শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংসদ নির্বাচন

নির্বাচন কমিশনারের মাধ্যমে ইসিকে নির্দেশনা দেন এইচ টি ঈমাম -রিজভী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮, ১:১৭ পিএম | আপডেট : ৩:৫২ পিএম, ৭ ডিসেম্বর, ২০১৮

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রতিদিন সিইসি’র নিকট বার্তা বাহকের মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের নির্দেশনা পাঠানো হয় হয় বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, আসন্ন নির্বাচন পরিচালনার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনার মোঃ রফিকুল ইসলাম, কবিতা খানম ও শাহাদাৎ হোসেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। তবে তাঁদের ভূমিকা ক্ষমতাসীন দলের স্বার্থের পক্ষে বলে জনশ্রুতি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম নিয়মিত এঁদের সাথে ফোনে নির্বাচনের বিভিন্ন ধরণের খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করে থাকেন বলেও জনান্তিকে নানা কথা ভেসে বেড়ায়। সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব এঁদের মধ্যে সিনিয়র একজনকে দেয়া হয়েছে। এই কমিশনারের মাধ্যমে ইসিকে এইচ টি ঈমাম সব ধরণের নির্দেশনা দেন। শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, রিটার্নিং অফিসারদের নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সেল স্থাপন করা হয়েছে। গত ২ ডিসেম্বর মনোনয়ন যাচাই-বাছাইয়ের সময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে সংশ্লিষ্ট সেলের কাছে থেকে পরামর্শ নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের বিদ্রোহীদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সংশ্লিষ্ট কাউকে স্বতন্ত্র প্রার্থী না করার বিষয়ে কড়া নির্দেশনা ছিল। নির্বাচন কমিশনও আপিলে স্বতন্ত্র প্রার্থিতা বহালের ক্ষেত্রে ওই নির্দেশনা অনুসরণ করেছে। সাবেক নির্বাচন কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল মোবারককে আওয়ামী লীগের নির্বাচন পরিচালনা সেলের আইন উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, ভোটে কারচুপির জন্য জোন ভাগ করে পুলিশের ১২ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। এদের মধ্যে ঢাকা মহানগর, ঢাকা বিভাগ, ময়মনসিংহ বিভাগে এডিশনাল আইজি, ডিআইজি ও এআইজি র‌্যাংকের অফিসারদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। রাজশাহী ও রংপুর জোনে র‌্যাবের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাসহ ডিআইজি ও এআইজি পদমর্যাদার অফিসারদের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। খুলনা ও বরিশাল জোনেও একইভাবে এসবির অতিরিক্ত আইজি, ডিআইজি এবং সমন্বয়কের দায়িত্বে আছেন পুলিশ সদর দপ্তরের একজন উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা। পুলিশের দায়িত্বপ্রাপ্তরা ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্ট জোনগুলোর বৈঠক সম্পন্ন করেছেন। পুলিশের এই ১২ জন কর্মকর্তা ১৯৯১ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত কেন্দ্রভিত্তিক আওয়ামী লীগ-বিএনপির কেন্দ্রের তালিকা, কেন্দ্রভিত্তিক হিন্দু ভোটারদের অবস্থান, কেন্দ্রভিত্তিক বিএনপি’র অবস্থান, কেন্দ্রভিত্তিক বিএনপির প্রভাবশালীদের নামের তালিকা প্রস্তুত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
বিএনপির এই নেতা অভিযোগ করে বলেন, নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত ব্যালটের বাইরে অতিরিক্ত ব্যালট ছাপানো হবে; যা থানায় ভোটের আগে সংরক্ষণ করে রাখা হবে। প্রয়োজন মতো ব্যালট বাক্সে ঢোকানো হবে। প্রস্তুত করে রাখা নকল সিল প্যাড প্রিজাইডিং অফিসারদেকে সরবরাহ করবে পুলিশ। নির্বাচন কমিশনে মূল সিল প্যাড এবং স্বাক্ষর থাকবে আর বিএনপির পোলিং এজেন্টদেরকে নকল সিলপ্যাড ও স্বাক্ষরে মুল ফলাফল সম্বলিত শীট সরবরাহ করা হবে। প্রিজাইডিং অফিসারদের মুল স্বাক্ষরে ফলাফল শীটে ভোট গণনা পরিবর্তন করে রিটার্নিং অফিসারকে প্রেরণ করার নানা জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়েছে।
রুহুল কবির রিজভী বলেন, বিভিন্ন বিষয়ে জানা যাচ্ছে যে, গোয়েন্দা সংস্থা এনএসআইকে পর্যবেক্ষকদের তালিকা প্রস্তুত করার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে গোয়েন্দা সংস্থাটি ইলেকশন ওয়ার্কিং ফোরাম নামে ইসির নিবন্ধিত ২০ সংস্থার ব্যানারে একটি মোর্চা গঠন করেছে। এই মোর্চার অধীন ২০ হাজার দেশী নির্বাচন পর্যবেক্ষকের তালিকা প্রস্তুত করছে; যারা নির্বাচনের দিন আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোটকেন্দ্রে থাকবে। এই বিষয়গুলো সমন্বয় করছে সাবেক ও বর্তমান ছাত্রলীগমনাদের নিয়ে গঠিত আওয়ামী লীগের নির্বাচন পর্যবেক্ষক সমন্বয় উপ-কমিটি। আওয়ামী লীগ সারাদেশে দুই লাখ পোলিং এজেন্টকে বিভিন্নভাবে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে। নিয়ন্ত্রিত ভোট করার বিষয়ে তাদেরকে ভোটকেন্দ্রে অবস্থানের কৌশল শেখানো হচ্ছে। আওয়ামী লীগের পরিকল্পনার বিষয়গুলো মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করা হলো।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন