শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংসদ নির্বাচন

সাতক্ষীরায় এমপিদের সম্পদ বেড়েছে

আক্তারুজ্জামান বাচ্চু, সাতক্ষীরা থেকে : | প্রকাশের সময় : ৬ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১২:০৩ এএম

সাতক্ষীরা-১(তালা-কলারোয়া) আসনের বর্তমান এমপি অ্যাডভোকেট মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। মহাজোটের এই প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির পলিটব্যুরোর সদস্য ও জেলা সভাপতি। ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি নিজের স্থাবর সম্পদ দেখিয়েছিলেন ১ লাখ টাকা মূল্যের একটি মোটরসাইকেল। এবারের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কমিশনে জমা দেয়া হলফনামায় তার নামে ১ কোটি ৪ লাখ ৫০ হাজার ৩৭০ টাকার অস্থাবর এবং ১১ লাখ ৪২ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদের কথা উল্লেখ করেছেন। সম্পদ বেড়েছে ১০০ গুণ।
এলএলবি পাস মুস্তফা লুৎফুল্লাহ হলফনামায় সংসদ সদস্য পারিতোষিক ও ভাতাদি/অন্যান্য থেকে বাৎসরিক আয় দেখিয়েছেন ২৪ লাখ ৮৩ হাজার ১৪৬ টাকা। অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে তার নামে নগদ ৪৭ লাখ ১২ হাজার ৮৮৮ টাকা, ব্যাংকে জমা ৩ লাখ ৮২ হাজার ৪০২ টাকা, ৪৪ লাখ ৬৭ হাজার ৮০ টাকা মূল্যের প্যারেডো জিপ ও একটি ১ লাখ টাকা মূল্যের মোটরসাইকেল, ৪ লাখ ২০ হাজার টাকা মূল্যের ল্যাপটপ, টিভি, ফ্রিজ ও এসি, ১ লাখ টাকার আসবাবপত্র ও ২ লাখ ৬৮ হাজার টাকার পিস্তল ও পয়েন্ট ২২ রাইফেল রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে তার নামে ১২ হাজার টাকা মূল্যের অকৃষি জমি ও ১১ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের বাড়ি রয়েছে।
সাতক্ষীরা-২ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বীর মুক্তিযোদ্ধা মীর মোস্তাক আহমেদ রবির নামে ১ কোটি ৭ লাখ ৩৫ হাজার ৮৪৯ টাকার অস্থাবর এবং ৬৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে। আইএফআইসি ব্যাংক গুলশান শাখায় তার নামে ঋণ রয়েছে ১ কোটি ৫৩ লাখ ১৯ হাজার ৫১৮ টাকা। ৫ বছর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় মীর মোস্তাক আহমেদ রবির নামে ২ কোটি ২৩ লাখ ৯৪ হাজার ৫৯৯ টাকার অস্থাবর ও ৬৬ লাখ ৭৫ হাজার টাকার স্থাবর সম্পদ ছিলো। আর ঋণ ছিলো ২ কোটি ১৭ লাখ ৬৬ হাজার ৩২৭ টাকা। এই হিসাবে বিগত ৫ বছরে রবির অস্থাবর সম্পদ কমেছে ১ কোটি ১৬ লাখ ৫৮ হাজার ৭৫০ টাকার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামায় তিনি এসব তথ্য উল্লেখ করেছেন।
সাতক্ষীরা-২ আসনে এবারো দলের প্রার্থী রবি স্বশিক্ষিত ও ব্যবসায়ী বলে তার হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। এতে বলা হয়েছে, রবির বাৎসরিক আয় ৩০ লাখ ৩৪ হাজার ৩১৫ টাকা। তার অস্থাবর সম্পত্তির মধ্যে রয়েছে, নগদ ১১ লাখ ৫০ হাজার, ব্যাংকে ১ লাখ ৬৪ হাজার ২৭ টাকা, ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার ঋণপত্র, ৫২ লাখ ৭৯ হাজার ৮২২ টাকা মূল্যের একটি ল্যান্ড ক্রুজার ও ২৮ লাখ ৫০ হাজার টাকার টয়োটা এলিয়ান গাড়ি, ৬০ ভরি স্বর্ণ, ২ লাখ ১৫ হাজার টাকার ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ও ২ লাখ ২৫ হাজার টাকার আসবাবপত্র। এ ছাড়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে তার ২ লাখ টাকা মূল্যের অকৃষি জমি, ১ লাখ টাকা মূল্যের বাড়ি, ৬৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের দুটি বাড়ি রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।
সাতক্ষীরা-৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ডা: আ ফ ম রুহুল হকের নামে ৭ কোটি ৮৯ লাখ ১২ হাজার ৯৭৭ টাকার অস্থাবর এবং ৫ একর জমিসহ ১ কোটি ৭৩ লাখ ৪০ হাজার ৭৬২ টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে। ৫ বছর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তার ৭ কোটি ৭৯ লাখ ৮২ হাজার ৩৮৫ টাকার অস্থাবর এবং ১ কোটি ৫ লাখ ৭০ হাজার ৭৬২ টাকার স্থাবর সম্পদ ছিলো। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামায় রুহুল হক এসব তথ্য দিয়েছেন। পেশায় চিকিৎসক ডা. আ ফ ম রুহুল হক তার বাৎসরিক আয় ১ কোটি ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৪৩১ টাকা উল্লেখ করেছেন।
হলফনামা থেকে জানা যায়, তার অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ১ লাখ ৫৫ হাজার টাকা, ব্যাংকে ১ কোটি ৪৪ লাখ ৪ হাজার ৪০৬ টাকা, ১ কোটি ৫১ লাখ ৫২ হাজার ১৮৫ টাকার বন্ড ও ঋণপত্র, ৩ কোটি ৯২ লাখ ৫৬ হাজার ৩৮৬ টাকার পোস্টাল সেভিংস, ৯৯ লাখ ৫৫ টাকার মোটরগাড়ি, ৮০ হাজার টাকার স্বর্ণ, ৬০ হাজার টাকার ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী ও দেড় লাখ টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। এ ছাড়া তার ব্যাংকে ৯৬ লাখ ২৪ হাজার ৪৭২ টাকা ঋণ রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। তার স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ৩ কোটি ১৩ লাখ ৬৩ হাজার ৯৫০ টাকার ও স্থাবর সম্পত্তি রয়েছে ৩২ লাখ ১০ হাজার ৮১০ টাকার। পাঁচ বছর আগে স্ত্রীর নামে অস্থাবর সম্পত্তি ছিলো ৮ কোটি ৩৯ লাখ ২০ হাজার ৯৯৯ টাকার।
সাতক্ষীরা-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী এসএম জগলুল হায়দারের নামে দুটি মোটরগাড়িসহ (একটি করমুক্ত) ৪৬ লাখ ২০ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ এবং ১ কোটি ৮০ লাখ ৭৯ হাজার ৬০০ টাকার স্থাবর সম্পদ রয়েছে। ৫ বছর আগে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তার একটি মোটরসাইকেলসহ ১৬ লাখ ৫০ হাজার অস্থাবর ও ২১ লাখ টাকার স্থাবর সম্পদ ছিলো। এই হিসাবে তার অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে প্রায় তিন গুণ। আর স্থাবর সম্পদ বেড়েছে সাড়ে ৮ গুণ। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামায় এস, এম জগলুল হায়দার এসব তথ্য উল্লেখ করেছেন।
বি,এ পাস এস, এম জগলুল হায়দার পেশায় ঘের ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার। তার বাৎসরিক আয় ৩০ লাখ ৩২ হাজার ৭৯৫ টাকা, যা ৫ বছর আগে ছিলো ৫ লাখ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকা ৩৭ লাখ টাকা, ২টি মোটরগাড়ি (একটি করমুক্ত), দেড় লাখ টাকার ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী, ৩ লাখ টাকার আসবাবপত্র, ৪ লাখ টাকার পিস্তল ও শর্টগান রয়েছে তার। স্ত্রীর নামে ১০ ভরি স্বর্ণসহ নগদ ২০ লাখ টাকার অস্থাবর সম্পদ রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন আওয়ামী লীগের এই এমপি।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন