুরী এ আসন থেকে প্রতিদ্বন্ধিতা করা নিশ্চিত। নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) আসন থেকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন। নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) আসনে বর্তমান এমপি আয়েশা ফেরদৌস, সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী ও মাহমুদ আলী রাতুল রয়েছেন। এ আসনে বর্তমান এমপি আয়েশা ফেরদৌস কিংবা তার স্বামী ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ আলী’র যে কোন একজন দলীয় টিকেট পাওয়া এক প্রকার নিশ্চিত বলে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। ফলে সকলের দৃষ্টি এখন দলীয় হাইকমান্ডের সিদ্ধান্তের উপর।
এ বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি ও সূবর্ণচর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ খায়রুল আনম সেলিম জানান, দলীয় হাই কমান্ড যাকেই মনোনয়ন প্রদান করুক না কেন, আমাদের সকলের দায়িত্ব হবে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করা এবং বিপূল ভোটের ব্যবধানে প্রার্থীর জয় নিশ্চিত করা।
অপরদিকে জেলার ৬টি আসনে বিএনপির প্রার্থীতা এক প্রকার নিশ্চিত বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। এবারের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন, নোয়াখালী-১(চাটখিল-সোনাইমুড়ি আংশিক) বিএনপির যুগ্ন-মহাসচিব ও সাবেক এমপি ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, নোয়াখালী-২ (সেনবাগ-সোনাইমুড়ী আংশিক) বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপেদষ্টা ও সাবেক চীফ হুইপ জয়নুল আবদীন ফারুক। নোয়াখালী-৩ (বেগমগঞ্জ) বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক এমপি বরকত উল্লা বুলু। নোয়াখালী-৪ (সদর-সূবর্ণচর) বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান, তৃণমূল সমন্বয়ক ও সাবেক এমপি মোহাম্মদ শাহজাহান। নোয়াখালী-৫ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট) সাবেক উপ-রাষ্ট্রপতি ও বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ এবং নোয়াখালী-৬ (হাতিয়া) সাবেক এমপি প্রকৌশলী ফজলুল আজিম।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও তৃণমূল সমন্বয়ক মোহাম্মদ শাহজাহান ইনকিলাবকে জানান, নোয়াখালীর ৬টি আসনে বিএনপির প্রার্থীতা নিয়ে বাড়তি কোন টেনশন নেই। ৫টি আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা নাই। তবে হাতিয়া আসনে এবার প্রার্থীতা পরিবর্তন হয়ে সেখানে সাবেক এমপি প্রকৌশলী ফজলুল আজিম প্রতিদ্বন্ধিতা করবেন। তিনি আরো বলেন, শরীকদের সাথে আমাদের চমৎকার যোগাযোগ রয়েছে। এখানে শরীকদের কোন প্রার্থী না থাকায় আমরা টেনশনমুক্ত।